Doctor's Strike: অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসককে মারধর, অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে ডাক্তাররা...
Bangladesh: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শনিবার ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত বিইউবিটির শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। চিকিৎসকদের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে বেশ কয়েকজন হাসপাতালে এসে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসককে মারধর করেন; ভাঙচুর চালান। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়েও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ।
সেলিম রেজা, ঢাকা: চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, দোষীদের গ্রেপ্তার ও সেনাবাহিনী মোতায়েন না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ। এরপরেই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে চিকিৎসকদের প্রতিনিধি ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের প্রতিনিধি দল। হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকের সভাকক্ষে এই বৈঠক শুরু হয়।
আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের বলেন, 'আপনারা জানেন শনিবার থেকে ঢামেকে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আমাদের তিনজন চিকিৎসককে নিউরো সার্জারি বিভাগ থেকে মারতে মারতে প্রশাসনিক ব্লকের পরিচালকের রুমে নিয়ে আসা হয়। সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বহিরাগতরা এসে হাসপাতালে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এরপর ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) এসে ভাঙচুর চালায়। এরকম ঘটনা যদি প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? রোগীদের কীভাবে চিকিৎসা সেবা দেবো। কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহতদের আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। যেখানে আমাদের নিরাপত্তা নেই সেখানে আমরা কীভাবে চিকিৎসা দেব'।
তিনি আরও বলেন, 'অনতিবিলম্বে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সারাদেশের উপজেলা, জেলা সদরসহ সব হাসপাতালে সেনাবাহিনী নিয়োগ করতে হবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে পুলিশ নিয়োগ করতে হবে। শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই কর্মবিরতি নয় সারা বাংলাদেশে এই কর্মবিরতি চলবে। আপাতত আমাদের কর্মবিরতি চলবে অর্থাৎ কমপ্লিট শাটডাউন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক আমাদের নিশ্চিত করেছিলেন আমাদের ওপরে কোনো হামলা হবে না। কিন্তু তিনি তার সেই কথা রাখতে পারেননি। এখানে আমরা কোনও সেনা সদস্যকে দেখতে পাইনি'।
পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আন্দোলনের কারণে যেন রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে চিকিৎসকরা সেটি আমল না নিয়ে ‘আমরা কোনও চিকিৎসা সেবা দেবও না’ —এই বলে বেরিয়ে যান। এরপরেই তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের প্রতিনিধি দল।
আরও পড়ুন- Youtuber Arrest: ২০ দেশের ২৮৬ নারীকে নগ্ন করার বিকৃতকাম! এ কোন ইউটিউবার...
কী ঘটেছিল?
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শনিবার ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত বিইউবিটির শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। চিকিৎসকদের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে বেশ কয়েকজন হাসপাতালে এসে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসককে মারধর করেন; ভাঙচুর চালান। এতে আহত হন তিন চিকিৎসক। এছাড়া সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভেতরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এক গ্রুপের ওপর আরেক গ্রুপের হামলায় একজন মারা যান। অপরদিকে, রাতে বিষপান করে হাসপাতালে এক রোগী ভর্তি হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনার পর রাতে হাসপাতালে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ীদের গ্রেফতারের আলটিমেটাম দেন তারা। তবে ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই হাসপাতালটির চিকিৎসকরা রোববার সকাল থেকে অঘোষিত কর্মবিরতি পালন করছেন। বন্ধ রয়েছে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগসহ সব ওয়ার্ডের চিকিৎসা সেবা। এরপর দুপুরে দেশের সব চিকিৎসক কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা করেন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)