কিম-ট্রাম্প পারলে ভারত পাক নয় কেন, প্রশ্ন শরিফ ভ্রাতার

ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যাবে  প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যে কোনও সমস্যায় আগ বাড়িয়ে আলোচনার পথে হেঁটেছে ভারতই

Updated By: Jun 14, 2018, 09:39 AM IST
কিম-ট্রাম্প পারলে ভারত পাক নয় কেন, প্রশ্ন শরিফ ভ্রাতার
ছবি- এপি

নিজস্ব প্রতিবেদন: ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কিম জং উনের বৈঠকের ‘প্রাথমিক সাফাল্য’ দেখে ‘হুঁশ' ফিরেছে পাকিস্তানের। এখন আলোচনার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে চাইছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) (পিএমএল-এন) নেতা  শেহবাজ শরিফ টুইটে জানিয়েছেন, পরমাণু অস্ত্র হুঁশিয়ারি থেকে উত্তর কোরিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরে এসে যদি শান্তির রক্ষার অঙ্গীকরবদ্ধ হতে পারে, তাহলে ভারত-পাকিস্তান পারবে না কেন? উল্লেখ্য, ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যাবে  প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যে কোনও সমস্যায় আগ বাড়িয়ে আলোচনার পথে হেঁটেছে ভারতই।

আরও পড়ুন-  ডোনাল্ডের ‘ট্রাম্প কার্ডে’ সিলমোহর কিমের, খুশি মুন-জিনপিংও

প্রাক্তন পাক-প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ টুইটে আরও লেখেন, ভারত-পাকিস্তানের জন্য উত্কৃষ্ট উদাহরণ মঙ্গলবারের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার বৈঠক। কোরিয় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ত হয়েছে। পারস্পরিক পরমাণু হুমকি অব্যাহত রেখেছে দুই দেশই। এরপরও সব তিক্ততা কাটিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। তবে, শেহবাজ কাশ্মীর ইস্যুকে খাঁড়া করে শান্তির বার্তা দেওয়ার চেয়ে বিতর্কই বেশি তৈরি করলেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কাশ্মীর ভারত দ্বারা অধিকৃত বলে অভিযোগ করে শেহবাজ দাবি, সেখানকার মানুষ সহনশীলতার পরিচয় দিচ্ছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, কাশ্মীরের উপর ভারতের দখলদারির মনোভাব প্রত্যাখ্যান করেছে সেখানকার মানুষ।

আরও পড়ুন- পাকিস্তানি জঙ্গিরাই মুম্বইয়ে হামলা চালিয়েছিল, কবুল নওয়াজ শরিফের

চলতি বছরে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। এমন আবহে এই মন্তব্য করে  রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে শেহবাজের দল মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পানামা দুর্নীতির জেরে আগেই ভোটে লড়ার ক্ষমতা হারিয়েছেন  পিএমএল-এন সুপ্রিমো নওয়াজ শরিফ। যার জেরে বিপাকে তার দলও। সেই সুযোগে অনেকটাই মাটি শক্ত করে ফেলেছে  ইমরান খানের দল তেহেরিক ই ইনসাফ। অন্যদিকে কড়া লড়াই দিতে প্রস্তুত বিলাবল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।

এবারের নির্বাচনে সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, জিডিপি-র মতো জাতীয় বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পাক নাগরিকদের কাছে। আন্তর্জাতিক সমস্যাকে এবারের নির্বাচনে ইস্যু করে লড়তে চাইছে পিএমএল-এন। এ দিনের শাহবাজের টুইটেও আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়া প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। তিনি লেখেন, আফগানিস্তানের শান্তি ফেরাতে সচেষ্ট হওয়া উচিত আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির। রাষ্ট্রসংঘের সহযোগিতায় কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে দু’দেশের আলোচনায় বসা উচিত বলে জানান শেহবাজ। তবে,  ভারত অধিকৃত কাশ্মীর বা কাশ্মীরে মানুষের সহনশীলতার মন্তব্য করে পাকিস্তানের নাগরিকের কাছে ভারত বিরোধী প্রচার করতে কসুর করেননি শরিফ ভ্রাতা।

আরও পড়ুন- পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উনি এখন মোদীর ভাষায় কথা বলছেন, শরিফকে তুলোধনা ইমরানের   

শেহবাজের এই টুইটে পাকিস্তানের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা আরও ঘোরালো হচ্ছে। এপ্রিলে পাক সেনা প্রধান কামার জাভেদ বাজোয়াও আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের শান্তির বার্তা দেন। কিন্তু এরপরও প্রায়শই অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করতে দেখা গিয়েছে পাকিস্তানকে। শুধু ভারত নয় আন্তর্জাতিক স্তরেও জঙ্গি মদতের অভিযোগ ওঠেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এমনকী মুম্বই হামলায় পাক যোগের কথা স্বীকার করেছেন খোদ প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অটলবিহারী বাজপেয়ী অতীতে এমন ভুরি ভুরি নজির সৃষ্টি করেছেন যেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে সে কোনও ইস্যুতে আলোচনার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। কিন্তু তারপরও কারগিল যুদ্ধ বা উড়ি হামলার মতো ঘটনার নজির গড়েছে ইসলামাবাদ।  

.