করোনায় ঘরবন্দি মানুষ, লকডাউনে মাসির বাড়ি যাওয়া হল না জগন্নাথেরও!

প্রায় ৭০ দিন বাইরে যাননি সেবায়েতরা। তাঁরাই রথ টানবেন ইসকনে। 

Edited By: সুদেষ্ণা পাল | Updated By: Jun 23, 2020, 11:31 AM IST
করোনায় ঘরবন্দি মানুষ, লকডাউনে মাসির বাড়ি যাওয়া হল না জগন্নাথেরও!
কলকাতার ইসকনের মন্দিরে রথযাত্রার আচার (ছবি- শ্রাবন্তী সাহা)

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনায় ঘরবন্দি মানুষ। মার্চের ২৪ তারিখ থেকে দেশজুড়ে জারি হয় লকডাউন। দফায় দফায় সেই লকডাউনের সময়সীমা বাড়ে। লকডাউন ৫.০-তে আনলক পর্ব শুরু হলেও জমায়েতে এখনও বহাল নিষেধাজ্ঞা। কোনওরকম জনসমাগমে সায় নেই সুপ্রিম কোর্ট থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের। এই পরিস্থিতিতে এবার আর মাসির বাড়ি যাওয়া হল না জগন্নাথ দেবের! কোথাও আঁটসাঁট বিধির মধ্যে নমো নমো করে নিয়ম-আচার পালন হল, কোথাও কোথাও রথ বেরল-ই না। উল্লেখ্য করোনা পরিস্থিতিতে জনসমাগম এড়াতে রথযাত্রায় সুপ্রিম কোর্ট কড়া অবস্থান নেওয়ায় এবার প্রশ্ন উঠছে বাঙালির সর্ববৃহৎ উৎস ব দুর্গাপুজো নিয়ে। রথের দিন-ই দুর্গাপুজোর খুঁটিপুজো হয়ে যায়। তাই এরপর কী? উঠছে সেই প্রশ্ন।

পুরীর রথযাত্রা
রথের দিন পুরীর গুড়িছা মন্দির থেকে দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে রথে চড়ে যাত্রা করেন জগন্নাথদেব। গন্তব্য মাসির বাড়ি। পুরীর রথযাত্রা উপলক্ষে ফি বছর ১০ লাখ লোকের সমাগম হয়। জনসমাগম এড়াতে এবছর রথযাত্রায় প্রথমে 'না' বলে সুপ্রিম কোর্ট। পরে শেষপর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে পুরীর রথযাত্রার অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। সোমবার প্রধান বিচারপতি এস এ বেবডের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পুরীর রথযাত্রা হবে ওড়িশা সরকার, পুরীর মন্দির কমিটি ও কেন্দ্রের তত্ববধানে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে কোনওরকম আপোস করা যাবে না। অর্থাত্ জনসমাগম চলবে না।

ইসকনের রথ
একদিকে পুরীতে যখন কড়া বিধিনিষেধ মেনে শর্তসাপেক্ষে রথযাত্রায় অনুমতি মিলেছে, তখন অন্যদিকে কলকাতার ইসকন মন্দিরেও ছবিটা প্রায় একই। সেবায়েতরা যাঁরা রথ টানবেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা আলাদা ছিলেন। প্রায় ৭০ দিন তাঁরা বাইরে যাননি। তাঁদের প্রত্যেকের করোনা টেস্টও হয়েছে। গোটা ইসকন মন্দিরটা-ই কোয়ারেন্টিন সেন্টার করে ফেলা হয়েছিল। আজ সেই সেবায়েতরা-ই রথ টানবেন। পাশাপাশি মায়াপুর ইসকনেও এবার বন্ধ রথযাত্রা। বেরচ্ছে না রথ। মায়াপুর ইসকনের মূল মন্দিরে বিকালে ছোট করে রথের অনুষ্ঠানটুকু হবে মাত্র।

মাহেশের রথ
পুরী, ইসকনের রথের মতই বিখ্যাত হুগলির শ্রীরামপুরের মাহেশের রথ। এবার মাহেশের রথ ৬২৪ তম বর্ষে পা দিয়েছে। কিন্তু করোনার জন্য এই প্রথমবার মাহেশের রথের রশিতে টান পরবে না। তবে প্রথা মেনে সব আচার-অনুষ্ঠানই হবে। সকাল থেকেই মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরে তাই শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোপাঠ। হাতেগোনা নামমাত্র কিছু ভক্তও এসেছেন।

এছাড়াও শতাব্দী প্রাচীন নদিয়ার চাকদার শিমুরালি নিত‍্যানন্দ মঠের রথ,মদনপুর এক নম্বর জিপির কালীগঞ্জের রথ, সুখসাগর গ্রামের জমিদার বাগচী পরিবারের রথ, হুগলির চন্দননগরের রথ সবই বন্ধ। করোনার জেরে এবার আর রথের রশিতে টান পড়ছে না।

আরও পড়ুন, কাঁকুরগাছি হত্যালীলা: বেঙ্গালুরুতে স্ত্রীকে খুন করে ছেলেকে নিয়েই কলকাতায় আসেন জামাই অমিত

.