মায়ানমারের ব্রাত্য রোহিঙ্গাদের ভরসা এখন বাংলাদেশ

Updated By: Sep 7, 2017, 11:55 PM IST
মায়ানমারের ব্রাত্য রোহিঙ্গাদের ভরসা এখন বাংলাদেশ

ওয়েব ডেস্ক: না, ওদের কোনও দেশ নেই। রাষ্ট্রহীন নাগরিকের পরিচয়েই চলে গেছে, চলে যাচ্ছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। ওঁরা রোহিঙ্গা মুসলিম। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেটলেস কমিউনিটি। প্রাণের দায়ে ভিটেমাটির আশা ত্যাগ করে মায়ানমার ছেড়ে পালাচ্ছেন এই রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশে আছড়ে পড়ছে উদ্বাস্তু স্রোত। গত কয়েকদিনে দেড় লক্ষের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমের ঠাঁই হয়েছে কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরে। চরম মানবিক সঙ্কটের মুখে এই উপমহাদেশ।

মায়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ঠাঁই দিতে নারাজ। মানবাধিকার শব্দটা এখানে অভিধানের বাইরে। তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হয়ে এতদিন রাখাইনে কোনওভাবে কাটছিল দিন। এখন তারও আর জো নেই। বাঁচতে চাইলে পালাতে হবে। যদি বা একে বাঁচা বলে।

মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে গত দু-সপ্তাহে দেড় লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা পা রেখেছেন বাংলাদেশে। কক্সবাজারের কাছে উদ্বাস্তু শিবিরে আপাতত ঠাঁই হয়েছে। কিন্তু, সেই বা আর কতদিন! ব্রিটিশ ইন্ডিয়ায় রোহিঙ্গাদের একটা বড় অংশ পা রেখেছিল আরাকানে। এখনকার মায়ানমার ১৮২৩ সালের পরে সে দেশে যাওয়া কাউকে নাগরিকত্ব দিতে নারাজ। রোহিঙ্গারা তাই রাখাইনে অবমানব। পরিচয় নেই, স্বাধীন চলাফেরার অধিকার নেই। অন্য কোথাও চলে যাওয়ারও তো উপায় নেই। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিজেদের বলে মানে না। যাঁরা ঢুকে পড়েছেন ভারতে, তাঁদের ফিরিয়ে দিতে চায় দিল্লিও।

আরও পড়ুন- রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচারের নিন্দা করুক সু চি, অপেক্ষায় অনুজ নোবেল জয়ী মালালা

গত মাসে আচমকাই মায়ানমারের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে বসে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি নামে একটি সংগঠন। পাল্টা এথনিক ক্লিনসিংয়ে নেমে পড়ে রাষ্ট্র।

খাবার নেই। জল নেই। আছে আগুনে পোড়া বাড়ি, খুন-ধর্ষণের ভয় আর শিশুদের কান্না। তাই ওঁরা ভিটে-মাটি ছেড়ে চলেছেন বাংলাদেশে। যদি প্রাণটা বাঁচে। শান্তির নোবেল জয়ীর মুখে আজ কোনও কথা নেই। দু-দিন পর প্রতিবেশী দেশও যখন খেদিয়ে দিতে চাইবে, তখন কী হবে জানা নেই। ভবিষ্যত নিয়ে ভাবার সময় নেই। প্রাণে বাঁচতে শুধু বর্তমানে বেঁচে থাকার চেষ্টা।

.