একটি নয়, দুটি গাড়িতে রাজুর খুনিরা! সুপারি কিলারদের মাস্টারপ্ল্যানে ঝাঁঝরা দেহ...
রাজুর গাড়ি পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে ল্যাংচার দোকানের সামনে থামতেই শুরু হয়ে যায় ‘অ্যাকশন’! অপারেশন শেষ হয় মাত্র দেড় থেকে দু'মিনিটেই!
বিক্রম দাস: কয়লা ব্যবসায়ী রাজু ঝা খুনে সুপারি কিলারের দল! রাজু বেরনোর খবর আসতেই সোর্স’ মারফৎ পৌঁছে যায় কাঁকসার বাঁশকোপার কাছে লুকিয়ে থাকা সুপারি কিলারদের কাছে। রাজুর গাড়ি সেখানে আসামাত্র তারা পিছু নেয়। কমপক্ষে দু’টি গাড়িতে ছিল খুনিরা। একটি নীল রঙের মারুতি বালেনো এবং অন্যটি ডিজায়ার মডেলের। একটিতে বসেছিল অন্তত দু’জন শার্প শ্যুটার। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ রাজুর গাড়ি পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে ল্যাংচার দোকানের সামনে থামতেই শুরু হয়ে যায় ‘অ্যাকশন’। একটি গাড়ি থেকে নেমে দুষ্কৃতীরা কয়লা কারবারির গাড়ির কাঁচ ভাঙে। এরপর দ্বিতীয় গাড়ি থেকে নেমে আসে দুই শার্প শ্যুটার। দু’হাতে অত্যাধুনিক পিস্তল থেকে গুলি চালাতে শুরু করে। ঝাঁঝরা হয়ে যায় রাজুর দেহ। ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য হাতে এসেছে পুলিসের।
প্রসঙ্গত, পুলিসের অনুমান, দুষ্কৃতীরা শুটআউটের পর ঝাড়খণ্ডে পালিয়ে গিয়েছে। কারণ, আততায়ীরা সুপারি কিলার। আর তারা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই জেলা পুলিসের একটি দল তদন্তের জন্য ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আততায়ীরা জামতাড়া গ্যাঙের সদস্য হতে পারে বলেও মনে করছে পুলিস। শনিবার ভরসন্ধ্যায় শক্তিগড়ের কাছে জাতীয় সড়কের উপর একটি ল্যাংচার দোকানের সামনে খুন হন রাজু ঝা। অপারেশন শেষ হয় মাত্র দেড় থেকে দু'মিনিটেই!
ওদিকে আবদুল লতিফের গাড়িচালক নূর হোসেন মল্লিক লিখিত অভিযোগে পুলিসকে জানিয়েছেন, সন্ধ্যে ৬টা ১০ নাগাদ তিনজনকে নিয়ে দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের কাছের হোটেল থেকে বের হন। কলকাতার দিকে যাচ্ছিলেন তাঁরা। রাজু ঝায়ের কথামতো শক্তিগড়ের ল্যাংচা হাবে গাড়ি দাঁড়ায়। তখন ঘড়িতে সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩৫। রাজু ছাড়া সকলেই গাড়ি থেকে নামেন। সকলেই ঝালমুড়ি কেনেন। এরপর সবাই গাড়িতে ওঠেন। এই সময় ব্রতীন মুখোপাধ্যায় নূর হোসেনকে রজনীগন্ধা গুটখা কিনে আনতে বলেন।
নূর জানাচ্ছেন, 'আমি রজনীগন্ধা কিনে গাড়ির দিকে আসছিলাম। দেখি তিনজন লোক গাড়িতে গুলি করছে। আমি চিৎকার করে লোকজন ডাকা শুরু করি। সেইসময় নীল রঙের একটি গাড়ি চেপে কিলাররা কলকাতার দিকে পালিয়ে যায়। পুলিস এলে আমি গাড়ি চালিয়ে অনাময় হাসপাতালে যাই। সেখানেই ডাক্তাররা রাজু ঝাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত ব্রতীনের হাতে গুলি লাগায় তাঁকে ভর্তি রাখা হয়।'