তিন বছরে খরচের হিসাব দিয়ে রাজ্য নেতাদের অমিতের প্রশ্ন,'রিটার্ন ক্যা হ্যায় ভাই?'
রবিবার শহিদ মিনারে সভার পর দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অমিত শাহ।
অঞ্জন রায়
এমনি এমনি তো তাঁকে আর আধুনিক চাণক্য বলা হয় না! বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে রাজনীতির শিক্ষা দিয়ে গেলেন অমিত শাহ। রবিবার শহিদ মিনারের সভার পর দলীয় বৈঠকে নাম ধরে ধরে রাজ্য নেতাদের ৩ বছরের খতিয়ান তুলে ধরলেন। পাক্কা গুজরাটি বেনিয়ার মতো হিসেব চাইলেন, দল এত টাকা খরচ করেছে, তার লাভ কী হয়েছে? স্পষ্টভাবে বললে, বিনিয়োগের রিটার্ন কত?
রবিবার শহিদ মিনারে সভার পর দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অমিত শাহ। দফায় দফায় জেলা সভাপতি ও রাজ্যের পদাধিকারীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি। বৈঠকে অমিত শাহ নাম ধরে ধরে সকলের কাছে জানতে চান, গত ৩ বছরে দলের জন্য তাঁরা কী করেছেন? উঠে দাঁড়িয়ে কেউ বলেন,''আমি ওই জেলায় গিয়েছি।'' কেউ বলেছেন,''আমি এতগুলো সভা করেছি।'' অমিত শাহের কাছে নম্বর পেতে অনেকে তো এমন দাবি করে ফেলেছেন, যে পাশে বসে থাকা নেতারাও মুচকি হেসেছেন। কিন্তু, ব্যক্তির নাম যখন অমিত শাহ, তখন তো আর মুখের কথায় চিড়ে ভিজবে না! হয়ওনি।
সকলের কথা শোনার পর ফাইল বের করেন শাহ। হিন্দিতে যাকে বলে 'কাঁচ্চা চিট্টা'। নাম ধরে ধরে অমিত শাহ বলতে থাকেন, ৩ বছরে আপনি এই এই হোটেলে ছিলেন। খরচ হয়েছে এত টাকা। আপনার ট্রেনের ভাড়া দেওয়ায় খরচ হয়েছে এত টাকা। গাড়ির তেল খরচের খরচও বলে দিয়েছেন শাহ। নেতাদের পিছনে দলের ৩ বছরে খরচের হিসাব হাতে ধরে দেন শাহ। পাক্কা গুজরাটি ব্যবসায়ীর মতো জানতে চেয়েছেন, এত টাকা খরচ করে পার্টির রিটার্ন কী? অমিতের কাছে খরচের হিসাব শুনে তখন গলদঘর্ম দশা বিজেপি নেতৃত্বের। না জানি আর কী কী কীর্তি রয়েছে ওই ফাইলে!
ওই দিনই কোর কমিটির বৈঠকে অমিত শাহ নির্দেশ দেন, ২৪ ঘণ্টাই থাকতে হবে বুথে। তৃণমূল বা সিপিএমের সঙ্গে নিচুস্তরে কোনও সমঝোতা করা চলবে না। পুরসভাগুলির দায়িত্ব নিতে হবে দলের ১৮ সাংসদকে। দরকার হলে সংসদে যাবেন না তাঁরা। এপ্রিল মাস থেকে কলকাতায় নিয়মিত আসবেন অমিত শাহ।
আরও পড়ুন- কেউ বলছেন, দেড় লক্ষ, কেউ এক লক্ষ! সভায় ৭ হাজার লোক, রাজ্য নেতাদের বলে গেলেন শাহ