মহুয়ার নেশা, ধামসা, মাদলে বাহা উত্সবে মাতল বাঁকুড়া
প্রকৃতির সঙ্গে নিত্যদিন যাঁরা বেঁচে থাকেন, সেই আদিবাসী মানুষদের সুখ-দুঃখ-আনন্দ-হাসি গান সবই ঋতু চক্রের সঙ্গেই। বসন্তে ফুলে আর কচি পাতায় গাছগাছালি যখন ঢেকে যায় তখনই আদিবাসীদের মধ্যে শুরু হয় বাহা উত্সব। বাঁকুড়ার গোবিন্দনগরে এমনই এক বাহা উত্সবে মেতে উঠেছেন আদিবাসী সম্রদায়ের অসংখ্য মানুষ।
ফুল থেকে ফল হয়। ফল থেকে বীজ। বীজ থেকে নতুন গাছ। অর্থাত্ ফুলই হল সৃষ্টির উত্স। তাই সৃষ্টির আনন্দে মেতে উঠেছে আদিবাসী মন। মারাং বুরু, জাহের আয়ু, মড়ে ক তুরুই ক--এই তিন দেবতাকে নতুন ফুলে পুজো করে শুরু হয়েছে উত্সব। ধামসা মাদলের তালে তালে ছন্দ মেলাচ্ছেন আদিবাসী মহিলারা। আদিবাসী সংস্কৃতির গবেষকরা মনে করেন আর্যভট্ট বা কোপারনিকাসের বার্ষিক গতির তত্ত্ব আবিষ্কারের বহু আগেই আদিবাসীরা টের পেয়েছিলেন সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে পৃথিবী। একবার গাছে ফুল আসা থেকে পরের বার পর্যন্ত সময়কে তারা এক বছর হিসেবে গণণা করে। নতুন সেই বছরকে স্বাগত জানানোর জন্যই বাহা উত্সবের প্রচলন।
মহুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে রাতভর চলে নাচ। জঙ্গলের ফুলের গন্ধ, ধামসা মাদলের বোল আর মহুয়ার নেশা, এই সব মিলিয়ে এখন এক অন্য জগত্ জঙ্গলমহল।