দেড়শ টাকার জন্য কন্যাসন্তানদের বিক্রি করে দিলেন মা!
অভাবের তাড়নায় দেড়শ টাকার বিনিময়ে নিজের তিন কন্যাসন্তানকে বিক্রি করে দিলেন মা। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ডায়মন্ডহারবারের নেতরায়। শিশুকন্যাদের একজনকে একশো টাকা, অন্য দুজনকে তিরিশ ও পঁচিশ টাকার বিনিময়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। উদ্ধার করা হয় ওই তিন কন্যাসন্তানকে।
অভাবের তাড়নায় দেড়শ টাকার বিনিময়ে নিজের তিন কন্যাসন্তানকে বিক্রি করে দিলেন মা। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ডায়মন্ডহারবারের নেতরায়। শিশুকন্যাদের একজনকে একশো টাকা, অন্য দুজনকে তিরিশ ও পঁচিশ টাকার বিনিময়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। উদ্ধার করা হয় ওই তিন কন্যাসন্তানকে। তার আগেই মহিলার ওপর অত্যাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁর স্বামীকে।
অভাবের সঙ্গে নিত্য ওঠাবসা। অনটনের সেই জ্বালা আরও তীব্র হয়েছিল মদ্যপ স্বামীর অত্যাচারে। চেয়েছিলেন একটু ভালো পরিবেশে বেড়ে উঠুক তাঁর তিন কন্যাসন্তান। অন্তত দুধভাতটুকু জুটুক তিনজনের। তীব্র মানসিক টানাপোড়েনের পর অবশেষে মন শক্ত করেন ডায়মণ্ডহারবারের নেতরা গ্রাম পঞ্চায়েতের মালঞ্চ গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণিমা হালদার। তিন মেয়ের হাত ধরে বেরিয়ে আসেন বাড়ি থেকে। চলে আসেন ডায়মণ্ডহারবার স্টেশনে। দশ বারোদিন ধরে সেখানেই থেকেছেন পূর্ণিমাদেবী। খেয়েছেন পাশের আশ্রমে। সেখানেই প্রভাস নামে স্থানীয় এক যুবক মারফত আলাপ হয় গৌরী হালদারের সঙ্গে। গত চব্বিশে অগাস্ট, ডায়মণ্ডহারবার আদালতে নোটারি করে, মাত্র একশ টাকার বিনিময়ে মেজো মেয়ে সুপ্রিয়াকে তাঁর হাতে তুলে দেন পূর্ণিমাদেবী।
এরপর একে একে বড়মেয়ে পিয়া এবং ছোটমেয়ে রমাকেও অন্যের হাতে তুলে দেন তিনি। যেখানে বিনিময় মূল্য নেহাতই নগণ্য। এতদিন দাঁতে দাঁত চেপে নিজের মনের সঙ্গে যে লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছিলেন, গর্ভজাত তিন সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার পর ভেঙে যায় সেই প্রতিরোধ। ডায়মণ্ডহারবার স্টেশনে বসে এক মহিলাকে কাঁদতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। পূর্ণিমাদেবীর তিন সন্তানকে উদ্ধার করেছে পুলিস। এমন সিদ্ধান্তের পিছনে অভাবই যে বড় কারণ সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধানও।
তিন কন্যাসন্তানকে আপাতত সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে। পূর্ণিমাদেবীর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে প্রভাস নামে স্থানীয় ওই যুবক এবং পূর্ণিমাদেবীকে। কীভাবে নোটারি করে এমন একটি বেআইনি কাজ করা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে যিনি নোটারি করেছেন তাঁর ভূমিকা নিয়েও। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।