জন্মান্ধ দুই বোন, জীবনে প্রথমবার দেখল মাকে
ওয়েব ডেস্ক:
ওগো দয়াময়,
দিয়ে দু নয়ন
কেন অন্ধ রেখেছো আমাকে?
একজন জন্ম হওয়ার পর ১২টা বছর কাটিয়ে ফেলেছেন। একটা মানুষকে রোজ স্পর্শ করেছেন, রোজ তাঁর ডাক শুনছেন, সাড়াও দিয়েছেন কিন্তু কখনও দেখেননি ওপ্রান্তের মানুষটিকে। আরেক জনের বয়স ৬। তাঁর ক্ষেত্রেও একই। মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ৬টা বছর কাটিয়েছেন, কিন্তু দেখেননি নিজের মাকেই। একজন সোনিয়া এবং অন্য জন সোনিয়ার বোন অঙ্কিতা। দুই বোনের কষ্টটা একই। ওরা জন্মান্ধ। দিদির কোলে চড়ে গোটা গ্রাম ঘুড়ছে বোন, অথচ কখনও দিন দিদিকেই দেখতে পায়নি। আর দিদি! যে বোনই কেবল তাঁর বন্ধু তাঁর হাতটা ধরেছে, গালে আলতো ঠোঁটের স্পর্শ করেছে কখনও চোখের জলটাও মুছিয়ে দিয়েছে কিন্তু কখনও দেখেনি কে তাঁর বোন। সূর্যটা না থাকলে পৃথিবীটা যেমন হত ওদের জগৎটা ঠিক তেমনই। দুটি চোখের দুই মণি দিয়ে ফেল ফেল করে চেয়ে থাকে ওরা, চোখের পাতাও পরে। মাঝে মাঝে জলপ্রপাতের মত চোখের কোণা গুলো বানভাসি করে দেয়। আর যিনি সবটা দেখেও নিজের চোখটা বন্ধ করে থাকেন তিনি ওদের মা।
মা, মা, মা...। এই ডাকটাই কেবল সম্বল। সম্পর্কটা মা ও মেয়ের। মা শব্দতেই জগৎ দর্শন ছিল ওদের। ৬ বছরের অঙ্কিতা ও তাঁর দিদি ১২ বছরের সোনিয়া কোনও দিন দেখতে পাবে তা কল্পনাও করেনি ওদের পরিবার। নুন আনতে পানতা ফুঁড়োয় যে পরিবারের, তাঁদের চিকিৎসা হবে কীভাবে? ওদেরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল 20/20/20-নামের একটি সংস্থা। দুই বোনের চোখ অপারেশনের ২০ হাজার টাকাই দিল ওরা। ১৫ মিনিটের ছোট্ট একটা অপারেশন। চোখের ওপর থেকে সাদা পট্টিটা সবে মাত্র খোলা হয়েছে। আলোটা তখনও চোখ গুলিকে একটু একটু ঝলসে দিচ্ছে। কয়েকটা সেকেন্ড, সোনিয়া আর অঙ্কিতা তাঁদের মাকে প্রথমবার দেখতে পেল। আর বলল,'মা আমি দেখতে পাচ্ছি। মা আমি তোমাকে দেখতে পাচ্ছি।'