হুমকির পাল্টা আইনি পদক্ষেপের পথে এবিজি

বন্দর কর্তৃপক্ষের হুমকির প্রেক্ষিতে পাল্টা আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছে এবিজি। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে গতকাল এবিজি জানিয়ে দেয় তারা আর হলদিয়া বন্দরে কাজ করতে চায় না। চুক্তিভঙ্গ করলে এবিজি-কে বন্দর থেকে মালপত্র সরাতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন বন্দরের চেয়ারম্যান মনীশ জৈন। আগামিকাল কলকাতা হাইকোর্টে চুক্তিভাঙার মামলার শুনানি।

Updated By: Nov 1, 2012, 06:13 PM IST

বন্দর কর্তৃপক্ষের হুমকির প্রেক্ষিতে পাল্টা আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছে এবিজি। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে গতকাল এবিজি জানিয়ে দেয় তারা আর হলদিয়া বন্দরে কাজ করতে চায় না। চুক্তিভঙ্গ করলে এবিজি-কে বন্দর থেকে মালপত্র সরাতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন বন্দরের চেয়ারম্যান মনীশ জৈন। আগামিকাল কলকাতা হাইকোর্টে চুক্তিভাঙার মামলার শুনানি।
বুধবার এবিজি-র তরফে বন্দর ছাড়ার কথা জানানোর পরেই বন্দরের চেয়ারম্যান মণীশ জৈন এবিজি-কে ওই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এবিজি হলদিয়া ছাড়ার কথা বলায় তাদের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। আদতে এবিজি-র সঙ্গে চুক্তি ভাঙার দাবি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষই। তাঁদের আইনজীবীও আদালতে সেকথা জানিয়েছেন। সেই কারণেই এবিজি-র পাল্টা দাবি, বন্দর কর্তৃপক্ষ অন্যায্য দাবি করছে। তাঁদের যন্ত্রপাতি আটকে দিলে এবিজিও পাল্টা আইনের দ্বারস্থ হবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষই আগেভাগে চুক্তিভাঙার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, এবিজি-কে ধরে রাখার কোনও ইচ্ছা নেই বন্দর কর্তৃপক্ষের। ক্ষতিপূরণের কথা তুলে তারা সংস্থাটিকে চাপে রাখতেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। এবিজি-র হলদিয়া ছাড়া নিয়ে যে আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে তাতে সংস্থাটি যেমন জড়িয়ে রয়েছে, তেমনই জড়িয়ে রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষও। বন্দর কর্তৃপক্ষ এবিজি-র বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ তুললেও সংস্থার তরফে পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা জনিত কারণে তারা হলদিয়ায় থাকতে পারছে না।
দুপক্ষের চুক্তি কার্যকর হওয়ার জন্য পণ্য খালাসের মতো অভ্যন্তরীণ বিষয়ের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আইনশৃঙ্খলার মতো বাইরের বিষয়ও। এই অবস্থায়, এবিজি-র হলদিয়া ছাড়তে চাওয়ার দায়  বন্দর কর্তৃপক্ষের ঘাড়েও একইভাবে বর্তাচ্ছে। ফলে, শেষপর্যন্ত হলদিয়া বন্দরে এবিজি-র ভবিষ্যত কী হবে, তার অনেকটাই নির্ভর করছে আদালতের নির্দেশের ওপর। তবে, আদালতের রায় যাই হোক না কেন, এবিজি-র হলদিয়া ছাড়তে চাওয়া যে রাজ্যের ভাবমূর্তির পক্ষে বড় আঘাত, সে বিষয়ে একমত বিশেষজ্ঞ মহল। হলদিয়া বন্দরে অব্যাহত অচলাবস্থা। এবিজির যে তিন কর্তা অপহরণের অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে জেলা পুলিসের একটি প্রতিনিধি দল বিশাখাপত্তনমের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আগামিকাল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সাধারণ সম্পাদক কামারুজামান কামারের নেতৃত্বে হলদিয়া যাচ্ছে রাজ্য কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের এক প্রতিনিধি দল। অন্যদিকে শুক্রবার বিকেলেই এলাকায় আইএনটিটিইউসির তরফে একটি জনসভার ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। জনসভায় সামিল হতে পারেন তৃণমূলের শ্রমিক নেত্রী দোলা সেন। ছাঁটাই হওয়া দুশো পঁচাত্তরজন শ্রমিকদের বিক্ষোভের জেরে গতকয়েকদিন ধরেই অচলবস্থা জারি হয়েছে হলদিয়া বন্দরে। গতকাল থেকে পাল্টা অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন এবিজির কর্মরত শ্রমিকরা। এই পরিস্থিতিতেই নিরাপত্তার অভাবে হলদিয়া বন্দর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পণ্যখালাস সংস্থা এবিজি।

এবিজি কর্তৃপক্ষের বন্দর ছাড়ার সিদ্ধান্তে আশঙ্কায় সংস্থার কর্মীরা। গতকাল থেকেই হলদিয়া নন্দরামপুরে ধরনায় বসেছেন এবিজির কর্মীরা। কর্মীদের তরফে এবিজি কতৃপক্ষকে বন্দর না ছাড়ার আর্জি জানানো হয়েছে। কাজ না থাকায় এবিজি থেকে ছাঁটাই হওয়া কর্মীরাও শুরু করেছে অবস্থান বিক্ষোভ। রাজ্য থেকে এবিজির বিদায়ের জন্য সাংসদ শুভেন্দু অধিকারির বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছেন এবিজির কর্মীরা। তাদের অভিযোগ এখনও বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজে যোগ না দেওযার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রাননাশেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিযেছেন তারা।

.