মাছের বাক্সের নীচে পাচার হচ্ছিল হাজার হাজার কচ্ছপ, ধূলাগড়ে ধরলেন গোয়েন্দারা

 বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে কচ্ছপগুলি পাচারের পরিকল্পনা ছিল দুষ্কৃতীদের। এই ঘটনায় লরির চালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করেছেন গোয়েন্দারা। এই পাচারচক্রে আর কারা জড়িত জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। 

Updated By: May 26, 2018, 01:09 PM IST
মাছের বাক্সের নীচে পাচার হচ্ছিল হাজার হাজার কচ্ছপ, ধূলাগড়ে ধরলেন গোয়েন্দারা

নিজস্ব প্রতিবেদন: গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার ইন্ডিয়ান সফ্টশেল টার্টেল উদ্ধার করলেন গোয়েন্দারা। একটি লরিতে করে কচ্ছপগুলিকে ওডিশা থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। হাওড়ার ধূলাগড় চেকপোস্টে পশ্চিমবঙ্গ বনদফতর, সিআইডি ও কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ অপরাধদমন শাখার যৌথ অভিযানে উদ্ধার হয়েছে এই কচ্ছপগুলি। প্রায় ৩,০০০ কচ্ছপ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। এছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটিতে তল্লাশি চালিয়েও উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু কচ্ছপ। দু'টি ঘটনায় মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা। 

ওডিশা থেকে লরিতে ঢুকছে প্রচুর কচ্ছপ। গোয়েন্দাসূত্রে এমন খবর পেয়ে শনিবার ধূলাগড় চেকপোস্টে বনদফতর ও সিআইডি-র গোয়েন্দাদের নিয়ে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ অপরাধদমন শাখার গোয়েন্দারা। নির্দিষ্ট লরিটি চেকপোস্টে ঢুকতেই শুরু হয় তল্লাশি। গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য লরির ওপরের দিকে রাখা ছিল মাছের বাক্স। তার নীচে রাখা ছিল কচ্ছপগুলি। মাছের বাক্স সরাতেই বেরিয়ে পড়ে কচ্ছপগুলি। ৩০০ গ্রাম থেকে ৩ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ছিল এক একটি কচ্ছপের ওজন। কচ্ছপগুলিকে উদ্ধার করে বিধাননগর মৃগদাবে পাঠানো হয়েছে। সেগুলিকে তাদের বাসস্থানে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বনদফতর। 

গোয়েন্দাদের অনুমান, বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে কচ্ছপগুলি পাচারের পরিকল্পনা ছিল দুষ্কৃতীদের। এই ঘটনায় লরির চালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করেছেন গোয়েন্দারা। এই পাচারচক্রে আর কারা জড়িত জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এক সঙ্গে এত কচ্ছপ উদ্ধারের ঘটনা এরাজ্যে প্রথম। 

ওদিকে  দিঘা থেকে কচ্ছপ পাচার হচ্ছে জেনে এদিন বিরাটিতে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। সেখানেও উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকটি কচ্ছপ। গ্রেফতার করা হয়েছে ২ ব্যক্তিকে। 

পরিত্যক্ত টিফিন কৌটো ঘিরে কলকাতা মেট্রোয় বোমাতঙ্ক

দক্ষিণ এশিয়ার গঙ্গা ও মহানদীর অববাহিকায় মেলে ইন্ডিয়ান সফ্টশেলড টার্টল। বিপন্ন প্রজাতির এই প্রাণী পালন বা ভক্ষণ ভারতীয় বন্যপ্রাণ আইন অনুসারে নিষিদ্ধ। প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কচ্ছপের মাংস পূর্ব ও উত্তপূর্ব ভারতে বহু প্রচলিত খাদ্য। রীতি অনুসারে কোনও কোনও জায়গায় কচ্ছপের মাংসকে অতিথি আপ্যায়নের বিশেষ পদ হিসাবে পেশ করা হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে জলজ বাস্তুতন্ত্র নিয়ন্ত্রণে প্রাণীটির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। আগামী প্রজন্মের স্বার্থে পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে তাই কচ্ছপসহ সমস্ত বন্যপ্রাণীকে অভয়ে বাঁচার জায়গা করে দিতে হবে আমাদেরই। 

.