Anubrata Mandol: ধকলের ছাপ চোখে-মুখে, কলকাতায় আসার পথে কেঁদে ফেললেন কেষ্ট

গরু পাচারকাণ্ডে ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতে অনুব্রত। তাঁর গ্রেফতারিতে খুশির হাওয়া বিরোধী শিবিরে। জেলায় জেলায় চলল গুড়-বাতাসা বিলি। 

Updated By: Aug 11, 2022, 11:09 PM IST
Anubrata Mandol: ধকলের ছাপ চোখে-মুখে, কলকাতায় আসার পথে কেঁদে ফেললেন কেষ্ট

অয়ন ঘোষাল: বোলপুর থেকে আসানসোল। আসানসোল থেকে এখন আনা হচ্ছে কলকাতায়! দিনভর ধকলে বিধ্বস্ত চেহারা। গরু পাচারকান্ডে গ্রেফতারির পর কি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন? ক্যামেরার সামনে চোখের জল লুকোতে পারলেন না অনুব্রত মণ্ডল!

একবার কিংবা দু'বার নয়, টানা দশবার। গরু পাচারকাণ্ডে যতবারই নোটিশ পাঠিয়েছে সিবিআই, ততবারই অসুস্থতার কারণে দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন এবারও। কিন্তু শেষরক্ষা আর হল কই!

গরু পাচারকাণ্ডে সোমবার ফের অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করে সিবিআই। কিন্তু নিজাম প্য়ালেসে নয়, কলকাতায় আসার পর সোজা এসএসকেএম চলে যান অনুব্রত। তাঁকে ভর্তি নিতে অবশ্য রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারপর? নিজের গড় বোলপুরে ফিরে যান তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। এরপর যখন নিজের বাড়িতেই সরকারি চিকিৎসককে ডেকে পাঠান, তখন বিড়ম্বনা আরও বাড়ে।

কেন? বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসক  চন্দ্রনাথ অধিকারীর জানান, সুপারের নির্দেশই অনুব্রতের বাড়িতে গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, সুপার নাকি সাদা কাগজেই প্রেসক্রিপশনও লিখে দিতে বলেছিলেন! তাঁর বিস্ফোরক দাবি, অনুব্রত মণ্ডলের কথাতেই নাকি ১৪ দিনে বেডরেস্টের পরামর্শ লিখে দিয়েছিলেন! এরপর বুধবার ফের সিবিআই তলব। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এবার হাজিরা এড়িয়ে যান অনুব্রত। অবশেষে এদিন গ্রেফতার।

গুরু পাচারকাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলকে ১০ দিনে পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বীরভূমের কেষ্ট সড়কপথে এখন আনা হচ্ছে কলকাতার নিজাম প্যালেসে। এদিন রাতে যখন পূর্ব বর্ধমানের পালসিটের কাছে একটি পেট্রোল পাম্পে গাড়ি থামে, তখন সেখানে পৌঁছে যায় জি  ২৪ ঘণ্টা। কী দেখা গেল? জানলার কাচ তোলা। গাড়ির ভিতরে বিধ্বস্ত অবস্থায় বসে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এবং তাঁর চোখে জল!

স্ত্রীকে হারিয়েছেন। বোলপুরের প্রসাদোপম বাড়িতে এখন একমাত্র মেয়েকে নিয়ে থাকেন অনুব্রত। তবে রাজনীতি প্রতিপত্তি কিন্তু কমেনি এতটুকুও! ক'দিন আগেই যখন কলকাতা ফেরে বোলপুরে ফিরেছিলেন, তখন 'কেষ্টদা' তৃণমূল কর্মীদের ঢল নেমেছিল বাড়ির সামনে। মঞ্চে ওঠে অনুব্রত কার্যত হুঁঙ্কার দিয়েছিলেন, 'আমি মরি নাই'! সেই দাপুটে তৃণমূল নেতাই এখন সিবিআই হেফাজতে। তাতেই কি মানসিক জোর হারালেন? 

এদিন আসানসোলে সিবিআই আদালতে লিফ্টে করে চারতলায় ওঠেন অনুব্রত। তারপরই হাঁফাতে শুরু করেন! শুনানি শুরুতেই অনুব্রতের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন সিবিআই আদালতের বিচারপতি। শুধু তাই নয়, সওয়াল-জবাব চলাকালীন তাঁকে বসে উত্তর দেওয়ার অনুমতি দেন তিনি। আদালতের নির্দেশ, কোনও কারণে যদি স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে অনুব্রতকে নিয়ে যেতে আলিপুরের কমান্ড হাসপাতালে। গঠন করতে হবে ৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিম। বস্তুত, আদালতের নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল টিম তৈরিও করে ফেলেছে সিবিআই। ৪৮ ঘণ্টা অন্তর অনুব্রতকে পরীক্ষা করবেন চিকিৎসকরা।

.