Buddhadeb Bhattacharya Hospitalised: সুখবর, বুধেই বাড়ি ফিরছেন বুদ্ধবাবু...
Buddhadeb Bhattacharya Hospitalised: চিকিত্সকেরা আগে থেকেই বলছিলেন বুদ্ধবাবু বাড়িতে গেলেও তাঁকে অন্তত ২-৩ সপ্তাহ হোম কোয়ারে রাখা হবে। সেক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে একটি নার্সিং টিম যাবে তাঁর বাড়িতে
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: গতকালই হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। উনি ভালো আছেন। মঙ্গলবার হাসপাতালের তরফে জানানো হল বুধবারই ছেড়ে দেওয়া হবে বুদ্ধবাবুকে। হাসপাতালের তরফে আজ ওই কথা জানালেন ডা সৌতিক পণ্ডা ও ডা সপ্তর্ষি বসু। পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি দল বুদ্ধবাবুর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ঘুরে গেল। কারণ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও তাঁকে বেশ কিছুদিন হোম কেয়ারে রাখতে চান চিকিত্সকেরা।
আরও পড়ুন-শিবলিঙ্গ সরানোর রায় লিখতে গিয়ে অজ্ঞান সহকারী রেজিস্ট্রার, তড়িঘড়ি মত বদল বিচারপতির
হাসপাতালের তরফে চিকিত্সকেরা জানান, মেডিক্যাল টিমের মনিটারিং আগের মতোই থাকবে। শুধু জায়গার বদল হবে কাল। ওঁর বাড়িতে যেসব যন্ত্রপাতি বসানো হবে তা দেখার জন্য একটি টিম গিয়ে রেইকি করে এসেছে। কাল সকালের মধ্যে সব সেটআপ ওখানে তৈরি হয়ে যাবে। বাইপ্যাপ থাকবে। সেটআপের মধ্যে বাকী যা থাকবে তা হল পালস অক্সিমিটারের মাধ্যমে ওঁর অক্সিজেন লেভেলটা মাপা হবে। এছাড়া রাত-দিন সিস্টাররা থাকবেন। ফিজিওথেরাপি করা হবে। সোয়ালো থেরাপিস্ট যিনি হাসপাতালে কাজ শুরু করেছেন তিনিই বাড়িতে যাবেন। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হল রাইলস টিউব বাদ দিয়ে গোটা নিউট্রিশনটাই ওরালই দেওয়া।
অন্যদিকে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে হাসপাতালের তরফে বলা হয়, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এখন ইন্টারমিটেন্ট নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। উনি কনসাস আছেন। কথা বলছেন। আমাদের সব কথা শুনছেন। খুব ভালো রয়েছেন। রাউলস টিউবটা রয়েছে। তবে তরল খাবারও মুখে দেওয়া হচ্ছে। উনি উঠে বসছেন। আজ দুপুরে যে মেডিক্যাল বোর্ড বসেছিল সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কাল আমরা ওঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেব। তবে উনি থাকবেন হোম কেয়ার সার্ভিসে। চিকিত্সকেরা ওঁর বাড়িতে যাবেন। ফিজিওথেরাপ ও সোয়ালো থেরাপি বাড়িতেও চলবে। সবেমিলিয়ে উনি একেবারেই স্থিতিশীল রয়েছেন। আগামিকাল ওঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, চিকিত্সকেরা আগে থেকেই বলছিলেন বুদ্ধবাবু বাড়িতে গেলেও তাঁকে অন্তত ২-৩ সপ্তাহ হোম কোয়ারে রাখা হবে। সেক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে একটি নার্সিং টিম যাবে তাঁর বাড়িতে। তাঁর যে ফিজিওথেরাপি চলছে তা চলবে। তাই হোম কেয়ারের টিম আগে গিয়ে সব ব্যবস্থা করার পর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে যাওয়া হবে। সেই কারণেও ছুটি দেওয়ার আগে কিছুটা সময় নিচ্ছিলেন চিকিত্সকেরা।
সোমবার বুদ্ধবাবুর চিকিত্সকরা জানান, আপাতত রাইলস টিউবের মাধ্য়মে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে মূলত খাওয়ানো হবে। আমরা আশাবাদী যে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে রাইলস টিউব খুলে নেওয়া যাবে। আমরা চাই না উনি এই এক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকুন। যত বেশিদিন হাসপাতালে থাকবেন ততই ইনফেকশনের সুযোগ বাড়বে। চিকিত্সকদের বক্তব্য, আপাতত হোম কেয়ারের টিমটিকে তৈরির করার জন্য সময়ে নেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া ওঁকে ছেড়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি রয়েছে। উঠে দাঁড় করানোর চেষ্টাও হচ্ছে। উনি বেশ ভালো আছেন।
গত ২৯ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। আচমকাই তাঁর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে ৭০ শতাংশ হয়ে যায়। এর আগে ৩-৪ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন বুদ্ধবাবু। ধীরে ধীরে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অক্সিজের মাত্রা নেমে যায়। তার পরই দ্রুত হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্স ও চিকিত্সকেরা গিয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে হাসপাতালে আনেন। সেখান থেকেই বাইপ্যাপ সাপোর্ট দিয়ে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালের আসার পর তাঁর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়লেও পরে ফের তা কমতে শুরু করে। তার পরেই তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিক্তিসকেরা। এগারো দিন পর তিনি অনেকটাই সুস্থ। বিছানায় উঠে বসছেন।