কোথাও BJP, কোথাও আবার TMC কর্মী-সমর্থক, ভোট পরবর্তি হিংসায় পূর্ব বর্ধমানে বলি ৫
গতকাল রাতে কেতুগ্রামে কুপিয়ে খুন হয়েছেন এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য
নিজস্ব প্রতিবেদন: রবিবার ভোটের ফল প্রকাশ হতেই জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক হিংসা। মূলত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেই এমন ঘটনা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এনিয়ে রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সোমবার পূর্ব বর্ধমানে হিংসার বলি হয়েছেন মোট ৫ জন।
গতকাল জামালপুরের(Jamalpur) নবগ্রাম এলাকায় হিংসায় মৃত্যু হয় ৩ জনের। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন জখম হন। এই ঘটনার পর গতকাল রাতে জামালপুর থানার পুলিশ মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। ধৃত ১২ জনের মধ্যে ৭ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলা। উত্তেজনা থামাতে এলাকায় পুলিশ, র্যাফ ও কেন্দ্রবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও রায়নায় সংঘর্ষের জেরে নিহত হন গণেশ মালিক নামে এক তৃণমূল কর্মী। ওই ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।
আরও পড়ুন-‘নগরীর নটী'দের টিকিট দিল কে? তারকা প্রার্থী নিয়ে BJP নেতৃত্বকে প্রশ্ন তথাগতের
জামালপুরের সংঘর্ষে মৃত ৩ জন হলেন কাকলি ক্ষেত্রপাল (৪৭),শাজাহান শা ওরফে সাজু(৩৮) ও বিভাস বাগ (৩০)। মৃতদের মধ্যে কাকলি ও বিভাসের বাড়ি জামালপুরের নবগ্রামের ষষ্ঠিতলা ও উড়িষ্যা পাড়ায়। আর সাজু শেখের বাড়ি জামালপুরের ভেড়িলি গ্রামে। অন্যদিকে রায়নায় মৃত গণেশ মালিকের বাড়ি রায়না থানার সমসপুর গ্রামে ।
ওই সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর জখম মানু ক্ষেত্রপাল ওরফে রূপো এবং অনিল ক্ষেত্রপালকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। অপর জখম মিঠু রহমানের চিকিৎসা হয় জামালপুর ব্লক হাসপাতালে।
জখম তৃণমূল কর্মী মিঠু রহমান বলেন, রাস্তায় বিজেপি কর্মী সমর্থকরা তাদের ঘিরে ধরে মারধর করে। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, দলীয় কর্মী সমর্থকরা নবগ্রাম দিয়ে যাওয়ার সময় বিজেপি কর্মী সমর্থকরা তাদের আক্রমণ করে। দু'জন কর্মী মারা গেছে। তাঁর দাবি সাজু শা ও বিভাস বাগ দলের সক্রিয় কর্মী। এছাড়া বেশ কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থক হাসপাতালে ভর্তি আছে।
অন্যদিকে মৃত কাকলী ক্ষেত্রপালের ছেলে বিজেপি নেতা আশীষ ক্ষেত্রপালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন তাদের বাড়িতে হামলা চালায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। তার মায়ের মাথায় টাঙ্গির কোপ মারা হয়। জখম হয় তার বাবা। অন্যদিকে রায়নার নিহত গণেশ মালিকের পুত্র জানান সবাই একসাথে বলে ফল শুনতে শুনতে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ বাধে। ছাড়াতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর বাবা।
আরও পড়ুন-'প্রাণনাশের হুমকি'র মুখে নন্দীগ্রামের RO, বাড়িতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাজ্য সরকারের
এদিকে গতকাল রাতে কেতুগ্রামে কুপিয়ে খুন হয়েছেন এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। পতাকা খোলাকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত। এনিয়ে কেতুগ্রাম(Ketugram) থানার আগরডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের মালগ্রামে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। অভিযোগ লাঠি, রামদা নিয়ে বিজেপি সমর্থকরা চড়াও হয় তৃণমূল সমর্থকদের উপরে। এর মধ্যেই আগরডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য শ্রীনিবাস ঘোষকে মাটিতে ফেলে কোপানো হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এমনটাই দাবি তৃণমূলের।