Chandrayaan-3: চাঁদের সবচেয়ে কাছে বিক্রম, মাটি ছুঁয়ে ২৩-এই ইতিহাস ছোঁবে ভারত!
Chandrayaan-3: ২৩ অগস্ট বিকেল ৫টা বেজে ৪৫ মিনিট নাগাদ চন্দ্রপৃষ্ঠে সফট ল্যান্ডিং করবে ল্যান্ডার বিক্রম আর তার মধ্যে থাকা রোভার প্রজ্ঞান। আর সেটা করতে পারলেই চতুর্থ দেশ হিসেবে ইতিহাসের খাতায় নাম উঠবে ভারতের।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: চন্দ্রযান-৩ এর দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত লাফ (de-boosting) সফলভাবে সম্পন্ন। চাঁদকে ঘিরে এখন শেষ কক্ষপথে অবস্থান করছে ল্যান্ডার বিক্রম। চাঁদের থেকে আর মাত্র ২৫ কিমি দূরে এখন চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার মডিউল। এবার শেষ ধাপ চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ। গভীর রাতে দ্বিতীয় দফায় ল্যান্ডার বিক্রমের গতি এবং কক্ষপথ ছোট করে আনে। আর সেটা সম্পন্ন হয় সফলভাবে। বর্তমানে ল্যান্ডার মডিউল চাঁদের চারপাশে যে কক্ষপথে অবস্থান করছে, সেখান থেকে চাঁদের সবচেয়ে কম দূরত্ব ২৫কিলোমিটার। যাকে বলা হয় পেরিলিউন। এই পেরিলিউন হল ক্লোজেস্ট পয়েন্ট টু দ্য মুন, চাঁদের সব চেয়ে কাছের বিন্দু। আর এই কক্ষপথ থেকেই চাঁদের সঙ্গে যে পয়েন্টে সবচেয়ে বেশি দূরত্ব, তা হল ১৩৪ কিলোমিটার।
এবার ইন্টারনাল চেকিং সেরে নিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠের নির্দিষ্ট জায়গায় নামবে ল্যান্ডার মডিউল। আর সেখানেই সূর্যোদয়ের অপেক্ষা করবে বিক্রম ল্যান্ডার। সব ঠিক থাকলে ২৩ অগস্ট বিকেল ৫টা বেজে ৪৫ মিনিট নাগাদ চন্দ্রপৃষ্ঠে সফট ল্যান্ডিং করবে ল্যান্ডার বিক্রম আর তার মধ্যে থাকা রোভার প্রজ্ঞান। আর সেটা করতে পারলেই ইতিহাসের খাতায় নাম উঠবে ভারতের। ভারত হবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান পাঠানো প্রথম দেশ। শুক্রবার প্রথম ডি-বুস্টিং অপারেশন হয়। তারপর থেকে ল্যান্ডার বিক্রম অটোমেটেড মোডে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাঁদের কক্ষপথে নেমে আসে। কীভাবে সে কাজ করবে, সেটা এখন বিক্রম ল্যান্ডার নিজেই ঠিক করছে। তার আগে বৃহস্পতিবার ল্যান্ডার মডিউল তার প্রোপালশল মডিউল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যে প্রোপালশন মডিউল তাকে উৎক্ষেপণ মুহূর্ত থেকে পৃথিবীর কক্ষপথ পেরোতে সাহায্য করেছিল।
এই প্রোপালশন মডিউল এখন পৃথিবীর কক্ষপথেই প্রদিক্ষণ করতে থাকবে। আরও মাসখানেক অথবা বছরখানেক। জলবায়ুর তথ্য সংগ্রহ করবে। মেঘের ভিতর দিয়ে আসা সূর্যরশ্মির পোলারাইজেশন পরিমাপ করবে। প্রাক্তন ইসরো প্রধান কে শিবন জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের নকশা চন্দ্রযান-২-এর মতই। উল্লেখ্য, প্রোপালশল মডিউল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরই ল্যান্ডার মডিউল চন্দ্রপৃষ্ঠের প্রথম ছবি পাঠিয়েছে। এবার চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণের পর ল্যান্ডার বিক্রম ছবি তুলবে প্রজ্ঞান রোভারের। আর ৬ চাকা বিশিষ্ট প্রজ্ঞান রোভার কাজ করা শুরু করবে চন্দ্রপৃষ্ঠে। চাঁদের মাটির রাসায়নিক গঠন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে প্রজ্ঞান রোভার। চাঁদের মাটিতে জলের অনুসন্ধান চালাবে। খুঁজে দেখবে যে চাঁদে কোনওভাবে কোনও জলের অস্তিত্ব আছে কিনা।
টানা ১৪ দিন ধরে চাঁদের মাটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে রোভার। রোভারে থাকা একাধিক ক্য়ামেরার মাধ্যমে আসতে থাকবে চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি। এখন পৃথিবীর ১৪ দিন মানে চাঁদের ১ দিনের সমান। প্রসঙ্গত, ভারত এর আগেও চন্দ্রযান পাঠিয়েছিল। কিন্তু এর আগের চন্দ্রযান-২ মিশন ব্যর্থ হয়। ফলে চন্দ্রযান-৩ মিশন নিয়ে ভারত খুবই উত্তেজিত। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) চন্দ্রযান-৩ বহনকারী স্পেসক্র্যাফ্ট সাফল্যের সঙ্গে লঞ্চ করেছে। এটি ভারতের সবচেয়ে ভারী জিএসএলভি। যা তৈরি হয়েছে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে। ১৪ জুলাই চন্দ্রযান-৩-কে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়।
আরও পড়ুন, Luna-25: চন্দ্রযানকে টক্করের চেষ্টা, এবার চাঁদে ল্যান্ডার পাঠাচ্ছে রাশিয়া