মুন দি-রিয়ার সঙ্গে ছবি তুলে কেষ্ট কাকাকে নকল করতে গিয়ে লবডঙ্কা অনুপম
বীরভূমে ভোটগ্রহণের দিন সময় অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছিলেন অনুপম। বিজেপি প্রার্থীকে ভরপেট খাইয়ে বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দাবি করেন, দলে আসলে নিয়ে নেওয়া হবে অনুপমকে।
কমলিকা সেনগুপ্ত
নির্বাচনে মাঝে বীরভূমে অনুব্রতর সঙ্গে তাঁর ছবি নিয়ে তুলকামাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। দলের তরফে চাওয়া হয়েছিল কৈফিয়ত। সেই অনুপম হাজরা আবারও শিরোনামে। এবার মুনমুন সেন ও রিয়া সেনের সঙ্গে ছবি ফেসবুকে যাদবপুরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী লিখলেন, তৃণমূলের জন্য আরও অপেক্ষা করছে আরও চমক। কিন্তু তার কিছুক্ষণের মধ্যে সেই ছবিটি মুছে দেন অনুপম। কেষ্ট কাকাকে অনুসরণ করতে গিয়ে গোল বাঁধিয়ে ফেললেন ভাইপো।
গতবার বাঁকুড়া থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন মুনমুন সেন। আর বোলপুরের সাংসদ হয়েছিলেন অনুপম হাজরা। দুজনেই ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ। এবার লোকসভা ভোটের আগে দলবদল করে গেরুয়া উত্তরীয় গলায় নেন অনুপম। যাদবপুরে তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। কিন্তু মিমি চক্রবর্তীর কাছে হেরে গিয়েছেন অনুপম। অন্যদিকে আসানসোলে তৃণমূলের টিকিটে হেরেছেন মুনমুন সেন। ভোট মেটার পর দীর্ঘদিনের পরিচিত মুনমুন সেনের সঙ্গে দেখা করতে যান অনুপম। ছিলেন রাইমা সেনও। সেই ছবি ফেসবুকে দিয়ে অনুপম লেখেন,''দীর্ঘদিন পর আড্ডা মারলাম মুন দি ও রিয়ার সঙ্গে। তৃণমূলের জন্য আরও চমক অপেক্ষা করছে''।
অনুপমের ফেসবুকে পোস্টে 'চমক' দেখে শুরু হয় জল্পনা। তবে কি তৃণমূলে যেতে চলেছে সকন্যা মুনমুন? এদিনই তিন জন বিধায়ক যোগ দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। একইসঙ্গে তিনটি পুরসভার ৬৩ জন কাউন্সিলরও দলবদলে ফেলেছেন। ভাটপাড়াতেও বিজেপি কাউন্সিলরের সংখ্যা বেড়ে পৌঁছেছে ২৫। নৈহাটি, কাঁচরাপাড়া, হালিশহর ও ভাটপাড়া পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ এখন গেরুয়া শিবির। এমন প্রেক্ষাপটে অনুপমের পোস্ট মুহূর্তে নজর কেড়ে নেয় নেটিজেনদের। কিন্তু চমক দিতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত আর রহস্য ধরে রাখতে পারেননি। বরং পোস্টটি মুছে দেন।
বীরভূমে ভোটগ্রহণের দিন সময় অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছিলেন অনুপম। বিজেপি প্রার্থীকে ভরপেট খাইয়ে বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দাবি করেন, দলে আসলে নিয়ে নেওয়া হবে অনুপমকে। এমনকি রাজ্যসভার টিকিট দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন। যাদবপুরে ভোটের আগে অনুব্রতর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের ছবি ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় তীব্র জল্পনা। অনুপম দাবি করেন, সৌজন্য সাক্ষাত্কে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছেন অনুব্রতবাবু।
সে যাই হোক, রাজনৈতিক কৌশলে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন অনুব্রত। তাঁর লাভ যাদবপুরে তৃণমূল পেয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তারা মনে করছে, এদিনও অনুব্রতর মতো সৌজন্য সাক্ষাত্ নিয়ে একটা রাজনৈতিক ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন অনুপম। কিন্তু তিনি নিতান্তই কাঁচা খেলোয়াড়। ভুল দান দিয়ে ফেলেছেন বুঝতে পেরেই সম্ভবত পোস্টটি মুছে দিতে বাধ্য হন অনুপম হাজরা। একটা আত্মোপলব্ধি অনুপমের নিশ্চিতভাবেই হয়েছে, রাজনীতির ময়দানে অনুব্রত মণ্ডল হওয়া অতটা সোজা নয়!
আরও পড়ুন- নজিরবিহীন! তিন দিনে ৩ জন পুলিস সুপার বিধাননগরে, রাজ্য পুলিসে ব্যাপক রদবদল