Raising Sea Level: জলস্তর বাড়ছে! অচিরেই সমুদ্রজলে প্লাবিত হয়ে যাবে গোটা পৃথিবী...
আবার পৃথিবী প্লাবিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। কেন আশঙ্কা? গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জেরে পৃথিবী একটু-একটু করে উষ্ণ হয়ে উঠছে, গলছে পৃথিবীর সঞ্চিত বরফমুকুট।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বহু দিন ধরেই এরকম একটা আশঙ্কা চলছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা, জলবায়ু বিশেষজ্ঞেরা এ কথাটা বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন মানুষকে। কিন্তু কী দেশ, কী ব্যক্তি-মানুষ, কেউই এই সতর্কতা হয়তো কানে তোলেনি। তাই পরিস্থিতি যে-তিমিরে সেই-তিমিরেই। কীসের আশঙ্কা? পৃথিবী প্লাবিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জেরে পৃথিবী একটু-একটু করে উষ্ণ হয়ে উঠছে। গলছে পৃথিবীর সঞ্চিত বরফমুকুট। মেরুবরফগলা সেই বাড়তি জল অবলীলায় বাড়িয়ে দিচ্ছে সমুদ্রের জলস্তর। সম্প্রতি তেমনই এক আশঙ্কার কথা ফের জানা গিয়েছে। গ্রিনল্যান্ডের বরফের একটি বড় চাদর গলে অচিরেই পৃথিবীর সমুদ্রস্তর গড়ে ১০ ইঞ্চি বা ২৭ সেন্টিমিটার বাড়িয়ে দেবে! পরিমাণটা ফেলনা নয়। সারা বিশ্বের জলভাগে গড়ে প্রায় ১ ফুট স্তরবৃদ্ধি রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। কেননা, তখন যেকোনও দিন আপনার-আমার চেনা জনপদেও জল ঢুকে পড়তে পারে। বিশেষত, নীচু এলাকাগুলির কপালে যথেষ্ট দুঃখ আছে। পৃথিবীর সার্বিক পরিবেশ-স্বাস্থ্যের পক্ষে বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
আরও পড়ুন: Brazil: মারা গেলেন পৃথিবীর সব থেকে নিঃসঙ্গ মানুষ, কেন তাঁর কুটিরের বাইরে গর্ত...
বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটাকে বলা হচ্ছে, 'জোম্বি আইস' বা 'ডুমড আইস'। এই বরফস্তর খুবই মোটা। এবং এটি এখনও পর্যন্ত মূল বরফের চাঁইয়ের সঙ্গেই সংযুক্ত হয়ে আছে। এখনও আলাদা হয়ে যায়নি। কিন্তু অচিরেই তা যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের। আর তখনই সমুদ্রে জলস্তর বৃদ্ধির এই ভয়ানক ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মূল বরফের চাঁইকে 'পেরেন্ট গ্লেসিয়ার' বলে। কিন্তু সমস্যা হল, পরিবেশ টানা উষ্ণ থেকে যাওয়ার জেরে এই পেরেন্ট গ্লেসিয়ারে আর নতুন করে বরফস্তর জমছে না। ফলে সে পাতলা হয়ে যাচ্ছে, দুর্বলও হয়ে যাচ্ছে। আর তার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার উপক্রম করছে এর ছোট ছোট অংশ। 'ছোট' বললেও, তা পৃথিবীর সামুদ্রিক জলস্তর বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ডেনমার্ক অ্যান্ড গ্রিনল্যান্ড-এর গ্লেসিওলজিস্ট বা হিমবাহবিদ জেসন বক্স ও উইলিয়াম কোলগান এই বিষয়ক একটি গবেষণাপত্রে এই আশঙ্কার কথা বলেছেন। গবেষণাপত্রটি বেরিয়েছে 'নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ' নামক জার্নালে। হিমবাহবিদ উইলিয়াম কোলগান বলেছেন, এখনই বেশ কিছু বরফের টুকরো ভেঙে গিয়ে ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে জলে। তবে এবার সমুদ্রস্তর যে-পরিমাণ বাড়তে চলেছে, গত কয়েকবছর ধরে বিজ্ঞানীরা গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলে গিয়ে যে-পরিমাণ জল বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন, তার প্রায় দ্বিগুণ। এ কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন হিমবাহবিদ জেসন বক্স। তবে তাঁরা আরও যে কথা বলেছেন, তা আমাদের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দেবে বলেই মনে হয়। কেননা, এটা আসলে ৩০ ইঞ্চি (৭৮ সেন্টিমিটার) পর্যন্ত বাড়তে পারে। সব থেকে বড় কথা হল-- 'ইন্টারগভর্মেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ' ভবিষ্যদ্বাণী শুনিয়েছিল আগামী ২১০০ সাল নাগাদ জলস্তর বাড়তে পারে ২-৫ ইঞ্চি মাত্র। যদিও সর্বশেষ এই পর্যবেক্ষণ বলছে জলবৃদ্ধি এর চেয়ে অনেক বেশিই হতে চলেছে। আর তাতেই আশঙ্কা বাড়ছে।