বাংলায় থেকে একুশের রণনীতি সাজাবেন শাহ, খুলছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অফিস

লোকসভা ভোটের পর বদলে গিয়েছে প্রেক্ষাপট। মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, দিল্লিতে পর্যূদস্ত হয়েছে বিজেপি।

Reported By: অঞ্জন রায় | Updated By: Mar 5, 2020, 08:42 PM IST
বাংলায় থেকে একুশের রণনীতি সাজাবেন শাহ, খুলছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অফিস

অঞ্জন রায়

কলকাতায় একদিনের সফরে এলেন। থাকলেন ১২ ঘণ্টা। তার মধ্যে প্রায় ১০ ঘণ্টাই বরাদ্দ থাকল সংগঠনের কাজে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনকে ঠিক কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট এই পরিসংখ্যানেই।  শুধু তাই নয়, কলকাতায় থাকার পরিকল্পনাও করেছেন অমিত শাহ। সেজন্য বাইপাস বা রাজারহাটে বাড়ি ও অফিস দেখা হচ্ছে। 

লোকসভা ভোটের পর বদলে গিয়েছে প্রেক্ষাপট। মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, দিল্লিতে পর্যূদস্ত হয়েছে বিজেপি। হরিয়ানা যেতে যেতে কোনওক্রমে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে তারা। বাংলা দখল মোটেই জলভাত নয়।CAA, NRC-র একটা বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে ভোটে। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে প্রচারকৌশল সাজাতে ব্যর্থ বলে মনে করছে দিল্লি নেতৃত্ব। তদুপরি প্রতিপক্ষ ঝানু রাজনীতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তৃণমূল নেত্রীর ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মার সঙ্গে টক্কর দেওয়ার মতো নেতা নেই ৬, মুরলিধর লেনে। এমতাবস্থায় অমিত শাহ নিজেই রথের রশি ধরতে চাইছেন। রবিবার শহিদ মিনারের সভার পর দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানেই জানিয়ে দিয়েছেন, এপ্রিল থেকে মাসে এক-দুবার রাজ্যে আসবেন। আর পুজোর পর আরও বেশি করে মন দেবেন পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্য নেতৃত্বকে নির্দেশ দিয়েছেন, একটা বাড়ি ও অফিস খুঁজতে হবে। অমিতের নির্দেশের পর বাইপাস ও রাজারহাটে বাড়ি-অফিস খোঁজার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই অফিস থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাজ চালাবেন অমিত শাহ।        

'বঙ্গাল'-এর মাটি থেকে সূচনা হয়েছিল জনসঙ্ঘের। শ্যামাপ্রসাদের মুখোপাধ্যায়ের রাজ্যে সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখতেন অটল-আডবাণীরা। ২০১৪ সালে বামমনস্ক রাজ্যে প্রথমবার ঢুকেছিল গেরুয়া হাওয়া। ৫ বছর পর সেই হাওয়া রীতিমতো বেগ দিচ্ছে শাসক দলকে। লোকসভা ভোটে বিজেপির ১৮টি আসনপ্রাপ্তির পর নড়েচড়ে বসেছেন মমতাও। প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় তৃণমূল।

লোকসভা ভোটে দ্বিতীয়বার মোদী সরকার আসার দিনই দিল্লিতে নতুন পার্টি অফিস থেকে শাহ ঘোষণা করেছিলেন,''আব কি বার বঙ্গাল মে সরকার।'' বাংলা জয় করলেই বিজেপির স্বর্ণযুগ আসবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন অমিত শাহ। অমিত শাহকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা জানেন, অসম্ভবকেও সম্ভব করে দিতে পারেন মোদীর সেনাপতি। উত্তরপ্রদেশে লোকসভা ভোটে একবার নয়, দু'বার কেরামতি করেছেন শাহ। অনেকেই মনে করছেন, বাংলায় লড়াইটা শেষপর্যন্ত পর্যবসিত হতে চলেছে মোদী বনাম মমতায়। কিন্তু মোদী তো আর মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নন। বিজেপির সংগঠনের অবস্থাও তথৈবচ। নেতা নেই, সংগঠন নেই, মুখ নেই- এমন অবস্থায় কারও উপরে ভরসা না করে একুশের লক্ষ্যে পৌঁছতে বাংলায় বসেই ঘুঁটি সাজানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে চলেছেন অমিত শাহ। রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, সামনের লড়াইটা যদি মোদী বনাম মমতা হয়, তো পর্দার পিছনে থাকবেন অমিত শাহ ও প্রশান্ত কিশোর। একটা বিষয় স্পষ্ট, সেই সাতের দশকের পর একুশের বাংলা দেখতে চলেছে 'কাঁটে কা টক্কর'।   

আরও পড়ুন- করোনা আতঙ্কে বিদেশে যাচ্ছেন না মোদী, বাতিল করলেন ব্রাসেলস সফর

.