ইমরান খানের পায়ের তলার মাটি সরছে, পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের আশঙ্কা
ইমরান খানকে টপকে ইতিমধ্যে বহু ক্ষেত্রে সেনাকর্তারা সরকারি সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন- ২০১৮ সালে প্রায় ৪৬ শতাংশ জনমত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছিলেন তিনি। আওয়ামকে নয়া পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের মানুষ ভেবেছিলেন, এবার আচ্ছে দিন আসবে। ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ হওয়ার পর ইমরান খান হয়তো আগের মতোই ইনিংস খেলবেন! এমনটাই মনে করেছিলেন পাকিস্তানের মানুষ। কিন্তু ভাবনা ও বাস্তবের মধ্যে অমিল ধরা পড়ে কয়েকদিন পর থেকেই। পাকিস্তানের হাল ফেরেনি। বরং কিছু জায়গায় আগের থেকেও বেহাল দশা হয়েছে। একে তো গোটা দেশে আর্থিক সঙ্কট। তার পর মূল্যবৃদ্ধি। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার মতো অবস্থা। ফলে ধীরে ধীরে ইমরান খানের উপর আস্থা হারিয়েছেন পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। সামরিক খাতে ইমরান খানের নজর রয়েছে। তবে দেশের সাধারণ সমস্যা নিয়ে তিনি বিন্দুমাত্র ভাবিত হন। এমনই মনে করতে শুরু করেছে পাকিস্তানের আওয়াম। আর তার ফল এবার ইমরান খানের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
পাকিস্তানে ফের ক্ষমতা দখল করতে পারে সেনাবাহিনী। ইমরান খানকে টপকে ইতিমধ্যে বহু ক্ষেত্রে সেনাকর্তারা সরকারি সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছেন। সরকারের কাজকর্মে পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তারা নাক গলাতে শুরু করেছেন গত কয়েক মাস ধরে। ইমরান খান নিজেও সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মরত সেনা কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়েছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তই বুমেরা হয়ে ফিরে আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এদিকে দেশের মানুষ ইমরান খানের উপর আর ভরসা করছেন না। এমনিতেই পাকিস্তানের অর্থনীতির বেহাল দশা প্রকট হয়েছিল। তার পর করোনা মহামারীর জন্য এখন পাকিস্তানের জনগণের বিপুল অংশের দুবেলা খাবারও জুটছে না। এসবের মধ্যে মন্ত্রীসভায় ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু ইমরান তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ উঠছে। যার জেরে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা দিন দিন কমছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনীতির ময়দানে ইমরানের পায়ের তলার মাটি সরছে। আর এই সুযোগে পাকিস্তানে ক্ষমতা দখলের সুযোগ ছাড়বে না সেনাবাহিনী।
আরও পড়ুন- ভারতের ভূখণ্ড নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করল নেপাল
সেনার ক্ষমতাদখল পাকিস্তানে নতুন কিছু নয়। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক বিষয় নিয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণ করে নিউ ইয়র্কের বিজিয়ার কনসাল্টিং নামক এক সংস্থা। সেই সংস্থার সভাপতি আরিফ রফিক বলেছেন, ''পাকিস্তানে লকডাউন নিয়ে সেনার সঙ্গে ইমরানের মতবিরোধ স্পষ্ট। চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর নিয়েও পাকিস্তানের সেনা ও সরকারের মতবিরোধ হয়েছে। ইমরান নিজর অবস্থান হারাচ্ছেন। তাঁর হাতের রাশ আলগা হলে সেনার লাভ। কখনও পাকিস্তানে লকডাউন নিয়ে সেনাপ্রধান নির্দেশিকা দিয়েছেন। কখনও আবার করোনা আক্রান্তদের তথ্য দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী। তিনিই যেন সরকারের মুখপাত্র। অর্থাত্, সরকার ও সেনার বিরোধ স্পষ্ট। সরকারি কর্তারা সেনা কর্তাদের সঙ্গে বসে করোনার তথ্য ব্রিফিং করেছেন। আর সেই ছবি দেখানো হয়েছে পাকিস্তানের ন্যাশনাল চ্যানেলে। যা মোটেও ভাল বিজ্ঞাপন নয়।''