লাভের অঙ্ক না মেলায় হলদিয়া বন্দর ছাড়ার হুঁশিয়ারি এবিজির
হলদিয়া বন্দরের অচলাবস্থা কাটার কোনও লক্ষণ নেই। বন্দর কর্তৃপক্ষের ডাকা গতকালের বৈঠকেও মেলেনি কোনও সমাধানসূত্র। বেসরকারি সংস্থা এবিজিকে কী পরিমাণ পণ্য নামানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা ঠিক করতে বৈঠকে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, ব্যবসা লাভজনক না হলে তাঁরা যে হলদিয়া ছেড়ে যাবে তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে এবিজি।
হলদিয়া বন্দরের অচলাবস্থা কাটার কোনও লক্ষণ নেই। বন্দর কর্তৃপক্ষের ডাকা গতকালের বৈঠকেও মেলেনি কোনও সমাধানসূত্র। বেসরকারি সংস্থা এবিজিকে কী পরিমাণ পণ্য নামানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা ঠিক করতে বৈঠকে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, ব্যবসা লাভজনক না হলে তাঁরা যে হলদিয়া ছেড়ে যাবে তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে এবিজি।
২৮ সেপ্টেম্বর থেকে হলদিয়া বন্দরের ২ ও ৮ নম্বর বার্থে কাজ বন্ধ। এই দুটি বার্থে পণ্য নামানোর দায়িত্বে রয়েছে বেসরকারি সংস্থা এবিজি। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারকারী এই সংস্থার দাবি, বছরে অন্তত ৯ মিলিয়ন টন পণ্য নামানোর সুযোগ না পেলে ব্যবসা লাভজনক হবে না। এ বিষয়ে হাইকোর্ট নির্দেশ দিলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ ২ ও ৮ নম্বর বার্থে সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী জাহাজ ভেড়ানোর ব্যবস্থা করতে পারেনি বলে অভিযোগ। সমস্যা মেটাতে বৃহস্পতিবার কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের অফিসে বৈঠক ডাকা হয়। হলদিয়া বন্দরের চেয়ারম্যান, এবিজির সিইও সহ শ্রমিক সংগঠন ও বন্দরের কাজের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পক্ষ বৈঠকে উপস্থিত ছিল। এবিজির সমস্যা মিটিয়ে হলদিয়া বন্দরকে স্বাভাবিক চেহারায় ফেরাতে ৯ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন বন্দরের চেয়ারম্যান মনীশ জৈন। যদিও, এবিজির সিইও গুরপ্রীত মালহি স্পষ্ট জানিয়েছেন, কমিটির সুপারিশ যাই হোক না কেন, ব্যবসা লাভজনক না হলে তাঁরা হলদিয়া ছেড়ে যাবেন।
এবিজি, বছরে অন্তত ৯ মিলিয়ন টন পণ্য নামাতে দেওয়ার দাবি জানালেও এমন কোনও চুক্তির কথা মানতে নারাজ হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন উঠেছে, চুক্তিই যদি না থাকে তাহলে এবিজিকে বর্তমানে কোন হিসাবের ভিত্তিতে ৫ মিলিয়ন টন পণ্য নামানোর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে? এই অবস্থায় হলদিয়া বন্দরের অচলাবস্থার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন সিটু নেতা লক্ষ্ণণ শেঠ। তাঁর দাবি, কমিটি গঠন করে সমস্যা সমাধান করা যাবে না। সব পক্ষকে খুশি রাখার চেষ্টা না করে এবিজির জন্য বরাদ্দ বার্থে কতগুলি জাহাজকে আসতে দেওয়া হবে তা বন্দর কর্তৃপক্ষকেই ঠিক করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বন্দর কর্তৃপক্ষের ডাকা বৈঠকের মেয়াদ ছিল ৪ ঘণ্টা। শুধুমাত্র কমিটি গঠন ছাড়া এই বৈঠক থেকে ইতিবাচক কোনও কিছু বেরিয়ে আসেনি। হলদিয়া বন্দরে বন্ধ হয়ে থাকা ওই দুটি বার্থ কবে থেকে আবার সচল হবে সে প্রশ্নেরও উত্তর মেলেনি। কাজে বাধা পেয়ে যদি, এবিজি চলে যায় তাহলে বিদেশ থেকে আসা জাহাজগুলিও হলদিয়া বন্দরের বিকল্প হিসাবে পারাদ্বীপ বা বিশাখাপত্তনমকে বেছে নেবে। ফলে, লোকসান বাড়বে হলদিয়া বন্দরের। ক্ষতি হবে শ্রমিকদের। রাজ্যের ভাবমূর্তির পক্ষেও তা ভাল হবে না। তাই, এবিজিকে ধরে রাখতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্দর কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।