Abhijaan: 'সৌমিত্রবাবু সবটা জানতেন,অন্যের অনুমোদনের দরকার নেই', সত্য বিকৃতির অভিযোগে বিস্ফোরক পরমব্রত
পৌলমী বসু লিখেছেন, 'আমি জানি না কেন আমার বাবা এই দৃশ্যগুলোতে সম্মতি জানিয়েছিলেন, যা আসল ঘটনাকে বিকৃত করে লেখা। এখন আমার হাত বাঁধা কারণ ঐ দৃশ্যগুলোতে আমার বাবাই অভিনয় করেছেন। কিন্তু আমার সন্দেহ আছে বাবা কি আদৌ বুঝেছিলেন যে এই বাস্তব ও ভাবনার মিশ্রণের কী প্রভাব হতে পারে আমাদের জীবনে?'
দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার-সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের গল্প উঠে এসেছে পরমব্রত চট্টোপাধ্য়ায়ের ছবি 'অভিযান'-এ। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের আত্মীয় শ্রমণা ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, এমন অনেক দৃশ্য বা তথ্য ছবিতে রয়েছে, যা নাকি একেবারেই ভ্রান্ত। রণদীপের চিকিৎসার কারণে প্রচুর ছবি করতে হয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে, এই তথ্য নাকি একেবারেই ঠিক নয়। এছাড়াও ছবিতে দেখানো আরও কিছু তথ্য ভুল বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন পৌলমী বসু।
পৌলমী বসু লিখেছেন,'প্রথমেই বলে রাখি এটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার, হতাশ ও আহত হয়েই আমি এটা লিখেছি। এটা কোনও ব্লেম গেম নয়। আমি জানিনা কেন আমার বাবা এই দৃশ্যগুলোতে সম্মতি জানিয়েছিলেন যা আসল ঘটনাকে বিকৃত করে লেখা। এখন আমার হাত বাঁধা কারণ ঐ দৃশ্যগুলোতে আমার বাবাই অভিনয় করেছেন। কিন্তু আমার সন্দেহ আছে বাবা কি আদৌ বুঝেছিলেন যে এই বাস্তব ও ভাবনার মিশ্রণের কী প্রভাব হতে পারে আমাদের জীবনে? যাঁরা সিনেমা দেখতে আসবেন যাঁদের আমাদের জীবনের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই তাঁরা সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায়ের শেষ জীবনের কথা ভেবে দুঃখিত হবেন। এটা খুবই হতাশাজনক। এছাড়াও এই তথাকথিত 'বায়োপিক'-এ বাপির জীবনের অনেক বিশেষ মানুষ বাদ পড়েছেন। রণদীপকে নিয়ে যে অংশটা রয়েছে তা আরও বিরক্তিকর। রণদীপের হাসপাতালের অংশ নিয়ে যে দৃশ্যগুলো রয়েছে সেই ঘটনাকে গ্লোরিফাই করা হয়েছে কারণ ঐ চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরিচালক নিজে। এটা খুবই দুঃখজনক, হতাশাজনক ও বিরক্তিকর।'
পৌলমী বসুর অভিযোগের ভিত্তিতে পরমব্রত চট্টোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জি ২৪ ঘণ্টাকে বলেন, 'আমার ছবিটা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। আমার চিত্রনাট্য ওঁ তিনবার শুনেছেন, অনুমোদন করেছেন, অনুমতি দিয়েছেন স্বেচ্ছায়, আগ্রহ ভরে এবং সর্বোপরি তিনি নিজে অভিনয় করেছেন। আমার মনে হয় যে, যাঁকে নিয়ে ছবি তাঁর অনুমোদনের থেকে আর কারোর অনুমোদন বেশি হতে পারে না। তিনি আনন্দের সঙ্গে সায় দিয়েছিলেন। অন্য ব্যক্তিবিশেষের যদি কোনও কারণে খারাপ লাগে আমি দুঃখ প্রকাশ করতে পারি কিন্তু আমার করণীয় কিছু নেই কারণ ছবিটা তাঁদের নিয়ে নয়, ছবিটা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। একমাত্র ওঁর থেকেই অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। কোনটাকে তাহলে আমি সত্য বলে ধরব? এখন যদি তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তাহলে তো ওঁর দিকেই আঙুল তোলা হয়। কারণ ওঁ সবটা জেনেই সম্মতি দিয়েছিলেন। সেটা কি ওঁ ডিজার্ভ করে! এটুকুই আমার বক্তব্য। ব্যক্তিগত মত কারোর থাকতেই পারে। এবার অনেকেই বলবেন এটা কেন নেই, এটা কেন এভাবে দেখানো হচ্ছে। কোনটা কীভাবে হয়েছিল আমরা ওঁকে শুনিয়েছি, ওঁ তো সম্মতি দিয়েছেন। পৌলমীদির খারাপ লাগলে আমি দুঃখিত।'
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের কথার প্রত্যুত্তরে পৌলমী বসু জি ২৪ ঘণ্টাকে বলেন,'আমার পরমের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। আমার একটা খারাপ লাগা তৈরি হয়েছে, এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি এটা নিয়ে কোনও বিতর্ক চাই না। পরমের কথাটাই আমি বলেছি যে আমার বাবাই এই ছবিতে সম্মতি দিয়েছেন, এই সিনে অভিনয় করেছেন। সুতরাং এই নিয়ে আমি কোনও কথা বলব না। এখন বাবা তো আর নেই। তাঁকে নিয়েই এই গল্প আর বাবা একেবারে সজ্ঞানে, সম্মত হয়েই এটায় অভিনয় করেছে। আমি এই বিষয়ে কোনও বিতর্ক চাই না।'
আরও পড়ুন: Kaushik Ganguly-Aparajita Adhya: কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের না বলা কথা কি বুঝতে পারবেন অপরাজিতা আঢ্য!