ঐতিহাসিক এরিক হবসবম প্রয়াত

চলে গেলেন বিশিষ্ট বামপন্থী ঐতিহাসিক এরিক হবসবম। গতকাল লন্ডনে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়েস হয়েছিল ৯৫ বছর ।

Updated By: Oct 2, 2012, 12:18 PM IST

চলে গেলেন বিশিষ্ট বামপন্থী ঐতিহাসিক এরিক হবসবম। গতকাল লন্ডনে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়েস হয়েছিল ৯৫ বছর ।
হিটলারের ক্ষমতায় আসার সময় থেকে ইউরোপে ফ্যাসীবাদের উত্থানের প্রতিক্রিয়ায় যে বিপুল সংখ্যক বুদ্ধিজীবী বামপন্থার দিকে আকৃষ্ট হয়েছিলেন, হবসবম তাঁদের-ই একজন । ১৯১৭ সালে আলেকজান্দ্রিয়ার এক ব্রিটিশ পরিবারে তাঁর জন্ম হয়। শৈশবে বাবা মা-কে হারানো হবসবম ব্রিটেনে আসেন ১৯৩৩ সালে। কেমব্রিজ থেকে প্রথাগত শিক্ষা শেষ করার পর লন্ডনের বার্কবেক কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেন। আর সেই সুবাদেই জড়িয়ে পরেন ব্রিটিশ কমিউনিস্ট পার্টির সাথে।
কিন্তু হবসব্যামের পরিচয় শুধু এখানেই থেমে নেই। সারা পৃথিবীতে তিনি নন্দিত হয়েছেন শ্রমজীবী মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁদের ইতিহাস লেখার জন্য। তাঁর পৃথিবী বিখ্যাত ইতিহাসের সিরিজ `এজ অফ রিভলিউশন`, `এজ অফ ক্যাপিটাল`, `এজ অফ এমপায়ার` এবং `এজ অফ এক্সট্রীমস` এই ভাবনা থেকেই উঠে এসেছে। ফরাসী বিপ্লব থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত মানব সভ্যতার ইতিহাসের এক বিস্তৃত অধ্যায়কে দ্বান্দিক বস্তুবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যালোচনা করেছেন হবসবম।
কমিউনিজমে তাঁর অটল বিশ্বাস চিড় খায়নি কোনোদিনই। হাঙ্গেরিতে সোভিয়েত ট্যাঙ্ক ঢোকার প্রতিবাদে যখন পার্টি ছেড়েছেন প্রচুর বুদ্ধিজীবী, অথবা যখন আন্তঃপার্টি কলহে দলের অভ্যন্তরে ভাঙন ধরেছে, তখনও তাঁর অটল আস্থা ছিল মার্ক্সবাদে। সেই আস্থা টাল খায়নি সোভিয়েত পতনের পরেও। বরাবরই ছিলেন পার্টির সঙ্গে। বয়েসের ভারে ন্যুব্জ হলেও প্রখর আগ্রহে লক্ষ্য রাখতেন দেশে দেশে চলা সমসাময়িক শ্রমিক আন্দোলনের দিকে। এদেশের দেশের প্রকাশ কারাত বা ইয়েচুরিরাও যখনই ব্রিটেন গেছেন, হবসবম তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছেন ভারতবর্ষে বামপন্থার হাল হকিকত।
তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে বামপন্থী চিন্তাবিদদের একটি ঘরানাও তাই শেষ হয়ে গেল বলা যায়।

.