মায়ানমারে ৭ বছরে কারাদণ্ড দুই সাংবাদিকের, প্রবল বিতর্কের মুখে সু চি সরকার
মায়ানমার আদালতের এই রায় শোনার পর ওয়া লোন এবং কিয়াও সোয়ি জানিয়েছেন, তাঁরা নির্দোষ। মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিস। উল্লেখ্য, রাখাইনে ইন দিন গ্রামে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ভুক্ত ১০ ব্যক্তিকে সে দেশের সেনা হত্যা করে বলে অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদন: মায়ানমারের গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইন ভাঙার অপরাধে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-এর দুই সাংবাদিককে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিল সে দেশের আদালত। ইয়াঙ্গনের নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্ট জজ ইয়ে লুইন বলেন, ওয়া লোন (৩২ বছর) এবং কিয়াও সোয়িকে (২৮ বছর) মায়ানমারের ঔপনিবেশিক আমলের 'অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট' ভেঙে গোপন তথ্য হাতানোর অভিযোগে শাস্তি দেওয়া হল।
রয়টার্সের এই দুই সাংবাদিকের সাত বছরের কারাদণ্ডের খবরে প্রতিবাদে মুখর হয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলি। রয়টার্স-এর মুখ্য সম্পাদক স্টিফেন জে অ্যাডলার একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, "আজকের দিনটি মায়ানমার, রয়টার্স-এর দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ি এবং বিশ্বের সব সাংবাদিকদের জন্য এক অতি দুঃখের দিন"। তিনি আরও বলেন, “ওই দুই সাংবাদিকের মুক্তির জন্য আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। প্রয়োজন হলে আন্তর্জাতিক ফোরামের সাহায্য নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন- প্রবল চাপে ইমরান খান, পাকিস্তানকে ৩০ কোটি ডলার সাহায্য বাতিল করছে ট্রাম্প সরকার
মায়ানমার আদালতের এই রায় শোনার পর ওয়া লোন এবং কিয়াও সোয়ি জানিয়েছেন, তাঁরা নির্দোষ। মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিস। উল্লেখ্য, রাখাইনে ইন দিন গ্রামে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ভুক্ত ১০ ব্যক্তিকে সে দেশের সেনা হত্যা করে বলে অভিযোগ। সেই খবরের ভিত্তিতে গত বছর ৩১ ডিসেম্বরে রয়টার্সের এই দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করে পুলিস। তবে, সাংবাদিকদের তরফে জানানো হয়েছে, রাখাইনের ঘটনায় কোনও ভাবেই জড়িত ছিলেন না তাঁরা। তাঁদের একটি রেস্তোরাঁয় ডেকে সাদা কাগজে সই করিয়ে মিথ্যে বয়ান নেয় পুলিস।
আরও পড়ুন- বলিউড গানে একসঙ্গে নাচল ভারত-পাক সেনা, দেখুন ভিডিও
রাখাইনে ১০ রোহিঙ্গার হত্যায় প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে সান আন সু চি সরকার। সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, মায়ানমার সেনার সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে মৃত্যু হয় এই ১০ 'মুসলিম জঙ্গি'র। কিন্তু রয়টার্স-এর সাংবাদিকদের সাজা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে শোনা যায়নি সে দেশের সরকারকে। মামলা চলাকালীন সরকারের মুখপাত্র জ হাতে জানিয়েছেন, আদালত স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আইনের পথেই বিচার হবে তাঁদের। তবে, মায়ানমারের নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদলত এবং সে দেশের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন অভিযুক্ত সাংবাদিকরা।