সম্বন্ধ দেখতে গিয়ে পাত্রীর দাদার 'ফাঁদে' ধরা দিলেন ঠগ পাত্র, পুরো যেন সিনেমা!
পাত্র জানান, তাঁর নাকি সর্বস্ব ট্রেনে চুরি হয়ে গিয়েছে। বাড়ি ফেরার জন্য তাই কিছু টাকার প্রয়োজন।
নিজস্ব প্রতিবেদন : নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়ে পাত্রী দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে গেল যুবক। কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সেজে জলপাইগুড়িতে পাত্রী দেখতে গিয়েছিলেন সল্টলেকের যুবক। হাতেনাতে ধরা পরে শেষমেশে তাঁর স্থান হল শ্রীঘরে। ধৃতের নাম চিরঞ্জিত রায়। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়িতে।
গত ৭ ও ২১ তারিখে ছোট বোনের বিয়ের সম্বন্ধ দেখার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন জলপাইগুড়ি চরকডাঙির বাসিন্দা পেশায় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার সেল ট্যাক্স ধ্রুবরঞ্জন সরকার। বিজ্ঞাপন দেখে ফোনে পাত্রীর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন চিরঞ্জিত রায়। তারপর শুক্রবার রাতের ট্রেনে শনিবার সকালে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে এসে নামেন। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে স্টেশনে হাজির ছিলেন ধ্রুবঞ্জন বাবু নিজে। গাড়িতে চাপিয়ে সানন্দে পাত্রকে নিয়ে বাড়ি আসেন। বাড়ি পৌঁছেই শুরু হয়ে যায় পাত্রী দেখার পর্ব। সঙ্গে চলতে থাকে ভূরিভোজ। দূর থেকে পাত্র এসেছে মেয়ে দেখতে, আপ্যায়নে তাই কোনও ত্রুটি রাখতে চায়নি মেয়ের বাড়ি। খাওয়াদাওয়ার এলাহি আয়োজন করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন, এক্সপ্রেসের সঙ্গে সেলফি! ডাউন লাইনে এসে পড়ে মালগাড়ি, ছিটকে পড়ল কিশোর
কিন্তু, বেশ খানিকক্ষণ কথাবার্তা চলার পরই সন্দেহ হতে থাকে ধ্রুবরঞ্জন বাবুর। তিনি জানিয়েছেন, চিরঞ্জিত রায়ের কথায় কেমন যেন অসঙ্গতি ধরা পড়ছিল। আর সেকারণের পাত্রের পরিচয় সম্পর্কে মনে খটকা লাগে তাঁর। সন্দেহ আরও গাঢ় হয় যখন পাত্র চিরঞ্জিত রায় তাঁকে জানান, তাঁর নাকি সর্বস্ব ট্রেনে চুরি হয়ে গিয়েছে। বাড়ি ফেরার জন্য তাই কিছু টাকার প্রয়োজন। ধ্রুবরঞ্জন বাবুর কাছ থেকে টাকা ধার চান পাত্র চিরঞ্জিত। জালিয়াতি হাতেনাতে ধরার জন্য এরপরই কৌশলের আশ্রয় নেন ধ্রুবঞ্ন সরকার। চিরঞ্জিত রায়কে বাইকে চাপিয়ে এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা দেন ধ্রুববাবু। ঠগ পাত্রকে বলেন, ওই বন্ধুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাঁকে দেবেন তিনি।
আরও পড়ুন, হারাচ্ছেন চেয়ার! রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য 'দুঃসংবাদ'
এদিকে বিপদ আশঙ্কা করে ততক্ষণে মনে মনে প্রমাদ গুনতে শুরু করে দিয়েছিলেন চিরঞ্জিত রায়। নিজের সংশয় দূর করার জন্য বন্ধু সম্পর্কে নানান প্রশ্ন ধ্রুবরঞ্জন বাবুকে করতে থাকেন তিনি। কথা চালাচালি করতে করতেই ধ্রুবরঞ্জন বাবুর মুখে চিরঞ্জিত রায় শোনেন, তাঁর বন্ধু একজন পুলিস। শোনামাত্রই বাইক থেকে লাফিয়ে ছুটে পালানোর চেষ্টা করেন থরহরিকম্প পাত্র। আর তখনই হাতেনাতে তাকে ধরে ফেলেন পাত্রীর দাদা। পুলিশের হাতে তুলে দেন প্রতারককে। জেরায় নিজের অপরাধ কবুল করেছে অভিযুক্ত চিরঞ্জিত রায়।