‘যা দেখছেন আর দেখে যা মনে হচ্ছে, তা সব সময় সত্যি না-ও হতে পারে!’

মারমুখী দেবের ‘পাব্লিসিটি স্টান্ট’ ঠিক কতটা সত্যি! জট ছাড়ালেন ‘হইচই আনলিমিটেড’-এর গল্পকার এবং পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। ফোনে তিনি জানিয়ে দিলেন কেন এমন একটা প্রচারের প্রয়োজন হল ছবিটির।

Updated By: Oct 2, 2018, 07:59 PM IST
‘যা দেখছেন আর দেখে যা মনে হচ্ছে, তা সব সময় সত্যি না-ও হতে পারে!’

সুদীপ দে: শনিবার থেকে সুপারস্টার দেবের একটি ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ওই ভিডিওয় দেখা যায়, দেব সাদা জামা পরা এক যুবকের উপর চড়াও হয়েছেন, হাত চালাচ্ছেন... ঘটনাস্থলে থাকা বেশ কয়েকজন দেবকে তখন টেনে সরাতে চেষ্টা করছে, টলি অভিনেত্রী পূজাকেও দেখা যায় এই ভিড়ে। কিন্তু কেন দেব মেজাজ হারালেন? ঠিক কী হয়েছিল দেবের সঙ্গে ওই যুবকের?

শনিবার রাতে এ নিয়ে মুখ খোলেননি দেব বা তাঁর টিমের কোনও সদস্যই। তেমন কিছুই জানা যাচ্ছিল না ঘটনাটি সম্পর্কে। তবে রবিবার সকালে জানা গেল অন্য ‘গল্প’। গোটা ব্যপারটাই নাকি ‘হইচই আনলিমিটেড’ ছবির ‘পাব্লিসিটি স্টান্ট’! বেশ কয়েকটি বাংলা সংবাদ মাধ্যমেও এই মর্মেই খবর প্রকাশিত হল। কিন্তু যে বিষয়টা পরিষ্কার হল না সেটা হল, যে ছবিটা আর ক’দিনের মধ্যেই মুক্তি পেতে চলেছে... পুজোর বাংলা ছবির বক্স অফিসের লড়াইয়ের যে ছবিটি প্রথম তিনে থাকার অন্যতম দাবিদার, সেই ‘হইচই আনলিমিটেড’-এর এমন নেতিবাচক প্রচারের দরকার হবে কেন? ছবির চিত্রনাট্যে কমেডি, সাসপেন্স, রোম্যান্স— ছবি হিট হওয়ার একাধিক মশলাই তো রয়েছে এই ছবিতে। তাহলে... তাছাড়া ছবিটির গল্পের মৌলিকত্ব নিয়ে বিতর্কের ধাক্কা পেরিয়ে যখন মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছে ‘হইচই আনলিমিটেড’, তখন এমন একটা ‘বিতর্কিত’ নেতিবাচক প্রচারের কি কোনও প্রয়োজন ছিল?

মনের মধ্যে যখন এতগুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন ধাঁধাঁর জট ছাড়ালেন ‘হইচই আনলিমিটেড’-এর গল্পকার এবং পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। ফোনে তিনি জানিয়ে দিলেন কেন এমন একটা প্রচারের প্রয়োজন হল ছবিটির।

আরও পড়ুন: একী অবস্থা! প্রকাশ্যে এক যুবককে মারধর করলেন দেব? ভাইরাল ভিডিও

প্রশ্ন: আর তো হাতে মাত্র কয়েকটা দিন। এর পরই তো পুজোর মুখে ছবির মুক্তি। তার আগে এমন একটা প্রচার...

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়: দেব বরাবরই প্রোমোশনের ক্ষেত্রে একটু অন্য রকম কিছু করে দেখাতে চায়। তাছাড়া এর আগে  ‘কবীর’ ছবির ক্ষেত্রেও তো দেখেছেন।

প্রশ্ন: তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু অন্য রকম প্রচারের নামে নেগেটিভ পাবলিসিটি কেন?

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়: যে কোনও নেগেটিভ পাবলিসিটি স্টান্ট-ই মানুষকে খুব দ্রুত প্রভাবিত করে। নিজেই দেখুন, ব্যপারটা এখন রীতিমতো ভাইরাল!

প্রশ্ন: কিন্তু ‘হইচই আনলিমিটেড’ নিয়ে তো ইতিমধ্যেই যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছে। তার উপর এ রকম একটা ‘বিতর্কিত’ নেগেটিভ পাবলিসিটি স্টান্ট-এর কী কোনও প্রয়োজন ছিল?

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়: অবশ্যই ছিল। একটা ব্যপার লক্ষ্য করেছেন, আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ছবি বা ভিডিও পোস্ট হওয়ার পরই সেটির শেয়ার শুরু হয়ে যায়। ওই পোস্ট-এর নীচে জমা হতে থাকে একের পর এক মতামত, ব্যাখ্যা...এবং অদ্ভুত ভাবে এর বেশির ভাগই পোস্ট হওয়া ছবি বা ভিডিওর সত্যতা যাচাই না করেই মন্তব্য করছেন। আর এ ভাবেই যে কোনও সামান্য বিষয়ও ‘ভাইরাল’ হয়ে যায়। মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা সকলেরই রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে কেউ, যে কোনও বিষয়ে তার মতামত প্রকাশ করতেই পারেন। কিন্তু না জেনে, না বুঝে কোনও কিছু সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করাটাও তো ঠিক নয়! এ ভাবেই তো আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। যে স্মার্টফোনের মাধ্যমে গুজব ছড়ায়, সেই স্মার্টফোনের মাধ্যমেই তো তথ্যগুলো সহজেই যাচাই করে নেওয়া যেতে পারে, তাই না!

প্রশ্ন: তা ঠিক। এ ছবির সঙ্গে এই প্রচারের সম্পর্কটা কোথায়, সেটা কিন্তু এখনও বুঝলাম না!

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়: ‘হইচই আনলিমিটেড’-এর গল্পের একটা বড় অংশ জুড়েই রয়েছে গুজব আর ভুলবোঝাবুঝি। তিল থেকে কী ভাবে তাল হতে পারে, তা মজার ছলেই বোঝানো হয়েছে এই ছবিতে। যা দেখছেন আর দেখে যা মনে হচ্ছে, তা সব সময় সত্যি না-ও হতে পারে!

প্রশ্ন: তা হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া কোনও গুজবকে কেন্দ্র করেই কি...

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়: বাকিটা না হয় ১২ অক্টোবরেই জেনে নেবেন...

.