'মৃণালদার জন্য কাঁদতেও খারাপ লাগে', বলেও চোখের জল বাদ মানলো না মমতা শঙ্করের

'মৃণাল দা'-র চলে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়লেন অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর।

Updated By: Dec 30, 2018, 06:47 PM IST
'মৃণালদার জন্য কাঁদতেও খারাপ লাগে', বলেও চোখের জল বাদ মানলো না মমতা শঙ্করের

নিজস্ব প্রতিবেদন: মৃণাল সেনের ছবি 'মৃগয়া' দিয়েই তাঁর চলচ্চিত্র দুনিয়ায় পা রাখা। তারপর পরিচালক মৃণাল সেনের 'একদিন প্রতিদিন', 'ওকা ওড়ি কথা' ছবিতেও দেখা গেছে তাঁকে। আজ সেই 'মৃণাল দা'-র চলে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়লেন অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর।

মৃণাল সেনের শেষযাত্রার সময় ঝর ঝর করে কেঁদে ফেলেন অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কার। কাঁদতে কাঁদতে বললেন ''কী বলব, আমার আজ আর বলার ভাষা নেই। শুধু এটুকুই বলতে পারি, মৃণালদা আপনি আমাদের যতটা ভালো রেখেছিলেন, আপনিও এখন ভালো থাকুন। ধন্যবাদ দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারব না। আজ আপনারা যে আমার ইন্টাভিউ নিচ্ছেন, সিনেমা জগতে আমার যেটুকু পরিচিতি সবই মৃণাল দার জন্য। মৃণালদার মতো সৎ, সাহসি মানুষ আর নেই। যেধরনের মানুষ আজকের দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। মৃণাল দার মতো মজার মানুষ খুব কম ছিল। মৃণালদার জন্য কাঁদতেও খারাপ লাগে, এক্ষুণি বলবেন, চোখের জল চাই না আমি। ''

আরও পড়ুন-মৃণাল সেনের মৃত্যুতে শোকবার্তা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির

আরও পড়ুন-মৃণাল তর্পণে বলিউড, কী লিখলেন অমিতাভ বচ্চন, মহেশ ভাট, নন্দিতা দাস ও মনোজ পাজপেয়ীরা? দেখুন...

স্মৃতি চারণা করে মমতা শঙ্কার বলেন, ''মৃণাল দার 'ওকা ওড়ি কথা' ছবির শ্যুটিং করতে গেছি। সেখানে কুয়ো থেকে জল তোলায় একটি দৃশ্য ছিল, ওই দৃশ্যের শ্যুটিং করতে গিয়ে দড়িটা ছিটকে যায় আর আমার হাত কেটে যায়। মৃণালদা যে কী ব্যস্ত হয়ে পড়লেন, বললেন এক্ষুণি ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও। এক্ষুণি ইনজেকশন নাও। আমি বললাম ইনজেকশন নেব না আমি ঠিক আছি। তখন উনি বললেন না, না, তুমি মরে যাবে, এক্ষুণি মরে যাবে তুমি ইনজেকশন নাও। তারপর শ্যুটিংয়ের মধ্যে আবার আমার সিন আসছে তখনই জিজ্ঞাসা করছেন কি তুমি বেঁচে আছো? মরে যাও নি তো? এই রকম মজার মানুষ ছিলেন উনি। মৃণাল দা আমায় ১১ টার দিকে ফোন করতে বলতেন আমি জিজ্ঞাসা করার আগেই বলতেন আমি বেঁচে আছি, গীতা ভালো আছে। আবার বৌদি (গীতা সেন) কেমন আছে জিজ্ঞাসা করলে বলতেন শুনেছি তো ভালো আছে। মৃণালদার বাড়িতে ১০ মিনিটের জন্য দেখা করতে গেলে দেড় ঘণ্টা কেটে যেত। একবার তো চন্দ্রদয় ( মমতা শঙ্করের স্বামী চন্দ্রদয় ঘোষ) ও আমি রাত ২টো আড়াইটের সময় বেরিয়েছি। আড্ডা দিতে ভীষণ ভালোবাসতে। একটা প্রাণবন্ত মানুষ। এইরকম মানুষ কখনও চলে যেতে পারেন না। আমার শিক্ষক, অভিভাবক, আমার বাবার মতো। আমার বাবা চলে যাওয়ার সময় যে কষ্ট হচ্ছে আজও তাই হচ্ছে।  আমরা আজকাল বলি সাহসি ছবি বানাচ্ছি? কী সাহসি ছবি বানাচ্ছি। আজকের প্রজন্মের ওনার ছবি দেখা উচিত। বক্স অফিস, টাকা পয়সার কথা কখনও ভেবে ছবি বানাননি। ''

আরও পড়ুন-পুনশ্চ মৃণাল, স্মরণ করলেন সৌমিত্র, মাধবী, অপর্ণা সেন ও অনিরুদ্ধ ধর

.