সিন্ডিকেট থেকে তোলা আদায়, ভাঙড় কাঁপে আরাবুল আতঙ্কে

ভাঙড় কলেজের অধ্যাপিকাকে হেনস্থা করার অভিযোগে ফের কাঠগড়ায় প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল ইসলাম। তবে এই প্রথম নয়, তৃণমূলের এই প্রাক্তন বিধায়ক অতীতে একাধিক ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ ওঠায় ২০১১-র নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে শাস্তির আশ্বাস দিয়েছিলেন খোদ তৃণমূল নেত্রী।

Updated By: Apr 27, 2012, 09:14 AM IST

ভাঙড় কলেজের অধ্যাপিকাকে হেনস্থা করার অভিযোগে ফের কাঠগড়ায় প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল ইসলাম। তবে এই প্রথম নয়, তৃণমূলের এই প্রাক্তন বিধায়ক অতীতে একাধিক ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ ওঠায় ২০১১-র নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে শাস্তির আশ্বাস দিয়েছিলেন খোদ তৃণমূল নেত্রী।
ঠিক কী কী অভিযোগের জন্য প্রচারে গিয়েও আরাবুল ইসলামকে শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? ২০০৬-এ বিধায়ক হওয়ার পরই আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে লেদার কমপ্লেক্স থানার ওসিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাঁকে ২২ দিন জেল হেফাজতে কাটাতে হয়। ওই সময় থেকেই বাসন্তী রোডের ধারের কারখানাগুলি থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠতে শুরু করে আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে। কিন্তু দোর্দন্ডপ্রতাপ তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে তখন থানায় অভিযোগ জানাতেও সাহস পাননি ভুক্তভোগীরা।
এরপর বৈদিক ভিলেজের হাত ধরে খবরের শিরোনামে উঠে আসে আরাবুল ইসলামের নাম। স্থানীয় দুটি ক্লাবের ফুটবল ম্যাচ নিয়ে সংঘর্ষে একজন খুন হওয়ার পরই উত্তাল হয়ে ওঠে বৈদিক ভিলেজ। মূল অভিযুক্ত গফ্ফরের নামের সঙ্গেই উঠে আসে আরাবুল ইসলামের ভাই খুদের নাম। আর এই বিতর্কের মাঝেই চলে আসে ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচন। ভাঙড় এলাকায় টিকিট দেওয়া নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। আরাবুল ইসলাম টিকিট পেলে নির্দল হিসেবে ভোটে দাঁড়ান নান্নু হোসেন নামে এক তৃণমূল কর্মী। রাজ্যে প্রবল বাম বিরোধী হাওয়া থাকা সত্ত্বেও ৫০০০-এর বেশি ভোটে সিপিআইএম প্রার্থী বাদল জমাদারের কাছে হেরে যান আরাবুল ইসলাম।
সিন্ডিকেটের ব্যবসার হাত ধরে আরাবুল যে বিপুল পরিমান সম্পত্তি করেছিলেন তাঁর প্রমাণ রয়েছে নির্বাচন কমিশনকে দায়ের করা হলফনামায়। ২০০৬-এর নির্বাচনের সময় আরাবুল ইসলামের সম্পত্তি ছিল একটি ৩ লক্ষ টাকার গাড়ি।  আর ২০১১-র নির্বাচনের আগের হলফনামায় পারিবারিক সম্পত্তির পরিমান বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় এক কোটি টাকা। আরাবুল ইসলামের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নির্দল প্রার্থী নান্নু হোসেন। হাতিশালা সরোজিনি নাইডু মাদ্রাসার স্কুলছুট আরাবুল ইসলাম ২০০৬-এর পর রবীন্দ্র মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন বলে হলফনামায় দাবি করা হয়। কিন্তু সেই পরীক্ষার সময় তিনি বিধানসভার অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন নান্নু হোসেন।
ভোটে হারলেও আরাবুল ইসলাম একই ভাবে সিন্ডিকেটের কাজ চালিয়ে যান বলে অভিযোগ। পাশাপাশি এলাকার স্কুল কলেজের কাজেও নাক গলানোরও অভিযোগ উঠতে থাকে তাঁর বিরুদ্ধে। এবারে ভাঙড় কলেজের অধ্যাপিকা নিগ্রহের অভিযোগে ফের সংবাদ শিরোনামে আরাবুল ইসলাম। ভোটের আগে শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দিলেও একের পর এক ঘটনায় অভিযুক্ত আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেত্রী কেন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
 

.