মালদহ হাসপাতালে শিশুমৃত্যু বেড়ে ২৮
মালদা মেডিক্যাল কলেজে শিশুমৃত্যু আব্যাহত। শুক্রবার রাত থেকে রবিবার পর্যন্ত আরও ৮ টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবারও ৭ টি ও শুক্রবার ৪ টি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। মালদা মেডিকেল কলেজে এই নিয়ে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৮।
মালদা মেডিক্যাল কলেজে শিশুমৃত্যু আব্যাহত। শুক্রবার রাত থেকে রবিবার পর্যন্ত আরও ৮ টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবারও ৭ টি ও শুক্রবার ৪ টি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। মালদা মেডিকেল কলেজে এই নিয়ে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৮।
মালদার চাঁচোলের বাসিন্দা শাবিনা বিবি একটি কন্যা সন্তান প্রসবের পরেই তার মৃত্যু হয়। বামনগোলার বাসিন্দা রাখি সরকারের ২৩ দিনের এক সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ফের শিশু মৃত্যুর ঘটনার হাসপাতালের চিকিত্সা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা।
বৃহস্পতিবার মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান এবং টাস্ক ফোর্সের একজন প্রতিনিধি। দুই স্বাস্থ্য-কর্তা সেখানে বৈঠক করেন। পরে হাসপাতাল চত্বরেই রোগীর আত্মীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা। যদিও মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু মৃত্যুতে গাফিলতির কথা মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উল্টে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অপুষ্টিজনিত কারণ, শ্বাসকষ্টজনিত কারণ, কম ওজন এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শিশুদের।
শিশুদের পরিবারের লোকজনেরা কিন্তু শিশু মৃত্যুর জন্য চিকিত্সায় গাফিলতিকেই মূলত দায়ী করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালে সময়মতো চিকিত্সকেরা আসেন না, নার্সিং স্টাফ এবং গ্রুপ-ডি কর্মীদের দুর্ব্যবহার করেন সেই সঙ্গে অভাব রয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রেরও।
স্বাস্থ্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গঠন করা টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আরও একজন সদস্য বৃহস্পতিবার মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। তাঁরা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, সুপার, ডেপুটি সুপার, অ্যাসিসটেন্ট সুপারের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপরেই তাঁরা জানিয়ে দেন, চিকিত্সায় গাফিলতি নয়, পরিকাঠামোগত ত্রুটিই শিশু মৃত্যুর মূল কারণ।
দীর্ঘ দিন ধরেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিত্সা পরিকাঠামো প্রশ্নের মুখে। হাসপাতালের শিশু বিভাগে মোট চিকিত্সকের সংখ্যা ৪। মাস খানেক আগে হাসপাতালের সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট খোলা হয়। সেখানে চিকিত্সকের সংখ্যাও ৪ জন। শিশু বিভাগ এবং এসএনসিইউ--এই দুই ক্ষেত্রেই মোট ৪ জন সহকারী চিকিত্সক। প্রতি শিফটে নার্সিং স্টাফের সংখ্যা ৪ জন করে। তবে ধারাবহিক শিশুমৃত্যুর জেরে অবশেষে টনক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। বৈঠক করে নেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত। অতিরিক্ত নার্স নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ৪ জন চিকিত্সক নিয়োগ করা হচ্ছে।