বিশ্বভারতীতে ভাঙচুরের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত; পেছন রাজনৈতিক মদতও রয়েছে, সরব রাজ্যপাল

রাজ্যপাল লেখেন, আশাকরি রাজনৈতির পক্ষপাত না করে প্রশাসন ও পুলিস ভাঙচুরে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে

Edited By: সিকান্দর আবু জ়াফর | Updated By: Aug 17, 2020, 08:39 PM IST
বিশ্বভারতীতে ভাঙচুরের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত; পেছন রাজনৈতিক মদতও রয়েছে, সরব রাজ্যপাল
ছবি-টুইটার

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশ্বভারতীয় পাঁচিল ভাঙচুর নিয়ে দুপুর থেকেই সরব রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সন্ধেয় সরাসরি ওই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক মদত থাকার অভিযোগ তুললেন তিনি।  পাশাপাশি একের পর এক টুইট করে রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার অবনতির সাফ অভিযোগ আনলেন রাজ্যপাল।

আরও পড়ুন-'সম্মানহানি হয়েছে রাজভবনের', উপাচার্য পরিষদের প্রধানকে ডেকে পাঠালেন রাজ্যপাল

পৌষ মেলার মাঠের পাঁচিল ভাঙাকে কেন্দ্র করে আজ রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বিশ্বভারতী। কয়েক হাজার লোক এসে পৌষ মেলার মাঠের পাঁচিল ভেঙে দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। তার পরই এনিয়ে টুইটারে সরব হন রাজ্যপাল। ফোনও করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। টুইট করে রাজ্যপাল বলেন, 'বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি আশ্বাস দিয়েছেন এনিয়ে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।' এর পাশাপাশি ধনখড় আরও লেখেন , বিশ্বভারতীর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ভিসির কথা মতো হাঙ্গামাকারীরা ক্যাম্পাসে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছে। ডিএম-এসপি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করেনি।

বিশ্বভারতীয় ঘটনার পর সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, 'বিশ্বভারতী একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি চাই না এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করে এমন কোনও কাঠামো তৈরি হোক। বিশ্বভারতীর ভিসিকে বলব, উনি যেন জেলার ডিএম ও এসপির সঙ্গে এনিয়ে কথা বলেন। এমনকিছু হওয়া উচিত নয় যা বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নষ্ট করে দেয়।'

মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরই সন্ধেয় ফের বিশ্বভারতী নিয়ে সরব হন রাজ্যপাল। একের পর এক টুইট করতে থাকেন। রাজ্যপাল লেখেন, এই সংঘটিত ভাঙচুরের নিন্দা করছি।  বিশ্বভারতীর ঘটনা থেকে বোঝা যায় রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবণতি হয়েছে। প্রশাসন ও পুলিসের এনিয়ে আরও সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজন ছিল। এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। যেভাবে ঘটনা ঘটেছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই যে এই ঘটনা পরিকল্পিত ও এর পেছনে রাজনৈতিক মদত রয়েছে। রাজ্যপাল আরও লেখেন, আশাকরি রাজনৈতির পক্ষপাত না করে প্রশাসন ও পুলিস ভাঙচুরে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। বিশ্বভারতী মতো একটি জায়গায় কীভাবে এই ধরনের কাণ্ড হতে পারে!

এদিকে, বিশ্বভারতীর ঘটনার পরিপেক্ষিতে ৮ জন কে গ্রেফতার করল বীরভূম জেলা পুলিস। পুলিসের দাবি, তাঁরা এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ পাননি। ঘটনার পরেই ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন-শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য নষ্ট করে কনস্ট্রাকশন নয়, রাজ্যপালের কটাক্ষের পাল্টা মন্তব্য মমতার

অন্যদিকে, বিশ্বভারতীর ঘটনার পেছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করেন রাজ্য বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। রাহুল বলেন, বিশ্বভারতী তার নিজের জায়গায় পাঁচিল তৈরি করছে। এনিয়ে তৃণমূল যা করল তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আজ মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলন থেকে স্পষ্ট, বিশ্বভারতীতে যে তাণ্ডব তৃণমূল কংগ্রেস করেছে তার পেছনে পুরোপুরি তাঁর মদত রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ইন্ধনেই বিশ্বভারতীর মতো বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজের জমিতে পাঁচিল দিতে পারছে না। কারণ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন খোলা জায়গায় সব হতে হবে। তার মানে পাঁচিলে আপত্তি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সেই কারণেই তৃণমূলকে দিয়ে ওই পাঁচিল দেওয়ার কাজ ভণ্ডুল করে দিলেন। রাজ্যের সর্বোচ্চ পদে বসে মুখ্যমন্ত্রীই যদি ভাঙচুরের রাজনীতি করেন, হঠকারিতা করেন তাহলে রাজ্যজুড়ে হঠকারিতাই চলবে।

.