এবার ধর্ষণ বাঁকুড়া হাসপাতালে, অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তার

বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হল রোগিণীর পোশাক এবং বিছানার চাদর। সোমবার রাতে শারীরিক পরীক্ষার নামে মূক ও বধির ওই রোগিণীকে হাসপাতালের `ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ড`-এর মধ্যই ধর্ষণ করা হয়েছে বলে এক জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তাঁর বাবা।

Updated By: Feb 29, 2012, 12:15 PM IST

বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য রোগিণীকে আনা হল কলকাতায়। পরীক্ষার জন্য আগেই পাঠানো হয়েছে তাঁর পোশাক এবং বিছানার চাদর। সোমবার রাতে শারীরিক পরীক্ষার নামে মূক ও বধির ওই রোগিণীকে হাসপাতালের 'ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ড'-এর মধ্যই ধর্ষণ করা হয়েছে বলে এক জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তাঁর বাবা। গতকাল সন্ধ্যায় পুলিসের কাছে এফআইআর দায়ের করেন তিনি। তার আগে হাসপাতালের সুপারের কাছেও লিখিত অভিযোগ জমা দেন ১৮ বছর বয়সী ওই রোগিণীর বাবা। তবে অভিযোগপত্রে নির্দিষ্ট কোনও চিকিত্‍সকের নাম উল্লেখ করেননি তিনি। ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন।
জানা গিয়েছে রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ বুকে ব্যথা নিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের ফিমেল ওয়ার্ডে ভর্তি হন মূক ও বধির ওই তরুণী। মায়ের বক্তব্য অনুযায়ী রাত ১১ টা নাগাদ শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য একটি কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর মেয়েকে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরও মেয়ে না ফেরায় উদ্বিগ্ন হয়ে পাশের কেবিনে গিয়ে যান তিনি। দরজা বন্ধ থাকায় জোরে ধাক্কা দিল দরজা খুলে দেন অভিযুক্ত চিকিত্‍সক নিজেই। মেয়েক বিবস্ত্র অবস্থায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখে বিহ্বল হয়ে পড়েন তিনি। সেই সময় রোগিণীর বাবাও সেখানে উপস্থিত হন। ঘটনা আন্দাজ করতে পেরে চিকিত্‍সকের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললে তাঁদেরকে শাসানির মুখে পড়তে হয় বলেও অভিযোগ করেছেন ধর্ষিতার মা। এরপর থেকে ওই চিকিত্সককে আর দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুণ্ডুর কাছে জানান হয় অভিযোগ। তবে চিকিত্সকের নাম না জানা থাকায় অভিযোগপত্রে কোনও নির্দিষ্ট নামের উল্লেখ করতে পারেনি ধর্ষিতার পরিবার। ওই চিকিত্‍সকের চেহারার বিবরণ দিয়েই অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী প্রতিমা বিশ্বাসের সঙ্গেও তাঁরা দেখা করেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ পাওয়ার পর পঞ্চানন বাবু জানান, ওই রাতে ফিমেল ওয়ার্ডে কোন জুনিয়র ডাক্তার ডিউটেতে ছিলেন কি না তা তাঁর জানা নেই। এরপরই একটি ৩ সদস্যের তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। অভিযোগ উঠেছে তদন্ত কমিটি ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তদন্ত কমিটির তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ধর্ষিতা তরুণী মূক ও বধির নন। অথচ হাসপাতাল সুপার নিজেই জানিয়েছেন ধর্ষিতা মূক ও বধির। কমিটির দাবি যেই কেবিনে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ করা হচ্ছে সেই কেবিনে কোনও দরজা নেই। অথচ ধর্ষিতার মা জানিয়েছেন যেইসময় তিনি অকুস্থলে যান সেই সময় কেবিনের দরজা বন্ধ ছিল। ধর্ষিতার মা আরও দাবি করেছেন ওই সময় ঘরে কোনও মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন না। সেই দাবিকে অস্বীকার করে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা জানান ঘরে ওই সময় মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী উপস্থিত ছিলেন। এমনকি ধর্ষিতার মানসিক সুস্থতা প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। এরপরই বুধবার সকালে ধর্ষিতার পোশাক ও বিছানার চাদর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

.