Abhishek Banerjee: নোটিসকাণ্ডে নাটকীয় মোড়! তথ্য তলব দিল্লির, অভিষেককে সিবিআই-এর নয়া চিঠি
কলকাতা সিবিআই-এর তরফে দিল্লি সদর দফতরে জানানো হয় যে, 'সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিষয় আমাদের কাছে কোনও খবর ছিল না। এমনকি নোটিস রিসিভ করার সময়ও এই বিষয় নিয়ে কেউ কিছু জানায়নি।'
মৌপিয়া নন্দী ও বিক্রম দাস: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে সিবিআই-এর নোটিসকাণ্ডে নয়া মোড়। সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে পাঠানো নোটিসের ব্যাখ্যা দিল সিবিআই। মঙ্গলবার, আজ কিছু আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে আরও একটি চিঠি পাঠানো হল সিবিআই-এর তরফে। যে চিঠিতে বলা হয়েছে, হাজিরা সংক্রান্ত বিষয়ে সিবিআই-এর গতকালকে পাঠানো নোটিস সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত স্থগিত থাকছে নোটিসটি।
প্রসঙ্গত, নোটিসকাণ্ডে সিবিআই-এর বিরুদ্ধে সোমবারই কড়া ভাষায় টুইট করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তারপরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নোটিসকাণ্ডে নড়েচড়ে বসে সিবিআই-এর দিল্লি সদর দফতর। অভিষেককে নোটিসকাণ্ডে তথ্য চায় দিল্লি। সিবিআই-এর দিল্লি সদর দফতরের তরফে কলকাতার আধিকারিকদের কাছে তথ্য তলব করা হয়। দিল্লি সদর দফতরের তরফে জানতে চাওয়া হয়, সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও কেন দুপুরে নোটিস পাঠানো হল? নোটিসে তারিখ লেখা রয়েছে ১৬ তারিখ, অর্থাৎ নোটিসটি ১৬ তারিখের, তবে কেন একদিন পর সেই নোটিস দেওয়া হল? কলকাতায় সিবিআই-এর এসিবি প্রধানকে ফোন করে জানতে চায় দিল্লি সিবিআই সদর দফতর। যে প্রসঙ্গে কলকাতা সিবিআই-এর তরফে দিল্লি সদর দফতরে জানানো হয় যে, 'সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিষয় আমাদের কাছে কোনও খবর ছিল না। এমনকি নোটিস রিসিভ করার সময়ও এই বিষয় নিয়ে কেউ কিছু জানায়নি।'
উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কুন্তল ঘোষের চিঠির সূত্র ধরে ইডি ও সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়। কুন্তুল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের তরফে মন্তব্য করা হয় 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও কুন্তল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত'। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে দেওয়া ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এর পরেও সোমবার পৌনে ২টো নাগাদ সিবিআইয়ের নোটিস পৌঁছয় অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের কাছে।
যারপরই সিবিআই-এর নোটিসের কড়া জবাব দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। জানান, দুপুরে হাতে হাতে পৌঁছয় নোটিস। হেনস্থা করতেই এই নোটিস পাঠানো হয়েছে। কড়া ভাষায় তোপ দাগেন তিনি। একটি টুইট করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। যেখানে তিনি নোটিসের ছবি শেয়ার করে লিখেছিলেন, 'হেনস্থা করার জন্যই আমাকে নোটিস পাঠিয়েছে। মরিয়া হয়ে আমাকে টার্গেট করার জন্যই ইডি-সিবিআইকে দিয়ে আদালত অবমাননার কাজ করাচ্ছে বিজেপি। আজ সকালেই কলকাতা হাইকোর্টের আমাকে কেন্দ্রীয় সংস্থার তলব করার অনুমতির উপর স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু আজ দুপুরে বেলা ১টা বেজে ৪৫ মিনিটে হাতে হাতে পৌঁছয় নোটিস। বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে।' নোটিসের নির্দিষ্ট কিছু অংশ মার্কও করে দিয়েছিলেন তিনি।
সিবিআইয়ের ওই নোটিসে বলা হয়েছিল যে আগামিকাল মানে মঙ্গলবার বেলা ১টায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাজিরা দিতে হবে নিজাম প্য়ালেসে। যদিও তারপর সূত্র মারফৎ জানা যায় যে, সিবিআইয়ের ওই নোটিসের পরিপ্রেক্ষিতে হাজিরা দিচ্ছেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করতে পারেন তিনি! কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশের উপর যেখানে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, সেখানে তারপরেও কী করে সিবিআই নোটিস পাঠায়, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই নড়েচড়ে বসে সিবিআই-এর দিল্লি সদর দফতর। প্রথমে কলকাতার আধিকারিকদের কাছে তথ্য তলব, তারপরই সিবিআই-এর তরফে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নতুন চিঠি পাঠানো হল।
আরও পড়ুন, Mukul Roy: 'নিখোঁজ' মুকুল দিল্লিতে! ফের বিজেপিতে যোগ? অন্তর্ধান রহস্যে তুঙ্গে জল্পনা...