রেলের লোহা চুরির অপরাধে তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলির দু বছরের জেল, তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি
নির্দেশ অনুযায়ী সোহরাব আলির বিধায়ক পদও খারিজ হওয়ার কথা। ১৯৯৫ সালের একটি মামলায় আজ আসানসোল আদালতের বিচারক বিধায়কের ওই সাজা ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে তাঁর পাঁচ হাজার টাকা জরিমানারও নির্দেশ দেন বিচারক।
ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যে রীতিমতো বেনজির ঘটনা। এই প্রথম চুরির দায়ে কারাদণ্ডের সাজা হল কোনও বিধায়কের। আজ আসানসোল আদালতের বিচারক রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলির দুবছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সোহরাব আলির বিধায়ক পদে থাকাই প্রশ্নের মুখে।
সারদাকাণ্ডে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র গ্রেফতার। আর্থিক অপরাধে জড়িয়ে রাজ্যের কোনও বিধায়ক তথা মন্ত্রীর কারাবাস সেই প্রথম। এখনও জামিন পাননি মদন। এর মাঝেই ফের ধাক্কা। এবার চুরির অভিযোগে জেল খাটার মুখে তৃণমূলেরই আর এক বিধায়ক।
এলাকায় রীতিমতো দোর্দণ্ডপ্রতাপ রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলি। ১৯৯৫ সালে রেলের সম্পত্তি চুরির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে আরপিএফ। মঙ্গলবার সেই মামলারই রায় দেন আসানসোল আদালতের বিচারক।
সাজার ওপর আপাতত তিনমাসের স্থগিতাদেশ। এর মাঝে সাজাপ্রাপ্ত বিধায়ক উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারেন। ঘটনার নেপথ্যে সিপিএমের চক্রান্ত দেখছেন সোহরাব আলি।
কারাবাস থেকে আপাতত রেহাই পেলেন বটে। কিন্তু সোহরাব আলির বিধায়ক পদ কি আর থাকবে? সুপ্রিম কোর্টের ২০১৩ সালের রায় অনুযায়ী, যে কোনও অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেই সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির পদ খারিজ হয়ে যাবে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইনজীবীমহল দ্বিধাবিভক্ত। একাংশের মতে
বিচারক সোহরাব আলিকে দোষী সাব্যস্ত করে দুবছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। সেই সাজা আপাতত স্থগিত থাকলেও বিধায়ক এখন দোষী সাব্যস্ত, সাজাপ্রাপ্ত। কাজেই শীর্ষ আদালতের রায় অনুযায়ী, তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে যাবে
অন্য একটি মহল অবশ্য এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, রায় ঘোষণা হলেও, তার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারক। অর্থাত্ রায় কার্যকরই নয়। তাই সোহরাব আলি এখনই সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আওতায় পড়ছেন না। সুতরাং তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৃণমূল বিধায়কের পদ খারিজের তত্ত্ব মানতে নারাজ। কিন্তু সোহরাব আদৌ রেহাই পাবেন কি? প্রশ্ন থাকছেই।