Pandit Shivkumar Sharma Passes Away: 'হরি'র সঙ্গে তৈরি স্বর্গীয় জুটি ভেঙে চলে গেলেন 'শিব'! পড়ে রইল অতুল সৃষ্টির সত্য ও সুন্দর
মোট আটটি ছবিতে শিব-হরি কাজ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে 'সিলসিলা' এবং 'ডর'-এর মতো ছবি। এ ছবি দু'টি তো সব দিক থেকেই ইতিহাস সৃষ্টিকারী। চারটি ছবিতে তাঁরা 'ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট মিউজিক ডিরেক্টর' নমিনেশনও পেয়েছিলেন।
![Pandit Shivkumar Sharma Passes Away: 'হরি'র সঙ্গে তৈরি স্বর্গীয় জুটি ভেঙে চলে গেলেন 'শিব'! পড়ে রইল অতুল সৃষ্টির সত্য ও সুন্দর Pandit Shivkumar Sharma Passes Away: 'হরি'র সঙ্গে তৈরি স্বর্গীয় জুটি ভেঙে চলে গেলেন 'শিব'! পড়ে রইল অতুল সৃষ্টির সত্য ও সুন্দর](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2022/05/10/375137-shivhari.jpg)
সৌমিত্র সেন
পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের মানুষ হলেও পপ-কালচারেও মোটেই ব্রাত্য নন। বরং এ কথা বলাই চলে যে, জনপ্রিয় বিনোদনের ক্ষেত্রেও শিবকুমার সমান আদরণীয় ছিলেন। এর সব চেয়ে বড় নজির মুম্বই (তৎকালীন বম্বে) ইন্ডাস্ট্রিতে সঙ্গীতস্রষ্টা হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে অতিবাহিত করা তাঁর দীর্ঘ সময়কাল।
এক্ষেত্রে শিবকুমার শর্মা অবশ্য একক ভাবে কাজ করেননি। বংশীবাদক পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে হিন্দি ফিল্ম জগতে সুরসৃষ্টি করে গিয়েছেন তিনি। মুম্বইয়ে প্লে-ব্যাক মিউজিকের জগৎকে যদি সেই ১৯৪০-এর দশক থেকেই নানা পর্বে বিভাজিত করা যায় তবে সেখানে একটা পর্বে স্বর্ণাক্ষরে জ্বলজ্বল করবে শিবকুমার শর্মা ও হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার সুরসৃষ্টি। তাঁদের এই 'ডুও' 'শিব-হরি' জুটি নামেই সম্যক পরিচিত, বিখ্যাত, চর্চিত। মোট আটটি ছবিতে তাঁরা কাজ করেছেন। 'সিলসিলা' (১৯৮১) 'ফাসলে' (১৯৮৫) 'বিজয়' (১৯৮৮) 'চাঁদনি' (১৯৮৯) 'লমহে' (১৯৯১) 'পরম্পরা' (১৯৯৩) 'সাহিবাঁ' (১৯৯৩) এবং 'ডর' (১৯৯৩)। এর মধ্যে প্রথম ও শেষ ছবি দুটি তো সব দিক থেকেই ইতিহাস সৃষ্টিকারী।
এর মধ্যে চারটি ছবিতে তাঁরা 'ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট মিউজিক ডিরেক্টর' নমিনেশন পেয়েছিলেন। ছবিগুলি ছিল-- 'সিলসিলা', 'চাঁদনি', 'লমহে', 'ডর'। 'সিলসিলা'র 'ইয়ে কাঁহা আ গ্যয়ে হাম', 'চাঁদনি'র 'চাঁদনি ও মেরি চাঁদনি', বা 'ডরে'র 'জাদু তেরি নজর' এবং 'তু মেরা সামনে' তো হিন্দি ছবির গানের সিন্দুকে ঢুকে পড়েছে। আদতে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের মানুষ হয়েও শিব-হরি 'পাবলিক পালস' যে কত অব্যর্থ বুঝতেন তারই নজির তাঁদের এই যৌথকীর্তি। শুধু সুর করে মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্টই তো নয়, এই অনবদ্য 'ডুও' তাঁদের ছবিগুলিতে আবহসঙ্গীতের ক্ষেত্রে বা ফিল্মের থিম মিউজিকের ক্ষেত্রে দারুণ ভাবে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রয়োগ ঘটাতেন। এত সহজ, সাবলীল স্বাভাবিক কিন্তু মর্মস্পর্শী ভাবে তাঁরা সুর লাগাতেন যে, শ্রোতারা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কিচ্ছুটি না জেনেও দারুণ ভাবে উপভোগ করতে পারতেমন তাঁদের কাজ, কোথাও রসভঙ্গ ঘটত না।
তবে আশির দশকে তৈরি হয়ে ওঠা তাঁদের এই জুটির আরম্ভের একটা সলতে পাকানো পর্বও ছিল। ১৯৬৭ সালের শুরুর দিকে 'কল অফ দ্য ভ্যালি' নামের একটি অ্যালবামে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন শিবকুমার শর্মা ও হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া। এই অ্যালবামে তাঁদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন গিটারিস্ট ব্রিজভূষণ কাবরাও। পাশ্চাত্য বাদ্যযন্ত্র হিসেবে পরিচিত গিটারকে যেভাবে তাঁরা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মূল ধারায় অঙ্গীভূত করেছিলেন সেটা বিপুল প্রশংসা পেয়েছিল। অ্যালবামটি আজও মানুষের স্মৃতিতে রয়ে গিয়েছে। শিব-হরি জুটির এই সাফল্যই তাঁদের মুম্বই টেনে নিয়ে গিয়েছিল। এবং সেখানেও তাঁরা তাঁদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে এসেছেন।
অনেক পরে, ১৯৯৬ সাল নাগাদ শিব-হরি আবার একসঙ্গে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কাজ করেন। অ্যালবামটি ছিল 'ভ্যালি রিকল'। ১৯৬৭ সালেরই আমেজ ও আবেশ নিয়ে তৈরি হওয়া এই অ্যালবামটিও সাড়া ফেলে দিয়েছিল।