প্রয়াত নয়া সিঙ্গাপুরের 'রূপকার' বিতর্কিত নেতা লি কুয়ান ইয়ে
চলে গেলেন পোস্ট কলোনিয়াল এশিয়ার অন্যতম প্রবাদপ্রতিম নেতা লি কুয়ান ইয়ে। গত ছ'সপ্তাহ নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন তিনি। সোমবার ৯১ বছর বয়সী লি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ওয়েব ডেস্ক: চলে গেলেন পোস্ট কলোনিয়াল এশিয়ার অন্যতম প্রবাদপ্রতিম নেতা লি কুয়ান ইয়ে। গত ছ'সপ্তাহ নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন তিনি। সোমবার ৯১ বছর বয়সী লি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মাত্র এক প্রজন্মের মধ্যেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ট্রপিক্যাল আউটপোস্ট থেকে পুঁচকে সিঙ্গাপুরকে বিশ্বমানের শহরে রূপান্তরিত করায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। চিন থেকে দুবাইয়ের অর্থনীতি উন্নয়নে তিনি নতুন উদাহরণ তৈরি করে ছিলেন।
এই দ্বীপ শহরে চিনা সংখ্যালঘুদের সঙ্গে মালয় ও ভারতীয় সংখ্যালঘু বাসিন্দাদের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে সক্ষম হয়ে ছিলেন লি কুয়ান। তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্যই ছিল 'পরিচ্ছন্ন সবুজ' সিঙ্গাপুর গঠন। বর্তমান সিঙ্গাপুর এশিয়ার অন্যতম দুর্নীতি মুক্ত বাসযোগ্য দেশ।
যদিও কেমব্রিজের প্রাক্তন ছাত্র লি কুয়ান ইয়ের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও এক নায়কতন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে বারবার। বিরোধীদের মতামতের কোনও গুরুত্বই তিনি দিতেন না। যদিও বর্তমানে সিঙ্গাপুরে ওয়েস্টমিনস্টার স্টাইলের গণতন্ত্রে সব প্রাপ্ত বয়স্কের ভোটাধিকার রয়েছে।
স্বাধীনতার ৬ বছর আগে লি-এর পিপলস অ্যাকশন পার্টি সিঙ্গাপুরে রাজত্ব করেছে। একটি ছোট শহর থেকে অর্থনীতি হাবে সিঙ্গাপুরের পরিণত হওয়ার সময়টাও অতিরিক্ত কড়া আচরণের জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন লি।
লি ছিলেন প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের বিশেষ অনুগামী। তাঁর জমানায় সিঙ্গাপুরে বিরোধী রাজনীতি বা স্বাধীন মিডিয়ার পায়ে পদে পদে বেড়ি পড়িয়ে ছিলেন তিনি।
ফ্রিডম ইনডেক্সে পৃথিবীর ১৮০টি দেশের তালিকায় ১৫৩ তম স্থানে আছে সিঙ্গাপুর।
তাঁর আমলে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা ছিল সাংঘাতিক। রাজনৈতিক বিরোধীদের আইনি মামলায় ফাঁসানোর জন্যও বিখ্যাত ছিল লি প্রশাসন।
১৯৯০ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে আসেন লি। যদিও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী গোহ চক টোঙ্গের মন্ত্রীসভায় তাঁর প্রভাব ছিল প্রশ্নাতীত। ২০০৪ সালে তাঁর বড় ছেলে লি দেইন লুং সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি নিজে 'মিনিস্টার মেন্টর' বলে একটি পদে বসেন।
২০১১ সালে নির্বাচনে তাঁর দলের শোচনীয় পরিণতির পর ক্যাবিনেট থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।