Afghanistan Drought: তালিবানের চেয়েও ভয়ংকর! ভিটেমাটি ছেড়ে পালাচ্ছেন আফগানবাসী...
তিনি ভেবে রেখেছিলেন গ্রামে গিয়ে চাষবাস করে দিন কাটাবেন। কিন্তু সব ছেড়েছুড়ে গ্রামে ফিরে তাঁর চক্ষু চড়কগাছ! তিনি দেখেন তাঁর গ্রামের নদীটি শুকিয়ে গিয়েছে, শুকিয়ে গিয়েছে কুয়োর জলও।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আফগানিস্তানের যেন সংকটের যেন শেষ নেই। একবছর আগেই দেশটি তালিবানের খপ্পরে পড়েছে। এর উপর অর্থনৈতিক সংকট, রাজনৈতিক সংকট তো আছেই। পিছু ছাড়ছে না প্রাকৃতিক দুর্যোগও। দেশটি ভূমিকম্প, বর্ষায়-বন্যা ও খরায় বিধ্বস্ত। সে দেশে খরা এতটাই প্রকট হয়ে উঠেছে যে, বহু মানুষকে ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হচ্ছে। জমিতে চাষ করাই সম্ভব হচ্ছে না। কীসের মায়ায় পড়ে থাকবেন তাঁরা? ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও চমকে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। যেমন, হুসেন আলি। গত বছরই দেশের পালাবদলের পরে ভেবে রেখেছিলেন গ্রামে গিয়ে চাষবাস করে দিন কাটাবেন। কিন্তু সব ছেড়েছুড়ে গ্রামে ফিরে তো তাঁর চক্ষু চড়কগাছ! তিনি দেখেন তাঁর গ্রামের নদীটি শুকিয়ে গিয়েছে, শুকিয়ে গিয়েছে কুয়োর জলও। অন্য গ্রামবাসীও গ্রামের এই রুগ্ণ পরিস্থিতি দেখে পাট উঠিয়ে অন্যত্র চলেছেন। তাঁরা অন্তত ৪০টি পরিবার ওই নদীটির উপর জীবন ধারণের জন্য নির্ভরশীল। ফলে স্বপ্নভঙ্গ, আশাভঙ্গ। ফলে এ বছরের প্রথম চাষের ফসল ভালো করে পাকার আগেই তা কেটে ফেলতে হচ্ছে, না হলে যতটুকু ফলেছে সেটুকুও নষ্ট হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: Afghanistan Floods: অতি ভারী বৃষ্টির জেরে বন্যা, ১৮০ জনের মৃত্যু, ভেঙে পড়েছে তিন হাজারের বেশি বাড়ি
তালিবান-পর্বের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত আফগান সরকার এ নিয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিল। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে আবহাওয়ার বদল এবং বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনশীল ধরনের কথা মাথায় রেখে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সঙ্গে সহযোগিতায় আগে থেকেই 'রিসোর্স রেস্টোরেসন'-এর কাজ করত। সরাসরি কৃষকদের সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখা হত।
আফগানিস্তানে বন্যায় প্রায় দুশো জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আফগানিস্তানের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যও প্রার্থনা করেছে তালিবান সরকার। কিছুদিন আগেই বন্যায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির ছবি তুলে ধরেছে তালিবান। বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে সেখানে। ৩০০০-এরও বেশি। ধ্বংসাত্মক এই বন্যায় দেশটির অর্থনৈতিক সংকট আরও প্রকট হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তালিবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ বলেছিলেন, আফগানিস্তান একা এই বন্যা মোকাবিলা করতে পারছে না, তারা বিশ্ব, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মুসলিম দেশগুলির কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছে। তখনই তিনি একটা পরিসংখ্যান পেশ করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, বন্যায় ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ২৫০ জন। ৩১০০-রও বেশি ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। অসংখ্য গবাদিপশু মারা গেছে।