এবিজি বিদায়ের পর থেকে হাঁপানি বাড়ছে হলদিয়ার

এবিজি চলে যাওয়ার পর ক্রমশ রুগ্ন হচ্ছে হলদিয়া বন্দর। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে বন্দরে পণ্য খালাসের পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে। অথচ, পাশেই ওড়িশার পারাদ্বীপে বেড়েছে পণ্য খালাসের পরিমাণ। শাসকদলের দাদাগিরিতে এবিজি হলদিয়া ছেড়ে যাওয়ায় শুধু যে বন্দরের আয় কমছে এমন নয়। হলদিয়ায় জাহাজ আসা কমে যাওয়ায় বেড়ে যাচ্ছে আমদানির খরচ। যা শিল্পে রাজ্যের বেহাল দশাকে দিনে দিনে আরও সঙ্গীন করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। হলদিয়া বন্দর ছেড়ে গেছে এবিজি। তারপরে বন্দরের দশা যে ক্রমশ করুণ হচ্ছে, পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট।  

Updated By: Jul 7, 2013, 08:54 PM IST

এবিজি চলে যাওয়ার পর ক্রমশ রুগ্ন হচ্ছে হলদিয়া বন্দর। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে বন্দরে পণ্য খালাসের পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে। অথচ, পাশেই ওড়িশার পারাদ্বীপে বেড়েছে পণ্য খালাসের পরিমাণ। শাসকদলের দাদাগিরিতে এবিজি হলদিয়া ছেড়ে যাওয়ায় শুধু যে বন্দরের আয় কমছে এমন নয়। হলদিয়ায় জাহাজ আসা কমে যাওয়ায় বেড়ে যাচ্ছে আমদানির খরচ। যা শিল্পে রাজ্যের বেহাল দশাকে দিনে দিনে আরও সঙ্গীন করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। হলদিয়া বন্দর ছেড়ে গেছে এবিজি। তারপরে বন্দরের দশা যে ক্রমশ করুণ হচ্ছে, পরিসংখ্যানেই তা স্পষ্ট।
 
২০১২-১৩ আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে হলদিয়ায় পণ্য খালাস হয়েছিল ৭.২৭ মিলিয়ন টন। আর চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে তা কমে হয়েছে ৭.০৭ মিলিয়ন টন।         
 
এবিজির হাতে ছিল হলদিয়ার দুই ও আট নম্বর বার্থ। এবিজি বিদায়ের পরে, ওই দুই বার্থে দৈনিক পণ্য ওঠানো-নামানোর পরিমাণ ৪০ হাজার মেট্রিক টন থেকে কমে হয়েছে ১০ হাজার মেট্রিক টন। এবিজি-র প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থা রিপ্লে আটটি বার্থে কাজ করছিল। সেখানেও পণ্য খালাসের পরিমাণ দৈনিক ছ-হাজার মেট্রিক টন থেকে কমে হয়েছে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন। 
 
অনেকে অবশ্য বলছেন, এবিজি বিদায় নয়, হলদিয়া বন্দরের দুরবস্থার কারণ দুনিয়াজুড়ে চলা আর্থিক মন্দা। তাহলে অন্য বন্দরগুলির ছবিটা অন্য রকম হয় কী করে?  
২০১২-১৩-র প্রথম তিন মাসে পূর্ব উপকূলের পারাদ্বীপ বন্দরে পণ্য খালাসের পরিমাণ ছিল এগারো দশমিক সাত চার মিলিয়ন টন। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে তা বেড়ে হয়েছে ১৭ মিলিয়ন টন।
 
অর্থাৎ, হলদিয়ায় পণ্য খালাস কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ আর পারাদ্বীপে বেড়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। কলকাতা বন্দরেও চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে পণ্য খালাসের পরিমাণ সাত দশমিক সাত তিন শতাংশ বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবিজি বিদায়ের পর মালবাহী জাহাজগুলি হলদিয়ায় না এসে যাচ্ছে পারাদ্বীপে।  ফলে একদিকে, হলদিয়া বন্দরের আয় কমছে। অন্যদিকে, রাজ্যের বিভিন্ন শিল্প সংস্থার আমদানি খরচও বাড়ছে। এবিজি বিদায়ের পিছনে শাসকদলের নাম জড়িয়ে গেছে। বন্দর সূত্রে জানা যায়, এবিজি-র সঙ্গে টক্কর লাগে শাসকদলের এক প্রাক্তন সাংসদের সংস্থা রিপ্লের। এবিজি-র মতো অত্যাধুনিক মোবাইল হারবার ক্রেন না থাকায় পিছিয়ে পড়ছিল রিপ্লে। তাই শুরু হয় এবিজি হঠানোর ছক। তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী তো বটেই শিল্পমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীও এবিজি-র বিরুদ্ধে সুর চড়ান। চলতে থাকে দুষ্কৃতী হামলাও। নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের যায় এবিজি। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। গত বছরের একতিরিশে অক্টোবর সংস্থার তিন আধিকারিককে অপহরণের পর হলদিয়া ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবিজি। প্রশ্ন উঠছে, এবিজি বিদায়ের পর হলদিয়া বন্দরের বেহাল দশার জন্য কি দায় এড়াতে পারে প্রশাসন?    

 

.