Kali Puja 2024 | Bardhaman Sonar Kali Bari: অলৌকিক! আশ্চর্য! ১২৫ বছর ধরে দেবীর ঘটে রয়েছে একই জল, এতটুকু শুকোয়নি, কানায় কানায় পূর্ণ! কীভাবে সম্ভব?
Bardhaman Sonar Kali Bari: এই মন্দিরের দেবীর ঘটে জল দেওয়াই হয় না। একই জল রয়ে গিয়েছে। ১২৫ বছর ধরে সেই ঘটের জল শুকোয়নি। তা কানায় কানায় পূর্ণ। আশ্চর্য নয়?
পার্থ চৌধুরী: সোনার কালীবাড়ি। কিন্তু এখন আর সেখানে সোনার মূর্তি নেই। আজ সেখানে অষ্টধাতুর প্রতিমা। বর্ধমানের সোনার কালীবাড়ি। বর্ধমানের রাজা মহতাব চাঁদের সহধর্মিণী নারায়ণী দেবী ছিলেন ভক্তিমতী, পরম ধার্মিক। তন্ত্রসাধনায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি।
শোনা যায়, ধর্মপ্রাণা স্ত্রীর মন রাখতেই বর্ধমানের রাজবাড়ির মিঠাপুকুরে ভুবনেশ্বরী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা। পরবর্তী সময়ে সেই ভুবনেশ্বরী মন্দিরেরই নাম হয় সোনার কালীবাড়ি। তবে সোনার কালী মন্দিরে আর সোনার কালী প্রতিমা বিরাজ করেন না। বর্তমান কালী প্রতিমাটি অষ্টধাতুর। বিশাল সিংহাসনের উপর দেবী কালিকা অধিষ্ঠান করেন। ১৮৯৯ সালে মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল, অর্থাৎ মন্দিরের বয়স একশো পঁচিশ ছুঁইছুঁই। বর্ধমান রাজ মহতাব চাঁদের আমলে তৈরি হয়েছিল মন্দিরটি।
জনশ্রুতি রয়েছে, এই মন্দিরে প্রথমে সোনার তৈরি কালী প্রতিমা প্রতিষ্ঠিত ছিল। গত শতকের সাতের দশকে দেবী কালিকার সোনার মূর্তিটি চুরি যায়। পরবর্তী সময়ে অষ্টধাতুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সোনার কালীবাড়ির প্রতিমার বিশেষত্ব হল, এখানে প্রতিমার জিভ বাইরে বেরিয়ে নেই। প্রতিমার পায়ের নীচে নেই মহাদেব, দেবীর গলায় নেই মুণ্ডমালাও। প্রতিমার চার হাত। উপরের দিকের বাম হাত ধারণ করে রয়েছে খড়গ উপরের ডান হাতে রয়েছে পদ্ম, নীচের ডান হাত অভয় মুদ্রা।
মন্দিরের ভিতরের তিনটি ঘরের একেবারে মধ্যিখানে, গর্ভগৃহে, রূপোর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত দেবী ভুবনেশ্বরী। ডান দিকে রয়েছেন দক্ষিণা কালী, বাম দিকে মঙ্গলচণ্ডীর মূর্তি। গর্ভগৃহের পূর্ব দিকের ঘরের ঈশান কোণে পঞ্চমুণ্ডির আসন রয়েছে। ভুবনেশ্বরী মূর্তির নাকবরাবর নাটমন্দিরের উল্টো দিকের গেট পেরলে চোখে পড়ে দু'টি শিবমন্দির। দু'টি শিবলিঙ্গই সাদা পাথরে তৈরি।
এই মন্দিরের বিশেষত্ব হল, দেবীর পায়ের কাছে রাখা আছে শঙ্খ। যার শব্দে মুখরিত হয় গোটা কালীবাড়ির সন্ধ্যা আরতি। এই শঙ্খের আয়তন তাক লাগানোর মতো। প্রায় একহাত লম্বা। কথিত আছে, মহারানি নারায়ণী দেবী সমুদ্রতট থেকে এই শঙ্খ সংগ্রহ করেছিলেন। অনেকে আবার বলেন, মহারাজ মহতাব চাঁদ শখ করে ইতালি থেকে অর্ডার দিয়ে এই শঙ্খ আনিয়েছিলেন।
এই মন্দিরের প্রবেশপথের উঠোনে দুটো বড় আকারের পাতকুয়ো আছে। যা খরা এবং জলাভাবেও কখনও শুকোয় না। আজও এই মন্দিরের সমস্ত কাজকর্ম এই দুই কূপের জলের সাহায্যেই হয়ে থাকে। শ্বেতপাথরের স্ফটিকের এই মন্দিরের দেওয়ালে বাহারি কারুকাজ আর নকশা খোদাই করা আছে।
এই মন্দিরের বর্তমান পুরোহিত মানস মিশ্র বলেন, 'এখানে প্রতিদিনই ভক্তরা আসেন। নিত্যপুজো হয়, সন্ধ্যা আরতি হয়, ভোগ বিতরণ হয়। কার্তিক অমাবস্যার কালীপুজোয় এখানে খিচুড়ি ভোগের সঙ্গে থাকে মাছের টক। পশুবলি বন্ধ। বদলে হয় চালকুমড়ো বলি। পুজোর বাকি সবটাই চলে নিয়ম মেনে। এখানে দেবীকে পুজোর ভোগে মাছের টক দিতেই হয়। সেই ভোগই দীপান্বিতা অমাবস্যায় বিতরণ করা হয় ভক্তদের।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)