পুরভোটের আগে জনমোহিনী বাজেটে চোখ অমিত মিত্রের

Updated By: Feb 27, 2015, 08:46 AM IST
পুরভোটের আগে জনমোহিনী বাজেটে চোখ অমিত মিত্রের

সামনেই রাজ্য জুড়ে পুরভোট। তার আগে আজ বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কেমন হবে রাজ্যের বাজেট? ভোটের বাজারে জনমোহিনী বাজেটের পথেই হাঁটবেন অর্থ মন্ত্রী, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার বিধানসভায় চতুর্থ বারের জন্য বাজেট  পেশ করতে চলছেন অমিত মিত্র। প্রশ্ন উঠছে এবারও কি আগের পথেই হাঁটবেন তিনি।
আর্থিক বিশেষজ্ঞদের মতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর সামনে এই মুহূর্তে বেশ কিছু চিন্তার কারণ রয়েছে।

চ্যালেঞ্জ ১

গত তিন বছরে রাজ্যে কর আদায়ের পরিমাণ বেড়ে  প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকায় পৌছেছে। ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে কর আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা রাখা হয়েছিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় পঁয়ত্রিশ হাজার কোটি টাকা কর আদায় হয়েছে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ১০ হাজার কোটি টাকা কম। দুহাজার তেরো-চোদ্দ আর্থিক বছরে কর আদায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৩৯ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

পরিসংখ্যান দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এবছর লক্ষ্য পূরণের অনেক আগেই থেমে যেতে হতে পারে অমিত মিত্রকে।

চ্যালেঞ্জ ২
অর্থমন্ত্রীর দ্বিতীয় চিন্তার কারণ, রাজ্যের বাড়তে থাকা ঋণের পরিমাণ। আয় থেকে ব্যয় বেশি হলে দায় মেটাতে ঋণের পথে হাঁটতে হয় সরকারকে। অমিত মিত্র যাত্রা শুরু করেছিলেন বাম সরকারের করে যাওয়া একলক্ষ বিরানব্বই হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে। দুহাজার চোদ্দ পনের সালের শেষে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে, দুলক্ষ পঁচাত্তর হাজার কোটি টাকায়। এ্ই ঋণের সুদ মেটাতে চলতি আর্থিক বছরে রাজ্য কোষাগার থেকে বেড়িয়ে গিয়েছে ২৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। ক্রমশ ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছে রাজ্য। অনেকের মতে এই বাজেটের রাজ্যের  ঋণের পরিমাণ তিন লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছে যাবে।

চ্যালেঞ্জ ৩

অমিত মিত্রর তৃতীয় চিন্তার কারণ রাজকোষ ঘাটতি। তাঁর পূর্বসূরী অসীম দাশগুপ্ত কেন্দ্রের নির্দেশে FRBM  চালু করেছিলেন। সেই নিয়মে রাজ কোষ ঘাটতির পরিমাণ তিন শতাংশের মধ্যে রাখতে হবে। ২০১৪-১৫  আর্থিক বছরে অমিত মিত্র রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণ রেখে ছিলেন পনের হাজার দুশো উননব্বই কোটি টাকা। সেই ঘাটতি বেড়ে মোট আয়ের পাঁচ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

তবে গত তিন বছরে অমিত মিত্রের সব থেকে বড় সাফল্য হল কর  সেভাবে না বাড়িয়েও,  কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এনে ও সরলীকরণ করে কর সংগ্রহের পরিমাণ দ্বিগুণ করে ফেলা। এবার রাজ্য জুড়ে পুর ভোটের বছর। তাই স্ট্যাম্প ডিউটি, রেজিস্ট্রেশনের হার, বৃত্তিকরে  তেমন পরিবর্তন  আসবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্র রাজ্যের একাধিক আর্থিক দাবি না মানলেও চতুর্দশ আর্থকমিশনের সুপারিশে রাজ্যের বরাদ্দ বাড়ছে, যা অন্য অনেক রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গর অর্থ মন্ত্রীর কাছেও সুখবর। পুরভোটের আগে তাই করের বোঝা না চাপিয়ে, অর্থমন্ত্রীর জন মোহিনী বাজেটের পথে না হাঁটাটাই অস্বাভাবিক। মত বিশেষজ্ঞদের।

 

.