এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রাজ্য, BJP-তে যোগ দেওয়ার আগে TMC কর্মীদের খোলা চিঠি শুভেন্দুর
শুভেন্দু অধিকারির জানিয়েছেন, এটাই সেই সময় যখন বিকল্প কিছু বেছে নিতে হবে। রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে আমি একটা পথ বেছে নিয়েছি
নিজস্ব প্রতিবেদন: বহুদিনের সম্পর্ক। তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর সেই সম্পর্কে আজ ছেদ পড়ছে। তার আগে তৃণমূল কর্মী-অনুগামীদের উদ্দেশ্য একটি খোলা চিঠি লিখলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
শুভেন্দু লিখেছেন, ২০২১-এর নির্বাচনের পশ্চিমবঙ্গ এক সন্ধিক্ষণের সামনে দাঁড়িয়ে। একুশের নির্বাচনে আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব তার প্রভাব আমাদের ওপরে পড়বে। আমার মনে হয়, এবার নতুন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নতুন রাস্তা ঠিক করে নিতে হবে। কয়েক দিন আগেই পঞ্চাশে পা দিয়েছি। অনেকে বলছেন, আমার জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-রাজ্য সফরে Amit Shah, প্রতিবাদে পথে তৃণমূল, পোড়ানো হল কুশপুতুল
নতুন জীবন শুরু করতে চলেছি। কিন্তু পুরনো দিনের কথা ভুলব না। সম্মান পেয়েছি, বাংলার মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। কলেজ জীবনের রাজনীতি থেকে যে দায়িত্ব পেয়েছি তা খুবই আনন্দের সঙ্গে পালন করেছি। খেয়াল রেখেছি তাতে যেন ব্যক্তিগত স্বার্থ পেছনে থাকে।
এতদিনের রাজনৈতিক জীবনে আমার সৌভাগ্য হল, মানুষ তাঁদের সেবা করার জন্য বারেবারেই আমাকে বেছে নিয়েছে। মানুষের ভালোবাসার জন্যই এতদূর আসতে পেরেছি। তাঁদের আশীর্বাদেই আমি মন্ত্রী হয়েছি। সবসময়ে চেষ্টা করেছি, মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মানুষের ভালোর জন্য কাজ করতে।
বাম সরকারের সঙ্গে আমাদের যখন লড়াই ছিল তখন একটাই লক্ষ্য ছিল, সরকারে জনবিরোধী ও গরিব বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে মানুষের পাশে থাকার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। সে সময় ব্যক্তিগত কারও বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন ছিল না। বরং কয়েকজন মানুষের নীতির বিরুদ্ধে যার ফলে এলাকার গরিব মানুষ দুর্দশা চরমে পৌঁছেছিল। আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাম সরকারকে উত্খাত করেছিলাম।
শুভেন্দু আরও লিখেছেন, দশ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। রাজ্যে আমার ভাইবোনদের সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। বলা ভালো অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। কিন্তু সরকারি পরিকাঠামো শুধরে নিয়ে রাজ্যের সমস্যার সামধান করা যেত। কিন্তু তা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যে দলটার জন্য কাঁধে কাঁধ দিয়ে লড়াই করেছিলাম তা ভেতরে ভেতরে পচন ধরছে।
শুভেন্দুর বক্তব্য, এই দলটা একদিনে কারও একজনের প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠেনি। গত দশ বছর ধরে বহু মানুষের চেষ্টার ফলে এই দলটা এই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। দলের দায়িত্ব বর্তমানে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা নিজের ইচ্ছে মতো দল চালাচ্ছেন। যাদের কাঁধে ভর করে দলটা তৈরি হয়েছিল তাদেরই এখন পাশ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের অপমান করা হচ্ছে। যেসব যোগীর দলটা তৈরি করেছিলেন তাদের জায়গা নিয়ে ভোগীরা। আমাদের মতো যারা ত্যাগে বিশ্বাস করি তাদের জায়গা নিয়ে ভোগীরা।
আরও পড়ুন-কারা থাকবেন শাহের মঞ্চে, Zee ২৪ ঘণ্টার হাতে Exclusive তালিকা
শুভেন্দু অধিকারির জানিয়েছেন, এটাই সেই সময় যখন বিকল্প কিছু বেছে নিতে হবে। রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে আমি একটা পথ বেছে নিয়েছি। আপনাদেরও নতুন রাস্তা বেছে নিতে হবে। বাংলার মানুষে যে দায়িত্ব তৃণমূলের ওপরে চাপিয়ে দিয়েছিল তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। গুরুদেবের কথা মানি, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে।