Calcutta HC: শিবলিঙ্গ সরানোর রায় লিখতে গিয়ে অজ্ঞান সহকারী রেজিস্ট্রার, তড়িঘড়ি মত বদল বিচারপতির
Calcutta HC: ওই বিতর্কিত জমি নিয়ে গোলমাল এখানেই থেমে থাকেনি। কিছুদিন পরেই বিতর্কে নতুন মোড়। অভিযোগ, ওই বিতর্কিত জমিতে একটি শিবলিঙ্গ প্রতিস্থাপন করেন গোবিন্দ মন্ডল
![Calcutta HC: শিবলিঙ্গ সরানোর রায় লিখতে গিয়ে অজ্ঞান সহকারী রেজিস্ট্রার, তড়িঘড়ি মত বদল বিচারপতির Calcutta HC: শিবলিঙ্গ সরানোর রায় লিখতে গিয়ে অজ্ঞান সহকারী রেজিস্ট্রার, তড়িঘড়ি মত বদল বিচারপতির](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2023/08/08/432586-4.png)
অর্নবাংশু নিয়োগী: শ্রাবণ মাস। চারদিকে চলছে শিবের মাথায় জল ঢালার পর্ব। এমনই এক সময়ে শিবলিঙ্গ উচ্ছেদের রায় নথিভুক্ত করতে গিয়ে বিপত্তি কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি জানিয়ে দিলেন, বিতর্কিত জমিতে শিবলিঙ্গ স্থাপন করা যায় না। সেটিকে সরাতে হবে। এই পর্যন্ত হয়তো ঠিক ছিল। কিন্তু বিপত্তি বাধল সেই রায় নথিভূক্ত করতে গিয়ে। যিনি সেই রায় নথিভূক্ত করছিলেন সেই সহকারী কোর্ট রেজিস্ট্রার সংজ্ঞা হারালেন আচমকাই। চমকে উঠল এজলাস। তড়িঘড়ি তাঁকে পাঠানো হল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। ওই ঘটনার পরই নিজের মত বদল করে ফেললেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন-নিটের র্যাঙ্ককার্ডে জালিয়াতি, এমবিবিএস-এ ভর্তি হতে এসে গ্রেফতার ছাত্রী
মামলাটি আসলে কী নিয়ে? মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গার খিদিরপুরের বাসিন্দা সুদীপ পাল ও গোবিন্দ মন্ডল। একটি জমিকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে বিবাদ চলছিল। চলতি বছরের মে মাসে ওই বিবাদ হাতাহাতির পর্যায় পৌঁছয়। একে অপরের বিরুদ্ধে বেলডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। নিম্ন আদালত থেকে উভয়েই জামিন পান। পুলিস উভয়ের বিরুদ্ধে মারামারি অভিযোগ এনে চার্জশিট পেশ করে।
ওই বিতর্কিত জমি নিয়ে গোলমাল এখানেই থেমে থাকেনি। কিছুদিন পরেই বিতর্কে নতুন মোড়। অভিযোগ, ওই বিতর্কিত জমিতে একটি শিবলিঙ্গ প্রতিস্থাপন করেন গোবিন্দ মন্ডল। সেই শিবলিঙ্গ তুলতে সুদীপ পাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দেয়। আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও পুলিস কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় সুদীপ পাল কলকাতা হাইকোর্টের পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার মামলা দায়ের করেন।
সুদীপ পালের অভিযোগ, গোবিন্দ মন্ডল ইছাকৃতভাবে ওই বিতর্কিত জমিতে শিবলিঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছে। এই বিষয়ে থানায় অভিযোগ জানিও কোনও কাজ হয়নি। তাই আদালত বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করুন এবং শিবলিঙ্গ সরাতে উপযুক্ত নির্দেশিকা জারি করুন।
ওই মামলায় সোমবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত গোবিন্দ মণ্ডলের আইনজীবিকে প্রশ্ন করেন, কেন আপনি বিতর্কিত জমিতে শিবলিঙ্গ স্থাপন করেছেন? এইভাবে বিচারাধীন সম্পত্তিতে শিবলিঙ্গ প্রতিস্থাপন করা কি যায়?
গোবিন্দর আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় সওয়াল করেন, আমার মক্কেল শিবলিঙ্গ প্রতিস্থাপন করেনি। শিবলিঙ্গ নিজেই মাটি ফুঁড়ে উঠেছে।
ওই কথা শুনে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, বিচারাধীন জমিতে হঠাৎ শিবলিঙ্গ এইভাবে প্রতিস্থাপন করা যায় না। আমি সেটি সরানোর নির্দেশিকা জারি করছি। বিচারপতি নির্দেশের পর এজলাস উপস্থিত সহকারি কোর্ট রেজিস্ট্রার বিশ্বনাথ রায় বিচারপতির রায় নথিভুক্ত করতে শুরু করেন। সেই রায় কিছুটা নথিভুক্ত করার পরই হঠাৎ তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। অসুস্থ বিশ্বনাথ বাবুকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা হাইকোর্টের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এজলাস ছাড়েন বিচারপতি।
এদিকে, ওই ঘটনার মিনিট দশেক পর এজলাসে ফিরে আসেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তার পরে তিনি বলেন, আদালত এই বিষয় কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। শিবলিঙ্গ প্রতিস্থাপনের বিষয়টি নিম্ন আদালতের দেওয়ানি মামলার মাধ্যমে বিচার হবে। আমি এই মামলার নিষ্পত্তি ঘোষণা করলাম।