ক্রমশ ক্ষীণ হচ্ছে রাসেলকে ফিরে পাওয়া আশা

জাহাজডুবিতে নিখোঁজ ছেলেকে ফিরে পেতে এখন ভগবানই ভরসা মুম্বইয়ের রেবেলো পরিবারের। ডুবো পাথরে ধাক্কা লাগায় শনিবার ইতালির সৈকতের কাছে ডুবতে শুরু করেছিল প্রমোদতরী কোস্তা কনকর্ডিয়া। আনন্দের রাত মুহূর্তে বিভীষিকায় পরিণত হয়েছিল জাহাজের প্রায় ৪ হাজার যাত্রী ও কর্মীর কাছে।

Updated By: Jan 17, 2012, 05:41 PM IST

জাহাজডুবিতে নিখোঁজ ছেলেকে ফিরে পেতে এখন ভগবানই ভরসা মুম্বইয়ের রেবেলো পরিবারের। ডুবো পাথরে ধাক্কা লাগায় শনিবার ইতালির সৈকতের কাছে ডুবতে শুরু করেছিল প্রমোদতরী কোস্তা কনকর্ডিয়া। আনন্দের রাত মুহূর্তে বিভীষিকায় পরিণত হয়েছিল জাহাজের প্রায় ৪ হাজার যাত্রী ও কর্মীর কাছে। অধিকাংশ যাত্রীকে উদ্ধার করা গেলেও, এখনও নিখোঁজ তাঁদের মধ্যে ২৮ জন। ৭ জনের মৃত্যু সরকারি ভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। যাত্রী ও কর্মী মিলিয়ে ডুবন্ত তরীটিতে ছিলেন ২০২ জন ভারতীয়ও। তাঁদের প্রত্যেকেই নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেও, ফেরেননি শুধু এক জন। মুম্বইয়ের রাসেল রেবেলো(৩৩)। ঘটনার পর ৪ দিন কাটলেও, তাঁর কোনও খোঁজ দিতে পারেনি উদ্ধারকারী দল। একই সঙ্গে রাসেলকে নিয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য জানানোর অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার।
৬ বছর কোস্তা কনকর্ডিয়ায় স্টুয়ার্ডের কাজ করছিলেন রাসেল। তাঁর মা গ্লাডিস জানান, ৬ জানুয়ারি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে তাঁকে ফোন করেছিলেন রাসেল। সেই সময়ই তাঁর সঙ্গে ছেলের শেষ বার কথা হয়। শনিবার সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে নাওয়া খাওয়া ভুলে টিভির সামনে বসে আছেন রাসেলের স্ত্রী উইলমা। সাড়ে তিন বছরের একটি ছেলেও রয়েছে নিখোঁজ রাসেলের। বৃদ্ধ বাবা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী।

রেবেলো পরিবারের অভিযোগ, ছেলের সম্পর্কে কোনও সঠিক দিচ্ছে না রাসেলের নিয়োগকারী সংস্থা এয়ার বর্ন রিক্রিউটিং প্রাইভেট লিমিটেড। তাদের একের পর এক স্ববিরোধী বক্তব্যে বিভ্রান্ত গোটা পরিবার। গ্লাডিস জানান, রাসেলকে উদ্ধার করা হয়েছে ও সে হাসপাতালে আছে বলে প্রথমে জানিয়েছিল সংস্থাটি। পরে জানানো হয়, রাসেল হোটেলে আছেন। কিন্তু রাসেলের ইতালি প্রবাসী দাদা কেভিন ঘটনাস্থলের কাছে সব হাসপাতাল ও হোটেলে তল্লাশি করলেও ভাইয়ের খোঁজ পাননি। স্থানীয় প্রশাসন তাঁকে এ ব্যাপারে সাহায্য করছে না বলেও ফোনে কেভিন জানিয়েছেন বলে দাবি পরিবারটির।
রাসেলের সহকর্মী সিডনি জানিয়েছেন, ঘটনার সময় নিজের কেবিনে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন কেভিন। জাহাজে জল ঢুকতে শুরু করতেই তিনি নিজের ঘর ছেড়ে ওপরে চলে এসেছিলেন। যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরতেও সাহায্য করছিলেন তিনি। সেই সময়ই ধাক্কাধাক্কিতে তাঁদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান রাসেল। ওদিকে নিয়োগকারী সংস্থার দাবি, তাঁরা জাহাজ দফতরের ডিরেক্টর জেনারেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। এর বেশি কিছু বলতে নারাজ তাঁরা। রাসেলের নিখোঁজ হওয়ার খবর স্বীকার করে নিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণাও। তিনি বলেন, ইতালিতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ঘটনাস্থলে যেতে বলেছি। যদিও খারাপ আবহাওয়ার জন্য উদ্ধারকাজ বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন সেদেশে ভারতীয় দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি।
জাহাজডুবিতে রক্ষা পাওয়া ২০১ জন ভারতীয়কে মঙ্গলবারই রোমে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। রাসেলকে ছাড়াই সেখান থেকে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তাঁরা।

.