WB assembly election 2021: ভোট-দোকানে কোনও CONTEST নেই! যুযুধান প্রতীকেরা এখানে পাশাপাশিই
এই দোকানের চৌহদ্দিতে কোনও বিরোধ নেই। এখানে এসে মিলে যায় সব পক্ষই।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সব পথ এসে মিলে গেল শেষে...। নয়নে নয়, দোকানে। এ এমন এক দোকান যেখানে ভোটের সব পসরা মিলছে। যে কোনও ভোটেই প্রতীকে-প্রতীকে, প্রার্থীতে-প্রার্থীতে, সমর্থকে-সমর্থকে জোরদার লড়াই হয়। কিন্তু ভোট-দোকানে কোনও লড়াই নেই।
ভোট-দোকান? মানে, ভোটের দোকান? তা-ও আবার হয় নাকি?
হ্যাঁ, অনেকটা তা-ই বইকি! এ দোকানে বিক্রি হয় সব দলেরই ভোট প্রচারের নানা রকম সামগ্রী। বর্ধমানেই রয়েছে এমন এক দোকান। বর্ধমান শহরের বিসি রোডে বর্ধমান সিনেমার কাছে এই দোকান।
আরও পড়ুন: WB assembly election 2021: 'ওঁর তো জেলে থাকার কথা', Modi-র 'বিকাশ ডাউন' তোপের পাল্টা Surjya Kanta
আর এক সপ্তাহ পরেই শুরু হয়ে যাচ্ছে ভোট। পূর্ব বর্ধমান (burdwan) অঞ্চলে অবশ্য ভোট এখনও প্রায় একমাস দেরি। তবে গোটা রাজ্যের মতো এ অঞ্চলেও ভোট নিয়ে টানটান উত্তেজনা। প্রধান প্রতিপক্ষেরা প্রচারে নেমে পড়েছেন। আর ঠিক এই সময়টাতেই প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই ভোটপ্রচারের নানা সামগ্রীর দরকার পড়ে। সব পণ্য তো আর দরকার পড়লেই সব সময় কলকাতা থেকে আনানো যায় না। তাই হাতের কাছে এরকম একটি দোকান থাকলে ভালই হয়। তাই এই সব ভোট-সামগ্রী নিয়েই বর্ধমান শহরে দাঁড়িয়ে এই দোকান। ভোট-সিজনে এই দোকানে আসছেনও নানা খরিদ্দার। আসছেন দূরদূরান্ত থেকে।
রাজনৈতিক নেতারা নানা উপচার সাজিয়ে ভোটারকে ডাকেন। সেই কতকালের গান-- 'আয় ভোটার আয়/ ভোট দিয়ে যা'। কিন্তু ভোটারের মন জয় অত সহজ নয়। তার মন মজাতে নানা সাধ্যসাধনা করতে হয় রাজনৈতিক দলগুলির। তবে সে অনেক বড় আয়োজন। অনেক ব্য়াপক তার মাত্রা। বাহ্যিক ভাবে কিছু উপকরণ তো লাগেই। আপাতত সেই সব উপকরণই সাজিয়েই বসে আছে দোকানটি।
প্রত্যকটি দলই এই দোকানে আসছে। তবে ভোট-সামগ্রী জোগান দেওয়ার জন্য বামেদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক আছে এখানে। অন্য দলগুলির ক্ষেত্রে যেটা সেভাবে নেই এ অঞ্চলে। তাদের একটু মুশকিল হয়। তবে সেই মুশকিল আসানের জন্যই পসরা সাজিয়ে বসা এই দোকানটির। এ দোকানে রয়েছে তৃণমূল, কংগ্রেস ও বিজেপি'র নানা প্রচার-উপকরণ। কী নেই তার ভাণ্ডারে? আছে পতাকা, স্টিকার, পোস্টার সব। আছে শাড়ি, টুপি, ওড়না। আছে দলীয় প্রতীক আঁকা কাপ বা মাগ। আছে গেঞ্জি, দড়ি, রিবন, ব্যাজ, উত্তরীয়, লোগো। মিলছে ছাতা, নানা ধরনের কার্ড বা প্রচারপত্রও।
কী বলছেন দোকানের মালিক?
দোকানের মালিক অর্পিতা চৌধুরী জানান, 'এই দোকান আমার বাবা তৈরি করেছিলেন। ২০১৮ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। তার পর থেকে আমিই এই দোকান চালাই।'
কোন কোন দলের জিনিস মেলে এখানে?
অর্পিতা জানান, টিএমসি'র (tmc) প্রায় সব কিছুই পাওয়া যায়। কংগ্রেসেরও (cong) কিছু-কিছু জিনিস থাকে। থাকছে বিজেপি'র (bjp) সামগ্রীও। সব দলের লোকেরাই এখানে আসেন। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থেকে নানা জিনিস কেনেন।
বামেদের কিছু নেই কেন?
জানা গেল, এ অঞ্চলে বামেদের বেশ কিছু নিজেদের প্রেস, প্রিন্টিং হাউস আছে। সেখানেই পতাকা, পোস্টার ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সামগ্রী তারা তৈরি করে নেয়। এবং সমর্থকদের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে। দোকানের প্রয়োজন পড়ে না।
ভাতার ব্লক থেকে তাঁর প্রিয় দলের হয়ে গেঞ্জি-টুপি কিনতে এসেছেন মহম্মদ ইকা নামের এক ক্রেতা। তাঁর কথায়, এখানে এক জায়গায় সব জিনিস পাওয়া যায়। তাই প্রচারের কাজে কিছু প্রয়োজন পড়লে এখানেই আসি।
ভোট-মরসুমে সর্বত্রই যুদ্ধং দেহি মনোভাব। কেউ কাউকে এক চুল জায়গা ছাড়তে রাজি নয়। কিন্তু এই দোকানের চৌহদ্দিতে কোনও বিরোধ নেই। এখানে এসে মিলে যায় যুযুধান সব পক্ষই।