ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ বিশ্বভারতীর

পাঠভবনে ছাত্রী হেনস্থার ঘটনায় বিবৃতি দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। ওয়াডের্ন ব্যবস্থা পাল্টানোরও আশ্বাস দিয়েছে বিশ্বভারতী। অভিভাবকদের কাছে ওই ছাত্রীকে ফের স্কুলে পাঠানোরও আবেদন জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

Updated By: Jul 12, 2012, 06:59 PM IST

পাঠভবনে ছাত্রী হেনস্থার ঘটনায় বিবৃতি দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। ওয়াডের্ন ব্যবস্থা পাল্টানোরও আশ্বাস দিয়েছে বিশ্বভারতী। অভিভাবকদের কাছে ওই ছাত্রীকে ফের স্কুলে পাঠানোরও আবেদন জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আজই ছাত্রীর বাবা,মায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিশ্বভারতীর তদন্তকারী দল। বৈঠকের পর ছাত্রীর বাবা,মা জানান তাদের অভিযোগ লিখিত আকারে নিয়েছে তদন্তকমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীকে ফের স্কুলে পাঠানোরও অনুরোধ করেন বলে জানিয়েছেন অভিভাবকেরা। তবে পাঠভবনে আর মেয়েকে আর পড়াতে চান না বলেই জানিয়েছেন নির্যাতিত ওই ছাত্রীর বাবা,মা।
প্রসঙ্গত তদন্তকারী দলের বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য ছাত্রীর বাবা-মাকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এদিকে আজ ছাত্রী হেনস্থার ঘটনায় অভিযুক্ত উমা পোদ্দারের পক্ষে পোস্টার দেয় পাঠভবনের ছাত্রছাত্রীরা। বুধবার বিশ্বভারতীয় তিন সদস্যের এক তদন্তকারী দল ওই ছাত্রীর বাড়িতে দেখা করতে যান। ছাত্রীকে স্কুলে ফেরানোর অনুরোধ জানান তাঁরা। তবে মেয়ের মানসিক পরিস্থিতির কথা ভেবে তাঁকে ওই স্কুলে পাঠাতে নিমরাজি অভিভাবকরা। অন্যদিকে, প্রশ্ন উঠেছে পুলিসের ভূমিকা নিয়েও। অভিযোগ, ঘটনার ৪ দিন পর  মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষার জন্য পুলিস অভিভাবকদের ওপর চাপসৃষ্টি করছে। বুধবার বাড়িতে গিয়ে পুলিস ওই ছাত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে চাইলে তার পরিবারের তরফে আপত্তি তোলা হয়।
বিশ্বভারতীর করবী ছাত্রী নিবাসের পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রী রাতে বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলেছিল। ওয়ার্ডেন উমা পোদ্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ওই প্রস্রাব খেতে বাধ্য করেন ছাত্রীকে। ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে ছাত্রীটি। পরিবারের তরফে দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার গ্রেফতার হন অভিযুক্ত ওয়ার্ডেন। জামিনে মুক্তিও পেয়ে যান কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। পুলিসের বক্তব্য, ছাত্রীর অভিভাবকদের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ওই ছাত্রীকে জোর করে রাতে ছাত্রীনিবাস থেকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছিল। ছাত্রীর বাবা-মা সহ পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিস। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের তরফে কোনও এফআইআর দায়ের করাই হয়নি। ওই ছাত্রীর চিকিত্‍সার প্রয়োজন হলে তার খরচ অভিযুক্ত ওয়ার্ডেনের মাইনে থেকে কেটে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বোলপুর আদালত। এই খরচ দিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে বলে সোমবার জানায় আদালত।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে অভিযুক্ত ওয়ার্ডানকে। যদিও ছাত্রী হেনস্থাকাণ্ডে ওয়ার্ডেনকে আড়াল করতেই সচেষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সোমবার আইনজীবীদের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলার শুনানি হবে আগামী শুক্রবার। এ বিষয়ে ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটসের পক্ষ থেকেও রাজ্য সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যাবতীয় তথ্য জানিয়ে ১০ দিনের মধ্যে চিঠির জবাব পাঠাতে বলা হয়েছে। ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস।
ঘটনা খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকারকে কড়া পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে এনসিপিসিআরের পক্ষ থেকে। চিঠিতে দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ চেয়ে পাঠিয়েছে এনসিপিসিআর। বিশ্বভারতীর হস্টেলে কীভাবে রাখা হয় ছাত্রীদের, কী যোগ্যতার ভিত্তিতে ওয়ার্ডেন নিয়োগ করা হয়, এই বিষয়গুলি স্পষ্ট করে জানাতে বলা হয়েছে। এই ঘটনার জেরে যে মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে ওই ছাত্রীকে। সে জন্য ছাত্রীটির বিনামূল্যে কাউন্সেলিং করাতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে।

.