Siliguri: 'আলাদা করা যাবে না', একই ওড়নার ফাঁসে আত্মঘাতী দুই বান্ধবী
একই ওড়নায় দুই বান্ধবী আত্মঘাতী। বিচ্ছেদের ভয় থেকেই মৃত্যুবরণ দুই বান্ধবীর?
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিয়ের পর আলাদা হয়ে যাবে দুই বান্ধবী। দেখা হবে একে অপরের থেকে, এই ভাবনা গ্রাস করার পরই ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিল দুজনে। একই ওড়নায় দুই বান্ধবী আত্মঘাতী হল। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ নগরে। ঝুলন্ত অবস্থায় দেহ উদ্ধার করে পরিবারের লোক। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোটও।
সূত্রের খবর, চলতি মাসেই দিপ্তী রায়ের বিয়ে ঠিক হয়। পরিবার থেকে সেই মত আয়োজন চলছিল জোরকদমে। বিয়েতে কোন রকম আপত্তিও প্রকাশ করেননি দীপ্তি । কিন্তু হঠাৎই এমন ঘটনা ঘটবে তা কল্পনাতেও আসেনি। এক কথায় হতভম্ব দুই পরিবার।
এলাকাবাসীদের কথায় খুব ছোট বেলা থেকেই প্রিয়াঙ্কা রায় ও দীপ্তি রায় ভাল বন্ধু । একই সঙ্গে বেড়ে ওঠা দুইজনের। একই সঙ্গে স্কুল। সব ঠিকই চলছিল। এর মধ্যে এক বান্ধবীর বিয়ে ঠিক করে পরিবার। কিন্তু দুজন যে দুজনের থেকে একেবারেই আলাদা হতে চায় না তা কেউই বুঝে উঠতে পারেনি। প্রাথমিকভাব পুলিসের, আলাদা হয়ে যেতে হবে দুজনকে। বিচ্ছেদের এই ভাবনা থেকেই এমন ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নেয় দুজনে।
বাড়ি ফাঁকা থাকায় সেখানেই একই ওড়নায় দুজন দুজনের হাত ধরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় তারা। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে লেখা, ''SORRY, আমাদের আলাদা করবেন না, একসাথে নিয়ে যাবেন, একসাথে রাখবেন, আমাদের সব কাজ একসাথে করবেন"। সুইসাইড নোটে একে অন্যকে ছেড়ে থাকার কথাও লিখেছে তারা। পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে তারা জানিয়েছেন, মা বাবার স্বপ্নপূরণ করতে পারেনি, কিন্তু দীপ্তি বা প্রিয়াঙ্কা কেউই একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারবে না।
দীপ্তির ঠাকুরদা রজত রায় জানান, "আশীর্বাদ করতে যাওয়ার দিনও নাতনিকে জিজ্ঞেস করে যাই যে ছেলে পছন্দ কি না, সে কোন আপত্তি করেনি, বিয়ের সব আয়োজন শেষ, সন্ধ্যে বেলা শুনতে পারি তারা সুইসাইড করেছে, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।"
অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কার মা বলেন, "সব সময় দুজনে একসঙ্গে থাকত, ছোট বেলার থেকে একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া, পড়াশোনা, ঘোরাফেরা। সকালে কাজে বের হওয়ার সময়ও কিছু বুঝতে পারিনি। বাড়ি ফাঁকা ছিল। ওরা যে এরকম করবে তা বুঝতে পারিনি কখনও।" ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভক্তিনগর থানার পুলিস। সুইসাইড নোট উদ্ধার করে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়।