প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদ

চলে গেলেন বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় রাত ১১টায় নিউইয়র্কের বেলভিউ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। বেশ কিছুদিন ধরেই ক্যান্সারের চিকিত্‍সার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন বাংলাদেশের এই জনপ্রিয় সাহিত্যিক।

Updated By: Jul 20, 2012, 11:02 AM IST

চলে গেলেন বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় রাত ১১টায় নিউইয়র্কের বেলভিউ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। বেশ কিছুদিন ধরেই ক্যান্সারের চিকিত্‍সার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন বাংলাদেশের এই জনপ্রিয় সাহিত্যিক। জনপ্রিয়তায় দেশের সীমানা ভেঙে দেওয়া হুমায়ুনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দুই বাংলার সাহিত্যিক মহলে।
দুঃসংবাদটা কলকাতায় পৌঁছয় বৃহস্পতিবার রাতে। ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর নিউইয়র্কে প্রয়াত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। ক্যান্সারের চিকিত্‍সা করাতেই মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিয়েছিলেন বাঙালির আপন হয়ে ওঠা হিমু বা মিসির আলির রচয়িতা। ২০১১-র সেপ্টেম্বরের পর নিউইয়র্কের স্লোয়ান-কেটরিং মেমোরিয়াল ক্যান্সার সেন্টারে দুই পর্বে মোট ১২টি কেমোথেরাপি হয়েছিল তাঁর। মাঝে একবারই দেশে এসেছিলেন, এ বছর মে মাসে। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের গত ১২ জুন তাঁকে ভর্তি করা হয় ম্যানহাটনের বেলভিউ হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালেই ভারতীয় সময় রাত ১১টায় মৃত্যু হয় হুমায়ুন আহমেদের।
 
মৃত্যুর সময় হাসপাতালে ছিলেন তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, ছোট ভাই মহম্মদ জাফর ইকবাল, বন্ধু মজহারুল ইসলাম। লেখকের  শারিরীক অবস্থার অবনতির কথা শুনে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ডঃ এম এ মোমেনও। রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

১৯৪৮-এর ১৩ নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদের জন্ম হয় নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের কুতুবপুর গ্রামে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বাবা পাক সেনাদের হাতে নিহত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডাকোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নের অধ্যাপনার কাজে যুক্ত হন হুমায়ূন আহমেদ। ছাত্রবস্থায় নন্দিত নরকে উপন্যাস লিখেই হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য জীবনের শুরু। কিন্তু তা প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২-এ, আহমেদ ছফার উদ্যোগে। এরপর শঙ্খনীল কারাগার, রজনী, এপিটাফ, জ্যোত্‍স্না ও জননীর মতো একের পর এক উপন্যাস লেখেন তিনি।
 
এর মাঝেই আশির দশকে হুমায়ুন হাত দেন নাটক লেখার কাজে। এই সব দিনরাত্রি, বহুব্রীহির মতো টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সেই সব নাটক হুমায়ূন আহমেদকে পৌঁছে দেয় বাঙালির প্রতিটি ঘরে। আগুনের পরশমনি দিয়ে শুরু করে দেন একের পর  চলচ্চিত্র পরিচালনার কাজ। তবে সব ছাপিয়েই বাঙালির আপন হয়ে ওঠে তাঁর উপন্যাসের চরিত্র হিমু এবং মিসির আলিরা। যে উপন্যাসের ভাষায় উঠে এসেছিল নাগরিক এবং মধ্যবিত্ত জীবনের  কথনরীতি। যার মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশই নয়, পৃথিবীর সব প্রান্তের বাঙালিকেই ছুঁয়ে গেছেন হুমায়ূন।

.