চুকের বিদায়ে বিষণ্ণ অ্যাডিলেড

যে কোনও যান্ত্রিক শব্দ একবার শুনলেই, তা নিজের গলায় মুহূর্তের মধ্যেই তুলে নিতে পারতো। ঝোপেঝাড়ে কোনও পাখির ডাক শুনলেও নকল করতে এতটুকুও সময় নিত না চুক।

Updated By: Dec 31, 2011, 07:36 PM IST

যে কোনও যান্ত্রিক শব্দ একবার শুনলেই, তা নিজের গলায় মুহূর্তের মধ্যেই তুলে নিতে পারতো। ঝোপেঝাড়ে কোনও পাখির ডাক শুনলেও নকল করতে এতটুকুও সময় নিত না চুক। আর সেই কারণেই অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডেলিড চিড়িয়াখানার এই সদস্য রীতিমতো স্টার হয়ে উঠেছিল। কিন্তু, আর দেখা যাবে না ওই লায়ারবার্ড চুককে। গত মঙ্গলবারই মারা গিয়েছে অ্যাডিলেড চিড়িয়াখানার ওই সদস্যটি।
অ্যাডিলেড চিড়িয়াখানায় ওকে নিয়ে আসা হয়েছিল ২০ বছর আগে। সরু ঠোঁটের কালো পাখিটির লেজেই রয়েছে যাবতীয় সৌন্দর্য। সাদা ঝালরের মতো লেজ দুলিয়ে যেকোনও সময় ও মুছে দিতে পারতো যাবতীয় মন খারাপ। কিন্তু, সেটাই একমাত্র গুণ ছিল না এই লায়ারবার্ড-এর। যে খাঁচায় ও থাকতো তার আশপাশে যেকোনও যান্ত্রিক শব্দই মুহূর্তে নিজের গলায় বসিয়ে নিতে পারতো চুক। এমনকি, আশপাশের গাছে অন্য কোনও পাখি ওর সঙ্গে আলাপ জমাতে এলেও সেই পাখির ভাষাতেই কথা বলতে শুরু করে দিতো চুক। আর এই অবিশ্বাস্য ক্ষমতার জন্যই গত দু`দশক ধরে চিড়িয়াখানার ব্যাকহাউসে উপচে পড়তো ভিড়ে। শুধুমাত্র চুককে দেখতে। ওর গলা শুনতে। কিন্তু, সেই সুরই থেমে গিয়েছে গত মঙ্গলবার। ব্যাকহাউস এখন শূন্য। ৩২ বছর বয়সে চলে গেল চুক।
শুধু চিড়িয়াখানা না। চুকের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা পৃথিবীতে। ইন্টারনেটের চুকের নাম খুঁজেছেন লক্ষাধিক মানুষ। সকলকে মাতিয়ে রাখলেও চুক নিজে ছিল ভীষণ একাকী। জীবনসঙ্গীকে পাশে পাওয়ার বিষয়ে চুকের ছিল তীব্র অনীহা। চিড়িয়াখানার কর্মীদেরই ভীষণভাবে আপন করে নিয়েছিল চুক। তাই, চুককে চিরদিনের করে ধরে রাখতে ব্যাকহাউসে একটি স্মৃতিফলক তৈরির চিন্তাভাবনা শুরু করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

.