Durga Puja: বালুরঘাটের ১৮২ বছরের ঐতিহ্যবাহী পুজোকে কেন্দ্র করে ফুটে ওঠে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রীর ছবি
সে বহুযুগ আগের কথা। না, কাঁটাতার তখনও ভাগ বসায়নি বাঙালির পুজো উন্মাদনায়। তখন বালুরঘাটের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ ছিল বাংলাদেশের। তৎকালীন সময়ে বনমালী সাহা নামে এক চালের ব্যবসায়ী বাংলাদেশের জামিরতা গ্রাম থেকে ব্যবসা সূত্রে মাঝেমাঝেই আসতেন বালুরঘাট। সেই শুরু। সাহারায় বাড়ির সেই দুর্গাপুজোর ঐতিহ্য আজও বহমান। সাহারায় বাড়ির এই পুজো প্রায় ১৮২ বছরের ইতিহাসকে ধরে রেখেছে নিজের গর্ভে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ‘আশ্বিনের মাঝামাঝি উঠিল বাজনা বাজি/ পূজার সময় এল কাছে’ - ‘দুর্গা’ শব্দটার সঙ্গে আপামর বাঙালি বোধহয় পরিচিত অক্ষরজ্ঞান হওয়ার আগে থেকেই। মহালয়ার আর বেশি দেরি নেই। আশ্বিনের শারদপ্রাতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই উদাত্ত কণ্ঠস্বরের স্বাদান্বেষণ করতে অনেক আগে থেকেই উন্মুখ হয়ে উঠেছে বাঙালির আট থেকে আশি। মহালয়ার পুন্যলগ্নে অবসান ঘটবে পিতৃপক্ষের, সেইসঙ্গেই সূচনা হবে মাতৃপক্ষের। বছর ঘুরে উমাদেবী আসবেন তার বাপেরবাড়ি। কৈলাশ থেকে উমা ঘরে আসবেন লক্ষ্মী, গনেশ, কার্তিক, সরস্বতীকে সঙ্গে নিয়ে। গত প্রায় দুই বছর করোনা মহামারীর কারণে ব্যাঘাত ঘটেছিল বাঙালির পুজো উন্মাদনায়। এবার করোনার প্রকোপ অনেকাংশে কম। এক বছর পর আবারও পাড়ার মোড়ে মোড়ে নতুন সাজে সেজে উঠেছে প্যান্ডেল, বিভিন্ন থিম পুজোর সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন নিজেদের পুজোকে সেরার তালিকায় তুলে ধরতে। পিছিয়ে নেই তুলনায় কম বাজেটের পুজোগুলিও। আবারও নব আলোকসজ্জায় সেজে উঠবে প্যান্ডেল, শোনা যাবে মন্ত্র উচ্চারন। যার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে বাঙালি।
আরও পড়ুনঃ Durga Puja 2022: দুর্গাপুজো এবার 'স্বর্গে'! এই প্রথম মেঘ-কুয়াশার ভিতরে বেজে উঠবে ঢাক...
সে বহুযুগ আগের কথা। না, কাঁটাতার তখনও ভাগ বসায়নি বাঙালির পুজো উন্মাদনায়। তখন বালুরঘাটের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ ছিল বাংলাদেশের। তৎকালীন সময়ে বনমালী সাহা নামে এক চালের ব্যবসায়ী বাংলাদেশের জামিরতা গ্রাম থেকে ব্যবসা সূত্রে মাঝেমাঝেই আসতেন বালুরঘাট। সেই শুরু। সাহারায় বাড়ির সেই দুর্গাপুজোর ঐতিহ্য আজও বহমান। সাহারায় বাড়ির এই পুজো প্রায় ১৮২ বছরের ইতিহাসকে ধরে রেখেছে নিজের গর্ভে। আজও আগের মতোই রীতি –রেওয়াজ মেনে পুজো করে চলেছেন সাহারায় পরিবারের বর্তমান সদস্যরা। চালের ব্যবসায়ী থেকে কালক্রমে বনমালী সাহা পরিণত হন একজন জমিদারে। বনমালীর বিশ্বাস ছিল একজন সামান্য চালের ব্যবসায়ী থেকে তিনি যে বিরাট জমিদারির অধিকারী হয়েছেন তা মায়ের কৃপা ছাড়া অসম্ভব।
না, সেই জমিদারি আজ আর নেই। কিন্তু এখনও স্বমহিমায় বিরাজমান ১৮২ বছরের আগের সেই দুর্গাপুজো। আত্রেয়ী দিয়ে বহুজল গড়ালেও সে ধুয়েমুছে দিতে পারেনি সাহারায় বাড়ির পুজোর ইতিহাসকে। আজ সাহারায় বংশের একমাত্র বংশধর কালীকৃষ্ণ সাহারায় টিকিয়ে রেখেছেন পুজোর ঐতিহ্যকে। পুরোনো প্রথা মেনে এখনো বন্ধন ষষ্ঠী বা দ্বাপর ষষ্ঠীর দিন থেকে দুর্গার কাঠামো পূজা শুরু হয় সাহারায় বংশে। পুজোর সঙ্গে সঙ্গে সাহারায় বংশের প্রতিমারও রয়েছে বেশকিছু নিজস্বতা। এমনকি ভোগ নিবেদনের ক্ষেত্রেও সাহারায় বংশ মেনে চলে বেশকিছু নির্দিষ্ট নিয়ম।
সাহারায় বংশের পুজোর হাত ধরে ফুটে ওঠে ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীর ছবি। কারণ এই পুজোর সুত্রেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসেন সাহারায় পরিবারের অন্য সদস্যরা। গত দুই বছর করোনার কারণে ভারতে আসতে পারেননি বাংলাদেশে থাকা সাহারায় পরিবারের বাকি সদস্যরা। এবার দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে আবারও আশায় বুক বাঁধছেন সাহারায় পরিবারের শেষ বংশধর কালীকৃষ্ণ সাহারায়।
আরও পড়ুনঃ Weather Report: মহালয়ার আগে বাংলায় দুর্যোগ, বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি সতর্কতা রাজ্যজুড়ে