মহাসেন নাম বিতর্কে ক্ষমা চাইল হাওয়া অফিস
মহাসেন নামকরণের জন্য ক্ষমা চাইল শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া দফতর। ১৬ই মে বাংলাদেশে আছড়ে পড়ে মহাসেন। কিন্তু এর আগে থেকেই মহাসেনের নামকরণ নিয়ে চাপে ছিল শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া দফতর। এই নামকরণের তীব্র নিন্দা করেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি মাহিন্দারাজ পক্ষাও। শেষ পর্যন্ত মহাসেন নামকরণের জন্য ক্ষমা চাইলেন শ্রীলঙ্কা আবহাওয়া দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। ক্ষমা চেয়েছে ভারতের মৌসম ভবন সহ আরও আটটি দেশের আবহাওয়া দফতর।
মহাসেন নামকরণের জন্য ক্ষমা চাইল শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া দফতর। ১৬ই মে বাংলাদেশে আছড়ে পড়ে মহাসেন। কিন্তু এর আগে থেকেই মহাসেনের নামকরণ নিয়ে চাপে ছিল শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া দফতর। এই নামকরণের তীব্র নিন্দা করেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি মাহিন্দারাজ পক্ষাও। শেষ পর্যন্ত মহাসেন নামকরণের জন্য ক্ষমা চাইলেন শ্রীলঙ্কা আবহাওয়া দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। ক্ষমা চেয়েছে ভারতের মৌসম ভবন সহ আরও আটটি দেশের আবহাওয়া দফতর।
২৭৪ খ্রীষ্টাব্দ থেকে তিনশো কুড়ি খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় রাজত্ব করেন রাজা মহাসেন। বৌদ্ধ ধর্মের মহাজান সম্প্রদায়ের রাজা ছিলেন মহাসেন। কথিত আছে মহাসেন অন্য সম্প্রদায়ের মানুষকে নিজের সম্প্রদায়ভুক্ত করার নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশ না মানায় রাজা মহাসেন ধ্বংস করেছিলেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বহু মন্দির। কিন্তু চন্ডাশোক থেকে ধর্মাশোকের পথ অবলম্বন করেই পরে শ্রীলঙ্কার বহু সৃজনশীল কাজ করেছিলেন নিজের কৃতকর্মে অনুতপ্ত মহাসেন। কিন্তু সম্প্রতি ভারত মহাসাগরের বুক থেকে স্থলভূমিতে আছড়ে পড়া ধ্বংসাত্মক ঝড়ের নাম রাখা হয় ধ্বংসের প্রতীক সেই রাজার নামে। আর এতেই শুরু হয় বিপত্তি। কারণ মহাসেনের পূর্ববর্তী ধ্বংসাত্মক রূপ নয় সিংহলিদের মনে গেঁথে রয়েছে তাঁর পরিবর্তিত রূপটাই। আর তাতেই ঝড়ের নামকরণ নিয়ে আপত্তি তোলেন সাধারণ মানুষ।
এমনকি এই নামকরণের তীব্র নিন্দা করেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি মাহিন্দারাজ পক্ষাও। আপত্তি জানান শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও। নামকরণের জন্য তাঁরা আবহাওয়া দফতরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেন। ক্ষোভে ফেটে পড়েন বৌদ্ধ ধর্মযাজকরাও। তাঁদের মতে, মহাসেনের নাম এইভাবে ব্যবহার করা কোনওভাবেই ঠিক কাজ হয়নি। অবিলম্বে ক্ষমা না চাইলে আইনি পথে যাওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। এটাই শেষ নয়, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর দ্যা প্রোটেকশন অফ হিসটোরিক্যাল ইরিগেশন কালচারাল হেরিটেজের তরফে আবহাওয়া দফতরের কাছে জবাবদিহি চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয়।
চিঠির জবাবে শ্রীলঙ্কা আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা এস এইচ কারিয়াওয়াসম জানান, যদি এই নামকরণের দ্বারা রাজা মহাসেন বা দেশের গর্বিত ইতিহাস অপমানিত হয়ে থাকে তাহলে আমি দুঃখিত। আমরা একটা শ্রীলঙ্কান নাম দিয়েছিলাম মাত্র। এই নির্বাচনের পেছনে কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য বা ভিত্তি ছিল না।
মহাসেন স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আগে থেকেই তৈরি হয় নাম বিতর্ক। শেষপর্যন্ত তিনতরফের চাপে পড়ে তেরো মে তড়িঘড়ি ঝড়ের মহাসেন নাম প্রত্যাহার করে শ্রীলঙ্কার আবহাওয়া দফতর। কিন্তু দেখা যায় তেরো মে থেকে ষোলো মে পর্যন্ত এই ঝড় যেসব স্থলভাগের ওপর দিয়ে গেছে সেই সব দেশগুলি তাকে মহাসেন নামেই সম্বোধন করেছে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গেছে, ভারত মহাসাগর থেকে যেসব ঘূর্ণিঝড়ের উত্পত্তি হয় তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয় মোট আটটি দেশ। ফলে এই আটটি দেশের আবহাওয়া দফতরের তরফেও নামককরণ নিয়ে ক্ষমা চাওয়া হয়। ক্ষমা চেয়েছে দিল্লির মৌসম ভবনও।