অধরা সমাধান, পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে জটিলতা তুঙ্গে
আজও পঞ্চায়েত ভোটের জটিলতা মিটল না। আদতে এমন জটিলতা তৈরি হল যাতে আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারল না। প্রশ্ন উঠল রাজ্য ও কেন্দ্রের সাংবিধানিক অধিকার ও দায়িত্ব নিয়েও।
আজও পঞ্চায়েত ভোটের জটিলতা মিটল না। আদতে এমন জটিলতা তৈরি হল যাতে আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারল না। প্রশ্ন উঠল রাজ্য ও কেন্দ্রের সাংবিধানিক অধিকার ও দায়িত্ব নিয়েও। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে নজিরবিহীন জটিলতা তৈরি হল কলকাতা হাইকোর্টে। উঠল সাংবিধানিক প্রশ্ন। রাজ্যকে কোন কোন ক্ষেত্রে সাহায্য করতে বাধ্য কেন্দ্রীয় সরকার সে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হল। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারল না আদালত। শুরুতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আইনজীবী জানিয়েদেন, কেন্দ্রের পক্ষে বাহিনী দেওয়া সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আইনজীবী জানান, রাজ্য গত ২১ জুন চিঠি দিয়েছিল, যা যা বলেছে তা করা হয়েছে, সীমানা ও সীমান্তের পাহারাদারি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র কেন বাহিনী দিতে পারবে না তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি-- কারণ হিসাবে বলা হয়েছে-- উত্তরাখণ্ডে বিপর্যয় মোকাবিলায় বাহিনী পাঠান হয়েছে। অমরনাথ যাত্রা, অসমে দাঙ্গা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে তেলেঙ্গানা আন্দোলনে বাহিনী পাঠানো হয়েছে। বাহিনী রয়েছে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায়। অন্যদিকে আদালতের নির্ধারিত বাহিনী ছাড়া ভোট করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন কমিশনের আইনজীবী। কমিশনের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করা অসম্ভব। যদি রাজ্য সরকার বাহিনীর বিষয়টি নিশ্চিত করে ভোটের দিনক্ষণ বদলানো যেতে পারে। বিচারপতি তখন জানতে চান, তাহলে সমস্যা সমাধানের উপায় কী ? অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, কমিশন যা বলছে তাহলে তো ভোটই হবে না। বিচারপতি জানতে চান তাহলে কী করা উচিত ? অ্যাডভোকেট জেনারেল তখন বলেন, কাট ইউর কোট অ্যাকর্ডিং ইওর ক্লথ। যা বাহিনী আছে তাই দিয়েই ভোট হোক। সমরাদিত্য পাল বলেন, আর কত মৃত্যু দেখতে চায় রাজ্য সরকার ? অ্যাডভোকেট জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে এবার তির্যক মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। প্রধান বিচারপতি- আপনি তো জানেনই আপনার কাছে বাহিনী নেই। তাহলে একদিনে নটা জেলায় ভোট করতে রাজি হলেন কেন? এই সময়েই কেন্দ্র ও রাজ্যের সাংবিধানিক দায়িত্ব ও সহযোগিতার বিষয়টি ওঠে। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, ৩৫৫ ধারা অনুসারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকার রাজ্যকে সহযোগিতা করতে দায়বদ্ধ। বিষয়টিকে সমর্থন জানান রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায়ও। সংবিধানিক দায়িত্ব, কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া না পাওয়া নিয়ে এমন এক জটিলতা তৈরি হয়েছে যাতে আদালতের পক্ষেও এই মামলায় সিদ্ধান্তে পৌঁছতে অনেক বেশি সময় লাগছে। আর যত দেরি হচ্ছে, তত জটিল হচ্ছে ভোটের ভবিষ্যত।