বাজার বড় ভাবাচ্ছে
মার্কেট বললে, এমনকী বাংলায় বাজার বললেও অনেকেই এখন বোঝেন এবং বোঝাতে চান বিশেষ একটা বাজার: শেয়ার বাজার। শেয়ার বাজারে মাত্র দুই-আড়াই শতাংশ ভারতীয় সরাসরি কারবার করেন। শেয়ারের দামের ওঠাপড়ার ঝুঁকি যাঁরা নিতে চান না, তাঁদেরও অনেকে কিন্তু এখন বাধ্য হচ্ছেন কিছুটা সেই অনিশ্চয়তার দায় বহন করতে। নানা ধরনের সঞ্চয়ের একাংশ এখন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ হয়। এমনকী, সর্বসাধারণের জন্য ভারত সরকারের যে পেনশন প্রকল্প (এন পি এস) আছে, তাতেও সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সঞ্চয় ইকুইটি বা শেয়ারে রাখার সংস্থান আছে। শেয়ার বাজারে উত্থান-পতন দুইই আছে। পতনটা কষ্টকর। বিশেষ করে পেনশনভোগীদের জন্য।
মার্কেট বললে, এমনকী বাংলায় বাজার বললেও অনেকেই এখন বোঝেন এবং বোঝাতে চান বিশেষ একটা বাজার: শেয়ার বাজার।
শেয়ার বাজারে মাত্র দুই-আড়াই শতাংশ ভারতীয় সরাসরি কারবার করেন। শেয়ারের দামের ওঠাপড়ার ঝুঁকি যাঁরা নিতে চান না, তাঁদেরও অনেকে কিন্তু এখন বাধ্য হচ্ছেন কিছুটা সেই অনিশ্চয়তার দায় বহন করতে। নানা ধরনের সঞ্চয়ের একাংশ এখন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ হয়। এমনকী, সর্বসাধারণের জন্য ভারত সরকারের যে পেনশন প্রকল্প (এন পি এস) আছে, তাতেও সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সঞ্চয় ইকুইটি বা শেয়ারে রাখার সংস্থান আছে। শেয়ার বাজারে উত্থান-পতন দুইই আছে। পতনটা কষ্টকর। বিশেষ করে পেনশনভোগীদের জন্য। উত্থান-পতনের একটা নিত্যদিনের ছন্দ আছে। তার বাইরে আছে অতি বড় উত্থান বা বিপর্যয়ের মতো পতন। কয়েক দিন আগেই যেমন এক দিনে সেনসেক্স পড়ে গেল ৭০০ পয়েন্টের বেশি, বাজার থেকে বিনিয়োগকারীদের ২ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়ে গেল।
অনেকেরই ধারণা, বাজারের বিশাল পতনের পিছনে কোনও বিচ্যুতি থাকে। যেমন দু দশক আগে আমাদের দেশে শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারিরর পিছনে ছিল হর্ষদ মেহতা আর তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের জালিয়াতি, তিন-চার বছর আগে মার্কিন অর্থনীতিতে ধস আর বিশ্বব্যাপী মন্দার পিছনে ছিল অতি লোভে বেহিসাবি ঋণ আর মর্টগেজ। সাধারণ ভাবে, কোনও মানবিক বিচ্যুতি না থাকলে মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে পুঁজির বাজারে কিছু ওঠা-পড়া থাকবে কিন্তু সাংঘাতিক বিপর্যয় হবে না-এমনটাই অধিকাংশের ধারণা। আমারও কয়েক দিন আগে পর্যন্ত সেই রকমই বিশ্বাস ছিল।
বিশ্বাসটা ভেঙে গিয়েছে সম্প্রতি। ভেঙেছে নুরিয়েল রুবিনি নামে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অর্থনীতিবিদের একটি বই পড়ে। 'ক্রাইসিস ইকনমিক্স আ ক্র্যাশ কোর্স ইন ফিউচার অফ ফিনান্স' নামে ওই বইটিতে রুবিনি দেখিয়েছেন যে, পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ওই ধরনের বিপর্যয় ব্যতিক্রমী এবং শুধু মানুষের তৈরি নয়। ব্যবস্থার নিজস্ব চরিত্রের মধ্যেই নিহিত আছে এই ধরনের বিপর্যয়ের উত্স।
রুবিনির কথা বিশ্বব্যাপী বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে এই জন্যই যে, ২০০৭-২০০৮-এর মার্কিন তথা বিশ্ব অর্থনীতির বিপর্যয়ের ভবিষ্যদ্বাণী তিনি অনেক আগেই এবং অভ্রান্ত ভাবে করেছিলেন। বিপর্যয়ের আগে তাঁকে ব্যঙ্গ করে বলা হত ডঃ ডুম। এখন সম্ভ্রম করে বলা হচ্ছে, সত্যদ্রষ্টা প্রফেট।
ব্যাঙ্ক আমানতের উপর জমা সুদ পুরোটাই খেয়ে যাচ্ছে মুদ্রাস্ফীতিতে। প্রকৃত সঞ্চয়ের জন্য মিউচুয়াল ফান্ডের মতো পরোক্ষে হলেও শেয়ার বাজার একটা ভরসার জায়গা ছিল। রুবিনির সঙ্গে মোলাকাতের পর বাজার বড় ভাবাচ্ছে।
সুদীপ্ত সেনগুপ্ত